মেইকিং পটারি বাই পটার হুইল
৩ মাস

সূচীপত্র

   বিষয়

যেভাবে সক্ষমতাভিত্তিক এই শিখন উপকরণ ব্যবহার করতে হবে 

ভিডিও ভিত্তিক বিষয়বস্তু

১. পটার্স হুইলের উপর দ্রব্য তৈরি পদ্ধতি  পর্ব ১

২. পটার্স হুইলের উপর দ্রব্য তৈরি পদ্ধতি  পর্ব ২

৩. কোয়েল তৈরি পদ্ধতি

মডিউল বিষয়বস্তুু 

শিখনফল ১ : ব্যক্তিগত নিরাপত্তাজনিত সরঞ্জাম অনুশীলন এবং অনুসরণ করতে পারবেন।

শিখন কার্যক্রম

ইনফরমেশন শিট ৩.১-১

সেলফ চেক ৩.১-১

উত্তর পত্র ৩.১-১

শিখনফল ২: স্বীকৃত পদ্ধতি অনুসারে দ্র্রব্য তৈরির উপযোগী করে ক্লে বডি তৈরি করতে পারবেন।

শিখন কার্যক্রম

ইনফরমেশন শিট ৩.২-১

সেলফ চেক ৩.২-১

উত্তর পত্র ৩.২-১

শিখনফল ৩ : ক্লে কে এজিং করতে পারবেন।

শিখন কার্যক্রম

ইনফরমেশন শিট ৩.৩-১

সেলফ চেক ৩.৩-১

উত্তরপত্র ৩.৩-১

শিখনফল ৪: স্পেসিফিকেশন অনুয়ায়ী পটার্স হুইলের উপর দ্রব্য তৈরি করতে পারবেন।

শিখন কার্যক্রম

ইনফরমেশন শিট ৩.৪-১

সেলফ চেক ৩.৪-১

উত্তরপত্র ৩.৪-১

শিখনফল ৫: পটারির ক্রটি চিহ্নিত করতে এবং দূর করতে পারবেন।

শিখন কার্যক্রম

ইনফরমেশন শিট ৩.৫-১

সেলফ চেক ৩.৫-১

উত্তরপত্র ৩.৫-১

কার্যক্রমপত্র ৩.৫-১

স্পেসিফিকেশন ৩.৫-১

শিখনফল ৬: কাজের স্থান পরিস্কার করতে পারবেন।

শিখন কার্যক্রম

ইনফরমেশন শিট ৩.৬-১

সেলফ চেক ৩.৬-১

উত্তরপত্র ৩.৬-১

কার্যসম্পাদন মানদন্ডের তালিকা

সক্ষমতাসমূহের পুনরালোচনা

রেফারেন্স

অকুপেশন

এই মডিউলে প্রশিক্ষণ উপকরণ ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সম্পর্কে বলা হয়েছে। এই কার্যক্রমগুলো আপনাকে সম্পন্ন করতে হবে। পটারস হুইলে পটারির দ্রব্যাদি তৈরি করণ একটি অন্যতম সক্ষমতা। এই সক্ষমতাটি এনটিভিকিউ লেভেল-১ পেশার জন্য প্রয়োজন। এই পেশার একজন মিডিয়াম পর্যায়ের দক্ষ কর্মীর জন্য যে জ্ঞান, দক্ষতা ও আচরণ প্রয়োজন তা এই কোর্সে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।


এই মডিউলে বর্ণিত শিখনফল অর্জনের জন্য আপনাকে ধারাবাহিকভাবে কতকগুলো শিখন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। এইসব কর্মকান্ড একটি নির্দিষ্ট শ্রেণীকক্ষে বা অন্যত্রও সম্পন্ন করা যেতে পারে। নির্দিষ্ট কর্ম প্রক্রিয়ার সঙ্গে প্রাসঙ্গিক অন্যান্য শিক্ষণীয় বিষয়ও কর্মীদেরকে আয়ত্ত¡ করতে হবে। 


শিক্ষা কার্যক্রমের ধারা জানার জন্য মডিউলে বর্ণিত “শিখন কার্যক্রম” অংশটি অনুসরণ করুন। ধারাবাহিক ভাবে জানার জন্য সূচীপত্রে ইনফরমেশন শিট, কার্যক্রমপত্র, শিখন কার্যক্রম, শিখনফল এবং উত্তরপত্রে পৃষ্ঠা নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে। নির্দিষ্ট পাঠের সাথে সঠিক সহায়ক উপাদান সম্পর্কে জানার জন্য শিখন কার্যক্রম অংশটি দেখতে হবে। এই শিখন কার্যক্রম অংশ আপনার সক্ষমতা অর্জনের জন্য রোড ম্যাপ হিসাবে কাজ করবে। 


ইনফরমেশন শিটটি পড়ুন। এতে কাজ সম্পর্কে এবং সুনির্দিষ্টভাবে কাজ করার সম্যক ধারণা পাওয়া যাবে। ইনফরমেশন শিটটি পড়া শেষ করে “সেলফ চেক শিট”-এ উল্লিখিত প্রশ্নগুলোর উত্তর প্রদান করুণ। শিখন গাইডের ইনফরমেশন শিট অনুসরণ করে “সেলফ চেক” করুন। একজন কর্মী কিভাবে কাজের ক্ষেত্রে উন্নতি লাভ করেছে সেটি জানতে “সেলফ চেক” আপনাকে সহযোগিতা করবে। “সেলফ চেক শিট” কতটা ভাল করেছেন তা জানতে “উত্তরপত্র” দেখুন।


কার্যক্রমপত্রে নির্দেশিত উপায়ে যাবতীয় কর্মসম্পাদন করুন। এখানেই আপনি নতুন সক্ষমতা অর্জনের পথে আপনার নতুন জ্ঞান কাজে লাগাতে পারবেন।  


এই মডিউল অনুযায়ী কাজ করার সময় নিরাপত্তা বিষয়টি সম্পর্কে সবসময় সচেতন থাকবেন। কোন বিষয়ে জানার থাকলে ফ্যাসেলিটেটর কে প্রশ্ন করতে সংকোচ করবেন না। 


এই শিখন গাইডে নির্দেশিত সব কাজ শেষ করার পর অর্জিত সক্ষমতা অ্যাসেস করা হবে যে, আপনি পরবর্তী মূল্যায়নের জন্য কতটুকু উপযুক্ত। প্রয়োজনীয় সব সক্ষমতা অর্জিত হয়েছে কিনা তা জানার জন্য মডিউলের শেষে সক্ষমতা মানদন্ড এর একটি চেকলিষ্ট দেয়া হয়েছে। এই তথ্যটি কেবল মাত্র আপনার নিজের জন্য । এটি কোন দাপ্তরিক কাজে ব্যবহারের জন্য নয়।



সম্পন্ন হয়েছে

মডিউলের শিরোনাম : পটার্স হুইলে পটারির দ্রব্যাদি তৈরি করণ।


মডিউলের বর্ননা 

এই মডিউলে পটার্স হুইলে দ্রব্যাদি তৈরি করার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান, দক্ষতা এবং আচরণ সম্পর্কে বলা হয়েছে। এটি আপনাকে পটারীর দ্রব্যাদি তৈরিতে ব্যবহৃত ক্লে সনাক্ত করতে সহায়তা করবে। এছাড়াও এই মডিউলটি আপনাকে পটার্স হুইলে দ্রব্য তৈরিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন মেশিন ও যন্ত্রপাতি চিহ্নিত করণেও সক্ষম করবে।


সময়কাল : ৯০ ঘন্টা


শিখনফল:

এই মডিউলটি শেষ করার পর, একজন শিক্ষার্থী-

১. ব্যক্তিগত নিরাপত্তাজনিত সরঞ্জাম অনুশীলন এবং অনুসরণ করতে পারবেন।

২. স্বীকৃত পদ্ধতি অনুসারে দ্র্রব্য তৈরির উপযোগী করে ক্লে বডি তৈরি করতে পারবেন।

৩. ক্লে কে এজিং করতে পারবেন।

৪. স্পেসিফিকেশন অনুয়ায়ী পটার্স হুইলের উপর দ্রব্য তৈরি করতে পারবেন।

৫. পটারির ক্রটি চিহ্নিত করতে এবং দূর করতে পারবেন।

৬. কাজের স্থান পরিস্কার করতে পারবেন।


অ্যাসেসমেন্ট ক্রাইটেরিয়া:

প্রশিক্ষার্খীকে নিম্নোক্ত কর্মসম্পাদন মানদন্ডের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করতে হবে।

১. প্রয়োজনীয় যন্ত্র ও উপকরন ব্যবহারের পূর্বে , পরে এবং  ব্যবহারের সময় সকল নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারবেন।

২. প্রয়োজনীয় যন্ত্র ও উপকরন ব্যবহারের পূর্বে , পরে এবং  ব্যবহারের সময় ত্রুটিপূর্ণ যন্তপাতি সনাক্ত করতে  স্বীকৃত পদ্ধতি অনুসারে মেরামত করার জন্য চিহ্নিত করতে পারবেন। 

৩. পটারীর দ্রব্যাদি উৎপাদনে ব্যবহৃত কাচাঁমাল সংগ্রহ করতে পারবেন।

৪. ক্লের সাথে প্রয়োজনীয় পরিমান পানি যোগ করতে পারবেন।

৫. ক্লে বডি নিডিং করতে পারবেন।

৬. ক্লের সাথে যুক্ত অপদ্রব্য দূর করতে পারবেন।

৭. যথাযত ভাবে ক্লে বডি প্রস্তুত করতে পারবেন ।

৮. প্রস্তুতকৃত ক্লে বডি এজিং করতে পারবেন।

৯. পটার্স হুইল মেশিন চেক করতে পারবেন।

১০. ইলেকট্রিক পেনেল বোর্ড চেক করতে পারবেন।

১১. পেশাগত নিরাপত্তা ও সর্তকতার সাথে পটার্স হুইল স্টার্ট দিতে পারবেন।

১২. প্রয়োজনীয় পরিমান ক্লে বডি নিতে পারবেন।

১৩. হুইল হেডের কেন্দ্রের উপর ক্লে বডি নিক্ষেপ করতে পারবেন।

১৪. নির্ধারিত পদ্ধতি অনুয়ায়ী হুইল হেডের উপর নিক্ষেপকৃত ক্লে বডির সেন্টারিং করতে পারবেন।

১৫. স্পেসিফিকেশন অনুয়ায়ী সঠিক ভাবে দ্রব্যের আকৃতি প্রদান করতে পারবেন।

১৬. নিরাপদে হুইল হেডে সূতা দিয়ে দ্রব্য কাটতে পারবেন।

১৭.নির্ধারিত পদ্ধতি অনুযায়ী পটার্স হুইল মেশিন বন্ধ করতে পারবেন।

১৮. কাটিং টুলস ব্যবহার করে আকৃতি প্রদান কারি দ্রব্য হুইল হেড থেকে  অপসারণ করতে পারবেন ।  

১৯. আদর্শ কাজের জায়গার ন্যায় কাজের জয়গা পরিষ্কার করতে পারবেন।

২০. কোম্পানির নিয়ম অনুসারে বর্জ অপসারণ করতে পারবেন।


বিষয়বস্তু 

১। ব্যক্তিগত নিরাপত্তাজনিত সরঞ্জাম সনাক্তকরণ এবং পরিধান।

২। কর্মক্ষেত্রে ব্যক্তিগত নিরাপত্তাজনিত সরঞ্জাম ব্যবহার এবং অনুশীলন।


অ্যাসেসম্যান্ট ক্রাইটেরিয়া

১। কাজ চলাকালীন ব্যক্তিগত নিরাপত্তাজনিত উপকরন (পিপিই) ব্যবহার করতে পারবেন ।

২। কাজের সময় ওএসএইচ এর আদর্শ মানদন্ড অনুযায়ী কর্মক্ষেত্র সেটআপ করতে পারবেন।


শর্তাবলী

প্রশিক্ষণার্থীদের অবশ্যই নিচের সরঞ্জামাদি সরবরাহ করতে হবে-

* ব্যক্তিগত নিরাপত্তাজনিত উপকরণ (পিপিই)


শিখন উপকরণ

* বই, ম্যানুয়াল

* মডিউল বা রেফারেন্স



শিখনফল: ব্যক্তিগত নিরাপত্তাজনিত সরঞ্জাম অনুশীলন এবং অনুসরণ করণ।

 শিখন কার্যক্রম

বিশেষ নির্দেশনা

ব্যক্তিগত নিরাপত্তাজনিত উপকরন (পিপিই) পরিচিতি, অনুশীলন এবং অনুসরণ করণ।

 ইনফরমেশন শিট ৩.১-১ পড়ুন।

সেলফ চেক ৩.১-১ এর উত্তর করুন।

উত্তরপত্র ৩.১-১ এর সাথে মিলিয়ে নিন।


শিখন উদ্দেশ্য

এই ইনফরমেশন শিটটি পড়ার পর আপনি কর্মক্ষেত্রে ব্যবহৃত ব্যক্তিগত নিরাপত্তাজনিত উপকরন (পিপিই) সনাক্তকরণ, ওএসএইচ অনুশীলন এবং অনুসরণ করতে সক্ষম হবেন।

ব্যক্তিগত নিরাপত্তাজনিত উপকরন (পিপিই)

ব্যক্তিগত নিরাপত্তাজনিত সরঞ্জাম হলো এক ধরনের পোশাক বা বস্তু। এটা কর্মীকে কর্মক্ষেত্রে আহত হওয়া অথবা অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি হতে নিরাপদ রাখে।

 

ব্যক্তিগত নিরাপত্তাজনিত সরঞ্জাম-এ যা থাকে

১. মুখ সুরক্ষা এবং দুষিত বায়ু ধুলা-ময়লা হতে সুরক্ষার জন্য মাস্ক।

২. চোখ সুরক্ষার জন্য M-v সেস/গগলস।

৩. চুল সুরক্ষার জন্য হেয়ার নেট।

৪. পোশাক পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য এপ্রোন।

৫. পা সুরক্ষার জন্য সেফটি বুট ইত্যাদি।

পোশাক সুরক্ষা 

থ্রোয়িং পদ্ধতিতে দ্রব্যাদি তৈরী করার সময় কাদামাটির ছিটা ছিটকিয়ে গায়ে পড়তে পারে। এজন্য 

পোশাক সুরক্ষা তথা পরিষ্কার রাখার জন্য এপ্রোন ব্যবহার করা হয়।


 

পা সুরক্ষা

পা দ্বারা ক্লে তৈরি করার সময় এতে বিদ্যমান পাথরকণা দ্বারা পা কেটে যেতে পারে বা পায়ের ভিতরে পাথরকণা প্রবেশ করে ক্ষতের সৃষ্টি করতে পারে তাই ক্লে প্রস্তুতিকালে সেইফটি বুট পরিধান করা অপরিহার্য।

  

ফুসফুস সুরক্ষা

মাস্ক বাতাসের ধূলা এবং ক্ষুদ্র কণিকা ফুসফুসে প্রবেশ করা থেকে কর্মীকে রক্ষা করে। এজন্য ধূলিবালি থেকে ফুসফুস রক্ষা করার জন্য মাস্ক ব্যবহার করা হয়।

 

চোখ সুরক্ষা

পটারির দ্রব্যাদি থ্রোয়িংকালে হুইল হেডের উপরে ঘূর্ণায়মান হুইল থেকে কাদাযুক্ত পানি ছিটকিয়ে চোখে পড়তে পারে। তাছাড়া পারিপার্শ্ব থেকে ধুলাবালি চোখে পড়তে পারে। এজন্য সেইফটি গগলস ব্যবহার করা হয়।

 

                                             চিত্রঃ সেইফটি গগলস

চোখ সুরক্ষা উপকরণ ব্যবহারের সময় কিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে। 

যেমন- ১। যেসব ঝুঁকির কারণে ইহা পরিধান করা হয় যেন এটা চোখকে যথাযথভাবে রক্ষা করে।

        ২। পরিধানের জন্য এটা যেন আরামদায়ক হয়।

        ৩। এটা যেন সহজে পরিস্কারযোগ্য হয় ।

        ৪। এর থেকে যেন কোন সংক্রমণ না ঘটে।

        ৫। এটা যেন ব্যবহার উপযোগী হয়।

মাথার সুরক্ষা

হুইল হেডের উপরে থ্রোয়িংকালে কাদাযুক্ত পানির ছিটা মাথায় নিক্ষিপ্ত হতে পারে। এজন্য চুল তথা মাথা পরিষ্কার রাখতে হেয়ার নেট ব্যবহার করা হয়।

  


                                                                      চিত্রঃ হেয়ার নেট  

হাতের নখ সুরক্ষা

থ্রোয়িং প্রক্রিয়ায় দ্রব্য তৈরীকালে হাতের নখ বড় থাকলে নখের ভেতরে ক্লে প্রবেশ করবে। তাছাড়া হাতের আঙুল কোন কারণে কোণাকৃতি হলে ঘূর্ণায়মান ক্লের চাপে হাতের আঙুল বিদীর্ণ হতে পারে। তাই হাতের আঙুল সুরক্ষার জন্য কাজ শুরু করার পূর্বেই হাতের আঙুলের নখ নেইল কাটার দিয়ে কেটে ফেলতে হবে। নখ কাটা থাকলে হাতের আঙুল নিরাপদ থাকবে।

 

                         চিত্রঃ নেইল কাটার

ব্যক্তিগত নিরাপত্তাজনিত সরঞ্জামের সঠিক ব্যবহার

ব্যক্তিগত নিরাপত্তা প্রচেষ্টার মৌলিক উদ্দ্যেশ্য হলো কর্মপরিবেশকে নিরাপদ রাখা। কর্মী কর্মরত অবস্থায় যেনো কোন দুর্ঘটনার শিকার না হয়। অর্থনৈতিক কারণে এর যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। কর্মীর স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তা জনিত উন্নয়নের কারণে পিপিই এর যথেষ্ট আবশ্যকতা রয়েছে।


যথাযথ প্রশিক্ষণ

শ্রমিকদের পিপিই ব্যবহার স¤পূর্ণরূপে নিশ্চিত করতে হলে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো অবশ্যই বিবেচনায় আনতে হবে 

    ১। কর্মীদের নিরাপত্তা সরঞ্জাম কোন কোন ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে হবে তা অবশ্যই উপলব্ধি করতে হবে।

    ২। নিরাপত্তাজনিত সরঞ্জাম কর্মীরা যেনো সহজে এবং আরামে ব্যবহার করতে পারে।

    ৩। কর্মীদের মনোবলে পরিবর্তন আনতে নিরাপত্তাজনিত বিষয়ে অর্থনৈতিক ও সামাজিক সমর্থনের 

         আবশ্যকতা রয়েছে।



নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লিখুন-

প্রশ্ন ১। পিপিই বলতে কী বুঝায় লিখুন ?

প্রশ্ন ২। ফুসফুস রক্ষা করার জন্য কোন উপকরণ ব্যবহার করা হয় ?  

প্রশ্ন ৩। এপ্রোন পরিধান করার কারণ ব্যখ্যা করুণ ?

প্রশ্ন ৪। চোখ সুরক্ষা উপকরণ ব্যবহারের সময় কি কি নিয়ম মেনে চলতে হয় ?

প্রশ্ন ৫। নিম্নোক্ত পিপিই এর উদাহরণ লিখুন ?

        ক। চোখ সুরক্ষা 

        খ। মাথার সুরক্ষা

        গ। পা সুরক্ষা


নিচের বাক্যগুলো সত্য হলে "স" এবং মিথ্যা হলে "মি" লিখুন -

      ক। মাস্ক কর্মীর হাতকে সুরক্ষা করে ।

      খ। গগলস কর্মীর চোখকে ধুলাবালি হতে রক্ষা করে।

      গ। কর্মীর চুল সুরক্ষা করে হেয়ার নেট। 

      ঘ। হেয়ার নেট আঙুল সুরক্ষার জন্য ব্যবহার করা হয়।


শূন্যস্থান পুরণ করুণ -

     ক। কর্মীর পোশাক পরিষ্কার রাখার জন্য -------- ব্যবহার করা হয়।

     খ। কর্মীদের মনোবলে পরিবর্তন আনতে নিরাপত্তাজনিত বিষয়ে ------------- ও ----------- সমর্থনের 

          আবশ্যকতা রয়েছে।

     গ। হাতের নখ কাটার জন্য ব্যবহার করা হয় --------।

     ঘ। ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সরঞ্জাম কর্মীকে ----------- হওয়া থেকে রক্ষা করে।


উত্তর-১  

ব্যক্তিগত নিরাপত্তাজনিত সরঞ্জাম (পিপিই) হলো এক ধরনের পোশাক বা বস্তু। যা মানুষকে আহত 

করতে অথবা অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি থেকে রক্ষা করে।


উত্তর-২

ফুসফুস রক্ষা করার জন্য মাস্ক ব্যবহার করা হয়।


উত্তর-৩

শ্রমিকের পোশাক সুরক্ষা তথা পরিষ্কার রাখার জন্য এপ্রোন ব্যবহার করা হয়। 


উত্তর-৪

যেমন- ১। যেসব ঝুঁকির কারণে ইহা পরিধান করা হয় যেন এটা চোখকে যথাযথভাবে রক্ষা করে।

২। পরিধানের জন্য এটা যেন আরামদায়ক হয়।

৩। এটা যেন সহজে পরিস্কারযোগ্য হয় ।

৪। এর থেকে যেন কোন সংক্রমণ না ঘটে।

৫। এটা যেন ব্যবহার উপযোগী হয়।


উত্তর-৫ 

ক। সেইফটি গগলস

খ। হেয়ার নেট

গ। সেইফটি বুট 


উত্তর- সত্য / মিথ্যা

ক। মি         

খ। স         

গ। স        

ঘ। মি


উত্তর- শূন্যস্থান

ক। এপ্রোন         

খ। অর্থনৈতিক, সামাজিক          

গ। নেইল কাটার           

ঘ। আহত


বিষয়বস্তু

১। থ্রোয়িং পদ্ধতিতে দ্রব্য তৈরীর উপযোগী ক্লে সনাক্ত করা।

২। থ্রোয়িং পদ্ধতিতে দ্রব্য তৈরীর উপযোগী ক্লে সংগ্রহ করা।

৩। থ্রোয়িং পদ্ধতিতে দ্রব্য তৈরীর উপযোগী ক্লে প্রস্তুত করা।

৪। ক্লে-র প্রকারভেদ নির্ণয় করা। 

৫। ক্লে-র গুনাগুণ নির্ণয় করা।


অ্যাসেসমেন্ট ক্রাইটেরিয়া

১। দ্রব্য তৈরীর উপযোগী কাঁচামাল সনাক্ত করতে পারবেন। 

২। কাঁচামাল সংগ্রহ করতে পারবেন। 

৩। অপদ্রব্য চিহ্নিত করে তা অপসারণ করতে পারবেন।

৪। ক্লে প্রস্তুত করতে পারবেন।


শর্তাবলী

প্রশিক্ষণার্থীদের অবশ্যই নিচের সরঞ্জামাদি সরবরাহ করতে হবে ।

  * বেলচা            

  * কোদাল

  * বালতি

  * পানি

  * চালুনি ও

  * পাথর/ কাঠের হাতুড়ি ।


শিখনফল - স্বীকৃত পদ্ধতি অনুসারে দ্র্রব্য তৈরির উপযোগী করে ক্লে বডি তৈরি করণ।

 শিখন কার্যক্রম

 বিশেষ নির্দেশনা

 

 স্বীকৃত পদ্ধতি অনুসারে দ্র্রব্য তৈরির উপযোগী করে ক্লে বডি তৈরি করণ।

 

 ইনফরমেশন সিট ৩.২-১ পড়ুন


সেলফ চেক ৩.২-১ এর উত্তর করুন।


উত্তরপত্র ৩.২-১ এর সাথে মিলিয়ে নিন।


শিখন উদ্দেশ্য

এই ইনফরমেশন সিট পড়ার পর আপনি পটারী দ্রব্য উৎপাদন কারখানায় ব্যবহৃত ক্লে তৈরি করতে সক্ষম হবেন।

পটারী দ্রব্য উৎপাদন কারখানায় ব্যবহৃত কাঁচামাল সমূহ -

  * ক্লে জাতীয় কাঁচামাল

  * আয়রন অক্সাইড

  * বডি স্টেইন

  * গ্রগ

  * মিহি বালু

ক্লে জাতীয় কাঁচামাল

সাধারণত ভূপৃষ্ঠের উপরি ভাগের স্তরকেই মাটি বলে। বাস্তবিক পক্ষে ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগের সব মাটির প্রকৃতি এক রকম নয়। স্থান বা অবস্থাভেদে এদের গঠন ও গুণাগুণের মধ্যে তারতম্য রয়েছে। সব মাটি বা ক্লে পটারীর দ্রব্যাদি তৈরির উপযোগী নয়। সিরামিক বা মৃৎশিল্পের দৃষ্টিতে মাটি হল একটি অজৈব যৌগিক পদার্থ ,যার  সাথে পানি যোগ করলে আঠালো হয় , ইচ্ছানুযায়ী আকৃতি প্রদান করা যায় , শুকালে শক্তি অর্জন করে এবং পোড়ালে স্থায়ী রূপ লাভ করে উহাকেই মাটি বলে। পটারীর দ্রব্যাদি তৈরি করার জন্য ক্লে বা মাটির কতকগুলো গুণ থাকা আবশ্যক। এদের মধ্যে প্রধান বা অন্যতম যে গুণটি প্রয়োজন তা হল আঠালতা বা প্লাস্টিসিটি।

 আঠালতা

আঠালতা মাটি বা ক্লের এমনই একটি গুণ যার ফলে মাটিকে ইচ্ছা অনুযায়ী আকৃতি প্রদান করা যায় । এবং আকৃতি প্রদান করার পর উহা আকৃতি দেয়া দ্রব্যের আকৃতি ধরে রাখতে সহায়তা করে। কম আঠালতা সম্পন্ন মাটি দ্বারা হুইল হেডের উপর কাজ করা যাবেনা। এমন কি মাধ্যমিক মাত্রার আঠালতা সম্পন্ন ক্লে দ্বারা হুইল হেডের উপর কাজ দূরহ হয়ে দ্বারায়। কারণ হুইল হেডের উপর মাটি ঘুর্ণায়মান অবস্থায় ইহা পটার বা কুমারের হাত ও থামের উপর প্রচন্ড চাপ প্রয়োগ করে । এতে করে কাজের সময় অনেক শক্তির প্রয়োজন হয়। আর আঠালতা অধিক হলে কাজের সময় কম শক্তির প্রয়োজন হয়। তবে অতি মাত্রায় আঠালতা দ্রব্যের জন্য উত্তম ফল বয়ে আনে না। কারণ অধিক আঠালতা সম্পন্ন ক্লে বা মাটি দ্বারা তৈরি করা দ্রব্য বেশি সংকুচিত হয়ে থাকে। এতে দ্রব্যে বিভিন্ন ধরণের ত্রূটি দেখা দিয়ে থাকে। তাই মাটির আঠালতা একটি গ্রহন যোগ্য সীমার মধ্যে থাকা প্রয়োজন। ব্যবহারিক ক্ষেত্রে মাটি খুব আঠালো হলে এর সাথে আঠালোতা বিহীন কাঁচামাল যেমন বালি বা গ্রগ যোগ করে আঠালতা গ্রহনযোগ্য সীমার মধ্যে আনা হয়। আবার আঠালতা কম হলে ক্লের সাথে আঠালতা যুক্ত কাঁচামাল যেমন- বল ক্লে যোগ করে তা সমন্বয় করা হয়। তাই পটারীর দ্রব্যাদি উৎপাদনে আঠালতা গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে থাকে।  

মাটি বা ক্লে-র শক্তি

 আঠালতার পর পটারী ক্লে বা থ্রোইং ক্লে-র দ্বিতীয় যে গুণ থাকা আবশ্যক তা হল দ্রব্য আকৃতি প্রদানকালীন সময়ের শক্তি। ক্লে শুধুমাত্র আঠাল হলেই চলবে না বরং দ্রব্য আকৃতি প্রদান কালে এর আকৃতি ঠিক রাখর জন্য পর্যাপ্ত শক্তি থাকতে হবে। বিশেষ করে দ্রব্যের দেয়ালের পুরুত্ব যখন পাতলা হয়ে আসে। 

দ্রব্যের আকৃতি প্রদানকালীন সময়ের শক্তি পাওয়ার জন্য ক্লে বডি কিছু পরিমান মোটা বা কোর্স কনিকা ধারণ করা আবশ্যক। যদি ক্লেতে প্রকৃতিগতভাবে এরূপ কনিকা বিদ্যমান থাকে তবে উহাই উত্তম। আর যদি থ্রোইং ক্লেতে এরূপ কনিকার উপস্থিতি না পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে এর সাথে ফায়ার ক্লে , মিহি বা সূক্ষ কনিকা বিশিষ্ট বালি, গ্রগ বা এগুলোর সমন্বয় করে দ্রব্যের আকৃতি প্রদান কালিন সময়ের শক্তি পাওয়া যাবে। 

যদি থ্রোইং বডিতে গ্রগ ব্যবহার করা হয় সেক্ষেত্রে  গ্রগ ৩০ মেসের চালুনি বা স্ক্রীন দ্বারা চেলে নিতে হবে। তবে এই কনিকার মধ্যে ৮০ মেসের উপরের কনিকা বিদ্যমান থাকা উচিত নয়। অর্থাৎ ৩০-৮০ মেসের গ্রগ থ্রোইং কালে দ্রব্যের শক্তি প্রদানের জন্য উপযোগী । অতি মোটা কনিকার গ্রগ হুইল হেডের উপর কাজ করার সময় পটার বা কুমারের হাতে পীড়াদায়ক অবস্থার কারণ হয়ে দাড়ায়। সাধারণত থোইং ক্লে বডিতে ৮%-১০% এর অধিক মোটা বা কোর্স কনিকার গ্রগ থাকা উচিত নয়।


 পানিশোষণ ক্ষমতা

পটারী ক্লে বা থ্রোইং ক্লের তৃতীয় যে বৈশিষ্ট্য থাকা উচিত তা হল এর পানি শোষণ ক্ষমতা। যদি ক্লে-র পানি শোষণ ক্ষমতা অধিক হয় সেক্ষেত্রে দ্রব্য আকৃতি প্রদান করার সময় দ্রব্য নরম হয়ে যাবে ফলে দ্রব্য এর আকৃতি ধরে রাখা দূরহ হয়ে পড়বে। এছাড়াও পটার হুইল হেডের উপর কাজ করার সময় কাজের সুবিধার্থে কিছু পানি যোগ করতে হয় । ক্লে যদি অধিক পানি শোষন ক্ষমতার অধিকারি হয় তাহলে তা পানি শোষন করে আরো অধিক নরম হয়ে যাবে। এতে দ্রব্যের আকৃতি প্রদান করা আরও কঠিন হয়ে পড়বে। সেক্ষেত্রে ক্লের পানি শোষন ক্ষমতা একটি সমস্যা হয়ে দাড়াবে। তাই ক্লে নির্বাচন করার পূর্বে এর পানি শোষন ক্ষমতা সম্পর্কে ভালভাবে জেনে নেয়া অবশ্যক।

আবার কিছু কিছু প্লাস্টিক ক্লে রয়েছে এদের দ্বারা হুইল হেডের উপর কাজ করা কঠিন। কারণ ক্লের দলা বা লাম্পকে গোজাকৃতি করার সময় এর শক্ত পার্শ্ব (স্টীপ সাইড) কম পানি শোষন করে। এতে পটারকে কাজ করতে প্রচন্ড শক্তির দরকার হয়। ফলে পটার ক্লান্ত হয়ে যায়। এই জাতীয় ক্লে দ্বারা কাজ করলে পটারের মাসেল ও জয়েন্টে আঘাত পেয়ে থাকে।

প্লাস্টিক ক্লে কোর্স ম্যাটেরিযাল ধারণকারি ক্লে (যেমন ফায়ার ক্লে বা গ্রগ ) অপেক্ষা  কম পানি শোষন করে। কারণ কোর্স ম্যাটেরিয়াল ধারণকারি ক্লে বাহির পার্র্শ্ব উন্মুক্ত থাকে। ফলে এতে নির্বিঘে পানি প্রবেশ করতে পারে। তাই একটি উত্তম মানের থ্রোইং ক্লের আঠালতা, শক্তি এবং পানি শোষণের মধ্যে অবশ্যই ভারসাম্য থাকা বাঞ্ছনিয়।

 সঠিক ক্লে নির্বাচন

পটারীর দ্রব্যাদি তৈরিতে সঠিক ক্লে নির্বাচন করা একটি অতিব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিছু কিছু ক্লে রয়েছে যেগুলো থ্রোইং করে দ্রব্য উৎপাদনের উপযোগী নয়। এ জাতীয ক্লে দ্বারা দক্ষ পটাররাও দ্রব্য তৈরি করতে পারে না। আর এরূপ ক্লে দ্বারা যদি কাউকে অন্যদের দক্ষতা মূল্যায়ন করতে দেয়া হয় তাহলে তারা স্বাভাবিক ভাবেই অবমূল্যায়িত হবে। কারণ তারা অনুপযোগী ক্লে দ্বারা কাজ করছে। এটা মূল্যায়িত ব্যাক্তিদের জন্য পীড়া দায়ক। তাই বলা যায় উত্তম মানের দ্রব্যের জন্য উত্তম ক্লে প্রয়োজন। ক্লে নির্বাচনে অন্যতম গুরুত্বপূণ বিষয় হল উৎপন্ন দ্রব্য কত তাপমাত্রার সীমায় পোড়ানো হবে এবং উৎপন্ন দ্রব্যের প্রত্যাশিত কালার।

ক্লের কনিকার পৃষ্ঠদেশ, কৈশিক নালী এবং কনিকাগুলোর অনুর মধ্যে মধ্যে যে পানি অবস্থান করে ঐ পানিকেই ময়েশ্চার বলে। ক্লেতে এর পরিমান বা মাত্রাকেই ময়েশ্চার কনটেন্ট বলে। একে শতকরা হারে প্রকাশ করা হয়। এই পানি ১২০ ডিগ্রী সেন্ট্রিগ্রেড তাপমাত্রায় অপসারিত হয়ে যায়। পটারী ক্লে বা থ্রোইং ক্লে তে কি পরিমান ময়েশ্চার বা পানির প্রয়োজন তা সুনির্র্র্দিষ্ট ভাবে বলা সম্ভব নয়। কারণ ক্লেতে কি  পরিমান পানির প্রযোজন তা এর গুণাবলির উপর নির্ভর করে । সব মাটি বা ক্লের পানির শোষণ ক্ষমতা এক রকম নয় । কোন ক্লে পানি কম শোষণ করে আবার কোন ক্লে বেশি শোষণ করে। যে ক্লের মধ্যে আঠালতা বিহীন কাঁচামাল অধিক পরিমানে বিদ্যমান থাকে , যে সব ক্লের কনিকার আকার খুব সূক্ষ এদের পানি শোষন ক্ষমতা কম থাকে।

তবে স্বাভাবিক ভাবে ময়েশ্চারের পরিমান ১৮%-২২% এর মধ্যে থাকে। বাস্তবিক পক্ষে ক্লেতে ময়েশ্চারের পরিমান পটারের দীর্ঘ অভিজ্ঞতার উপর বহুলাংশে নির্ভর করে থাকে। 

 ক্লের প্রকার ভেদ:

 পটারীর দ্রব্যাদি তৈরি করার জন্য বিভিন্ন ধরণের ক্লে বা মাটি ব্যবহৃত  হয়ে থাকে। মাটির বৈশিষ্ট ও এদের পূর্ণতাপ্রাপ্ত তাপমাত্রা ( Maturing temperature) অর্থাৎ সর্বোচ্চ কত তাপমাত্রায় পোড়ালে দ্রব্য সর্বাধিক কাঠিন্যতা ও স্থায়িত্ব রূপ লাভ করবে ইত্যাদি বিষযের উপর ভিত্তি করে এদের শ্রেণী বিভাগ করা হয়। সে অনুসারে পটারী শিল্পে বহুল ভাবে ব্যবহূত ক্লে গুলোকে পাঁচ শ্রেণীতে ভাগ করা যায় । সেগুলো হল- আরদেন ওয়্যার ক্লে বা সাধারণ পটারী ক্লে¬, স্টোন ওয়্যার ক্লে ,বল ক্লে,ফায়ার ক্লে ও পোরসিলিন ক্লে বা কেওলিন।

এসব ক্লে গুলো বানিজ্যিক ভাবে আদ্র অবস্থায় ব্যবহার উপযোগী রূপে পাওয়া যায়।একাধিক শুষ্ক ক্লে ও অনান্য সংযুক্ত বস্তুর (Additives ) সাথে পানি যোগ করে কাঙ্খিত ক্লে বডি তৈরি করা হয়। আবার কখনও কখনও শুধুমাত্র একটি মাত্র ক্লে দ্বারাও তৈরি করা হয়। 

 আরদেন ওয়্যার ক্লে :

আরদেন ওয়্যার ক্লে সর্বাপেক্ষা প্রাচীন ক্লে । ইহা প্রকৃতিতে বহুল পরিমানে পাওয়া যায়। ইহার কনিকা গুলো অতি সূক্ষ হয়ে থাকে। এই গুলো অপেক্ষাকৃত আঠালো প্রকৃতির। কখনও কখনও এরা স্টিকি হয়। আরদেন ওয়্যার ক্লেতে আয়রন,বালি বা সূক্ষপাথর কুচি এবং অপদ্রব্য মিনারাল  থাকে। এই ক্লে ৯৫০ 0 C থেকে ১১০০ 0 C তাপমাত্রার মধ্যে পূর্ণতা প্রাপ্ত হয়। এবং সর্বোচ্চ শক্ত হয়ে থাকে।

আদ্র আরদেন ওয়্যার ক্লে গুলোর রং লাল, কমলা, হলুদ বা হালকা ধূসর রং এর হয়। পোড়ানো আরদেন ওয়্যার বাদামী, লাল, কমলা, বাফ ও মিডিয়াম ধূসর কালার হয়ে থাকে। দ্রব্যের পোড়ানো কালার নির্ভর করে ক্লেতে বিদ্যমান অপদ্রব্য মিনারাল এবং পোড়ানোর ধরনের উপর। টেরাকোটা সর্বাধিক জনপ্রিয় এক ধরণের আরদেন ওয়্যার।   

  

    স্টোনওয়্যার ক্লে : 

স্টোনওয়্যার ক্লে আরদেন ওয্যার ক্লের ন্যায় ব্যাপক ভাবে প্রকৃতিতে পাওয়া যায় না। এই ক্লের কনিকাগুলো অপেক্ষাকৃত কোর্স বা মোটা হযে থাকে। এই ক্লেগুলোও অধিকতর আটালো হয়। আদ্র অবস্থায় এগুলো প্রায় ধূসর বা গ্রে কালারের হয়। এদের পোড়ানো কালার বাফ বা হালকা ধূসর বর্ণের। স্টোনওয়্যার ক্লে থেকে তেরি দ্রব্যের কালার পোড়ানোর ধরণ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকে। এরা অপেক্ষাকৃত উচ্চ তাপমাত্রায় পূর্ণতাপ্রাপ্ত হয়। স্টোনওয়্যার ক্লে দুই ধরনের যথা-

  * মধ্যম তাপমাত্রার স্টোনওয়্যার ক্লে : এই জাতীয় ক্লে ১১৬০ 0 C থেকে ১২২৫ 0 C তাপমাত্রায় পূর্ণতাপ্রাপ্ত হয়। অর্থাৎ এদের কোন নং- ৪ (cone no -4) থেকে কোন নং -৫ (cone no -5) এই তাপমাত্রার সীমার মধ্যে এই ক্লে থেকে তৈরি করা দ্রব্যাদি পোড়ানো হয়।

  * উচ্চ তাপমাত্রার স্টোনওয়্যার ক্লে : এই জাতীয় ক্লে ১২০০ 0 C - ১৩০০ 0 C তাপমাত্রার সীমার মধ্যে পোড়ানো যায়। এদের কোন্ নং-৮ কোন্ নং-১১ এই তাপমাত্রার সীমার পোড়ানো হয়ে থাকে।

 

বল ক্লে :

বল ক্লে একটি অধিক আঠালতা সম্পন্ন ক্লে । এই ক্লের কনিকা গুলো অতি সূক্ষ। এই ক্লেতে অপদ্রব্য হিসাবে অনেক মিনারাল ও জৈব পদার্থ মিশ্রিত থাকে। আদ্র অবস্থায় এদের বর্ণ গাঢ় ধূসর হয়। ১৩০০ 0 C তাপমাত্রায় এই জাতীয় ক্লে পূর্ণতাপ্রাপ্ত হয়। পোড়ানো অবস্থায় এদের বর্ণ হালকা ধূসর বা হালকা বাফ বর্ণের হয়। বল ক্লের সবচেয়ে অসুবিধা হল এরা একক ভাবে ব্যবহারের উপযোগী নয়। কারণ এদের শুষ্ক ও পোড়ানো সংকোচন খুবই বেশি। অনান্য ক্লের কার্যোপযোগীতা ও আঠালতা বৃদ্ধি করার জন্য বল ক্লে ব্যবহার হয়।


ফায়ার ক্লে :

ফায়ার ক্লের বৈশিষ্ট্য ব্যাপক ভাবে পরিবর্তনশীল । এই ক্লেগুলোর ফায়ারিং সীমা উচ্চ। ইহা এই ক্লের বিশেষ বৈশিষ্ট্য। এরা ১৫০০ 0 C তাপমাত্রায় পূর্ণতাপ্রাপ্ত হয়। অনান্য মিনারাল অপদ্রব্য এই ক্লেতে অপেক্ষাকৃতভাবে কম থাকে। এই ক্লে ব্যবহার করে তৈরি পোড়ানো দ্রব্যের পৃষ্ঠদেশে আয়রন স্পট পরিলক্ষিত হয়। 

 ফায়ার ক্লে প্রায়ই স্টোনওয়্যার ক্লে বডিতে ব্যবহার করা হয় বডির পূর্ণতাপ্রাপ্ত তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং পোড়ানো দ্রব্যের পৃষ্ঠদেশ সামান্য  অমশ্রিণ করার জন্য। এই অবস্থায় দ্রব্যের  উপরিভাগ পর্যবেক্ষন করলে দ্রব্যের পৃষ্ঠদেশে ছোট ছোট দাঁতের মত মনে হবে। এই ক্লে ফুয়েল ফায়ারড কিলন্ কোন্ (cone) এর প্যাক স্লাবে, দ্রব্য বা তাকের সাপোর্ট হিসাবে এবং দরজা সিল করতে ব্যবহৃত হয়। 


কেওলিন বা পোরসিলিন ক্লে :

এই ক্লে অনান্য ক্লের চেয়ে বিশুদ্ধ। এ কারণে কেওলিন পোরসিলিন বডিতে ব্যবহার করা হয়। আদ্র অবস্থায় ইহা হালকা ধূসর বা বাফ বা প্রায় সাদা বা সাদা বর্ণের হয়। কেওলিন অনান্য ক্লের ন্যায় আটাল না হওয়ার  কারণে একে একক ভাবে ব্যবহার করে কাজ করা কঠিন। তাই এ ক্লের সাথে অনান্য ক্লে মিশ্রিত করে এর কার্যোপযোগিতা বৃদ্ধি এবং পোড়ানোর তাপমাত্রা হ্রাস করা হয়। বিশুদ্ধ কেওলিন ১৮০০ 0 C তাপমাত্রায় পূর্ণতাপ্রাপ্ত হয়। বেশির ভাগ পোরসিলিন বডিই কেওলিন ও বল ক্লে মিশ্রিত করে তৈরি করা হয়।


আয়রন অক্সাইড 

পটারি শিল্পে আয়রন অক্সাইড একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ বর্ণদায়ী কাঁচামাল। ইহা বিভিন্ন বর্ণের হয়ে থাকে। সিরামিক বডিকে বর্ণদায়ী করার জন্য ইহা ব্যবহার করা হয়। আয়রন অক্সাইড সাধারনত তিন বর্ণের হয়ে থাকে। এগুলো হলো- রেড আয়রন অক্সাইড, ব্ল্যাক আয়রন অক্সাইড ও ইয়েলো আয়রন অক্সাইড। আয়রন অক্সাইড মূলত ধাতব আয়রনের সাথে অক্সিজেন সহযোগে গঠিত হয়ে থাকে। 

সিরামিক শিল্পে বডি এবং গ্লেজে রেড আয়রন অক্সাইড ব্যবহার করা হয়। তবে কোন কোন ক্ষেত্রে ব্ল্যাক আয়রন 


অক্সাইড ও ব্যবহার করা হয়। ইয়েলো বা হলুদ আয়রন অক্সাইড এর কণিকাগুলো অত্যন্ত মিহি হয়ে থাকে। এজন্য এর বর্ণ পরিবর্তনশীল। সাধারনত বাজারে এদের পাউডার আকারে পাওয়া যায়। বর্ণের মাত্রা অনুযায়ী বডি বা গ্লেজে এদের পরিমান নির্ধারণ করা হয়।


ক্লে প্রস্তুতি

পটারি তৈরীর প্রধান কাঁচামাল ক্লে। দ্রব্যের প্রকৃতি, প্রকার ও পোড়ানোর তাপমাত্রাভেদে এই মাটি নির্বাচন করা হয়। মাটি বা ক্লে নির্বাচন করার পর প্রধান কাজ হলো ক্লে সংগ্রহ করা। প্রকৃতি থেকে সংগ্রহ হওয়ার কারণে এর সাথে বিভিন্ন ধরনের অপদ্রব্য থাকতে পারে। যেমন- গাছ-গাছরার মূল, পাথর কণা, গ্রিট, খড়কুটা ইত্যাদি। মাটি সংগ্রহ করার পর হাতের সাহায্যে, চালুনী দিয়ে এসব অপদ্রব্য বা ক্ষতিকারক পদার্থ অপসারণ করে নিন। অতঃপর বেলচা বা কোদাল দিয়ে নির্ধারিত পরিমাণ ক্লে স্তুপ করুন। মাটি শুকনা হলে পাথরখন্ড দিয়ে পিষে মিহি করে নিন। এখন চালুনী দিয়ে গুড়া করা মাটি চেলে নিতে হবে। যাতে মাটিতে কোন পাথরকনা, মোটা কণিকার মাটি কণা, গাছের মূল ইত্যাদি পৃথক হয়ে যায়। ময়লা ও অপদ্রব্য দূর করার পর প্রয়োজনমত গুরা করা মাটি নিয়ে একে বৃত্তাকার বেডের মত করে ছড়িয়ে দিতে হবে। অতঃপর বেডের মাঝখানে গর্ত করে এর মধ্যে প্রয়োজনমত পানি ঢালুন। কিছুক্ষন পর পাশ থেকে ধীরে ধীরে মাটি গর্তের মধ্যে দিয়ে গর্তের কেন্দ্র পর্যন্ত চলে আসুন। আমাদের দেশে ম্যানুয়ালি বা হাতের সাহায্যে যেভাবে বালি ও সিমেন্টের মিশ্রণে পানি যোগ করা হয় ঠিক সেভাবে পানি যোগ করুন। পানি যোগ করা হয়ে গেলে মিশ্রণ অনেকটা পেস্ট বা কাইয়ের মত হবে। এ অবস্থায় মাটির পরিমাণ কম হলে হাতের সাহায্যে দলিত-মথিত করে পূর্ণ কাই বা পেস্টে পরিনত করুন। এতে  মিশ্রণ অনেকটা পেস্ট বা কাইয়ের মত হবে। আর মাটির পরিমাণ বেশি হলে পা দ্বারা দলিত-মথিত করুন। এ ক্ষেত্রে পায়ে বুট জুতা ব্যবহার করুন। নতুবা পাথর কণা, গ্রিট বা অন্যান্য ক্ষতিকর পদার্থের দ্বারা পা কেটে যেতে পারে বা পায়ের তলায় বিঁধে যেতে পারে। পরিপূর্ণ পেস্ট বা কাই তৈরি হওয়ার পর পেস্ট বা কাইকে এজিং করে নিতে হবে। 

আবার কখনো কখনো প্রকৃতিতে ক্লে ভেজা বা সিক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। এরূপ অবস্থায় ক্লে পাওয়া গেলে এর সাথে পানি যোগ করার প্রয়োজন হয় না। এ জাতীয় ক্লে সংগ্রহ করে নির্ধারিত স্থানে মজুত করা হয়। সেখান থেকে ক্লে সংগ্রহ করে নিডিং করে ক্লে প্রস্তুত করা হয়। নিডিং হাতের সাহায্যে করা হয়। নিডিং কালে পাথরকণা, গ্রিট বা অন্যান্য ক্ষতিকারক পদার্থ দূর করতে হয়। অতঃপর মাটি দ্রব্য তৈরীর উপযোগী হয়। ক্লে পদার্থ সিক্ত হলে একে এজিং করার প্রয়োজন হয় না। বরং নিডিং করার পর ক্লে দ্বারা দ্রব্য তৈরী করা যায়।

 




নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লিখুন-

প্রশ্ন ১। ক্লে বলতে কি বুঝায় লিখুন ?

প্রশ্ন ২। আঠালতা বলতে কি বুঝায় ?  

প্রশ্ন ৩। ক্লে-র শক্তির প্রয়োজন হয় কেন ?

প্রশ্ন ৪। মাটির প্রকারভেদ  উলে­খ করুন ?

প্রশ্ন ৫। অধিক পানি শোষণ ক্ষমতার অধিকারী ক্লে-র অসুবিধা লিখুন ?


নিচের বাক্যগুলো সত্য হলে "স" এবং মিথ্যা হলে "মি" লিখুন -

ক। আঠালতা সম্পন্ন ক্লে ইচ্ছানুযায়ী আকার প্রদান করা যায়না ।

খ। দ্রব্যের আকৃতি প্রদান কালীন সময়ে শক্তি পাওয়ার জন্য ক্লে বডিতে কিছু পরিমাণ মোটা বা কোর্স কনিকা থাকা  উচিৎ।

গ। বিশুদ্ধ কেওলিন ১২০০ ড়প তাপমাত্রায় পূর্ণতা প্রাপ্ত হয়।

ঘ। স্টোনওয়্যার ক্লে দুই ধরনের।

ঙ। অন্যান্য ক্লে-র কার্যোপযোগীতা ও আঠালতা বৃদ্ধি করার জন্য বল ক্লে ব্যবহার করা হয়।


শূন্যস্থান পুরণ করুন -

 ক। আরদেন ওয়্যার ক্লে -------- থেকে ---------- তাপমাত্রায় পূর্ণতা প্রাপ্ত হয়।

 খ। বল ক্লে একটি ---------- আঠালতা স¤পন্ন ক্লে।

 গ। কেওলিন বা চায়না ক্লে অন্যান্য ক্লে-র চেয়ে -----------।

 ঘ। থ্রোইং ক্লে বডিতে -------- থেকে -------- এর অধিক মোটা বা কোর্স গ্রগ থাকা উচিত নয়।

 ঙ। ফায়ার ক্লে ----------- তাপমাত্রায় পূর্ণতা প্রাপ্ত হয়।


উত্তর-১  

মাটি বা ক্লে  হল একটি অজৈব যৌগিক পদার্থ, যার  সাথে পানি যোগ করলে আঠালো হয়, ইচ্ছানুযায়ী আকৃতি প্রদান করা যায় , শুকালে শক্তি অর্জন করে এবং পোড়ালে স্থায়ী রূপ লাভ করে উহাকেই মাটি বা ক্লে বলে।

উত্তর-২

আঠালতা মাটি বা ক্লের এমনই একটি গুণ যার ফলে মাটিকে ইচ্ছা অনুযায়ী আকৃতি প্রদান করা যায়। এবং আকৃতি প্রদান করার পর উহা আকৃতি দেয়া দ্রব্যের আকৃতি ধরে রাখতে সহায়তা করে।

উত্তর-৩

দ্রব্যের আকৃতি প্রদান কালীন সময়ে উহার আকৃতি ধরে রাখতে ক্লে-র শক্তি প্রয়োজন হয়।

উত্তর- ৪

মাটির প্রকারভেদ নিম্নরূপ - 

        ১। আরদেন ওয়্যার ক্লে।

        ২। স্টোনওয়্যার ক্লে।

        ৩। চায়না ক্লে।

        ৪। ফায়ার ক্লে।

        ৫। বল ক্লে।

উত্তর- ৫

অধিক পানি শোষণ ক্ষমতার অধিকারী ক্লে দ্বারা দ্রব্যের আকৃতি প্রদান করলে দ্রব্যের আকৃতি ধরে রাখা কঠিন হবে।

 উত্তর- সত্য/ মিথ্যা

ক। মি

খ। স 

গ। মি 

ঘ। স 

ঙ। স

 উত্তর- শূন্যস্থান পুরণ

ক। ৯৫০ 0c, ১১০০ 0c

খ। অধিক

গ। বিশুদ্ধ      

ঘ। ৮%, ১০% 

ঙ। ১৫০০ 0c


বিষয়বস্তু

১। ক্লে কে হাত দ্বারা যথাযথভাবে নিডিং করা। 

২। পূর্বনির্ধারিত পদ্ধতি অনুসারে ক্লে এজিং করার জন্য সংরক্ষণ করা।


অ্যাসেসমেন্ট ক্রাইটেরিয়া

১। ক্লে কে হাত দ্বারা যথাযথভাবে নিডিং করতে পারবেন। 

২। এজিং প্রক্রিয়া যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে পারবেন। 

৩। এজিং সঠিকভাবে সম্পন্ন  হয়েছে কি না তা চিহ্নিত করতে পারবেন। 

শর্তাবলি

প্রশিক্ষণার্থীদের অবশ্যই নিচের সরঞ্জামাদি সরবরাহ করতে হবে -

  * ডেম্প বক্স

  * টেবিল



শিখনফল: ক্লে কে এজিং করণ

 শিখন কার্যক্রম

বিশেষ নির্দেশনা 

 ক্লে কে এজিং করণ

 ইনফরমেশন সিট ৩.৩-১ পড়ুন

সেলফ চেক ৩.৩-১ এর উত্তর করুন।

উত্তরপত্র ৩.৩-১ এর সাথে মিলিয়ে নিন।


ক্লে কে এজিং করণ

এজিং

যে প্রক্রিয়ায় ক্লে-র আঠালতা বৃদ্ধি করে উহাকে যথাযথ কার্যোপযোগীতায় আনয়ন করা হয় তাকে এজিং বলে। ক্লে বা মাটির সাথে পানি মিশ্রিত করে পেস্ট বা কাইয়ে পরিণত করার পর উহা সরাসরি দ্রব্য উৎপাদনের উপযোগী হয় না। দ্রব্য উৎপাদনের উপযোগী করার জন্য কাই বা পেস্ট কে একটি নির্দিষ্ট সময়ব্যাপী ঢেকে রাখা হয় যাতে করে মাটির আঠালতা বৃদ্ধি পায়। ফলে ক্লে দ্বারা কাঙ্খিত দ্রব্যের আকৃতি প্রদান করা সহজতর হয়। পটারী ক্লে বা থোইং ক্লের আঠালতা এবং কার্যোপযোগীতা বৃদ্ধি করার একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হল এজিং। এতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হয়। এ সময়ে পানি ক্লে কনিকাগুলোর ভেতরে প্রবেশ করে এদের মধ্যে উত্তম এবং স্থায়ী বন্ধন সৃষ্টি করে। 

এজিং কালে ক্লের মধ্যে ব্যাকটেরিয়া জন্মায়। এই ব্যাকটেরিয়াগুলো বংশ বৃদ্ধি করতে থাকে। ফলে দিনে দিনে এদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এরা ক্লেতে এসিড ও জেল উৎপন্ন করে এবং এনজাইম ত্যাগ করে যা ক্লে কনিকাকে ভেঙ্গে ক্ষুদ্রতর কনায় পরিণত করে। ফলে আঠালতা বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ আঠালতা বৃদ্ধিতে ব্যাকটেরিয়ার যথেষ্ঠ প্রভাব রয়েছে। কোন কোন পটাররা এজিং করার জন্য ক্লের সাথে জৈব পদার্থ ব্যবহার করে। যেমন- ভিনেগার, লাল মদ ও বিয়ার। এই প্রক্রিয়ায় দুই সপ্তাহের মধ্যে ক্লের কাঙ্খিত মানের এজিং সম্পন্ন হয়। 

এজিং ক্লে বডিকে উত্তম কার্যোপযোগিতা আনয়নে সহায়তা করে। ক্লে কে এজিং করতে একে মিক্সিং এর পরে বা ঢেকে রাখার পূর্বে একদিন বা দুইদিন উন্মুক্ত বাতাসে রেখে দিতে হয়। এতে ক্লের মধ্যে অনুজীব বা ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করতে পারে এবং নতুন ভাবে ক্লেতে অনুজীব জন্মায়।

এই অনুজীবগুলি জৈব পলিমার তৈরি করে যা ক্লেতে অধিক পরিমানে আঠালোতা দিয়ে থাকে। অতিমাত্রায় সূক্ষ কনিকা বিশিষ্ট ক্লে ব্যবহার করে কোন অসুবিধা ছাড়াই এজিং ক্লের ন্যায় আঠালোতা অর্জন করা যায়। এজিং করা ক্লের একটি অসুবিধা রয়েছে। আর তা হল যে ইহা সোয়াম কাদার মত সংকুচিত হয়।

অনেক পটাররা তাদের ক্লে ব্যবহার করার পূর্বে ক্লে এক থেকে ছয় মাস মজুদ করে রাখে। যাতে এতে অনুজীবের কলোনী সৃষ্টি হয়। যেসব ক্লের মধ্যে নেফিলিন সায়ানাইট থাকে এদের তিন মাসের অধিক মজুত করে রাখা উচিত নয়। কারণ এতে ক্লের কনিকা আয়নাইজেশন হওয়ার সম্ভবনা থাকে। 

 


নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লিখুন-

প্রশ্ন ১। এজিং বলতে কি বুঝায় ?

প্রশ্ন ২। ক্লে কিভাবে এজিং হয় লিখুন ?

প্রশ্ন ৩। এজিং কালে ক্লে তে কি কি উৎপন্ন হয় লিখুন ?

প্রশ্ন ৪। নেফেলিন সায়ানাইট যুক্ত ক্লে দীর্ঘ সময় এজিং করার অসুবিধা লিখুন ?


নিচের বাক্যগুলো সত্য হলে "স" এবং মিথ্যা হলে "মি" লিখুন -

ক। এজিং করা হয় ক্লে-র আঠালতা কমানোর জন্য।

খ। আঠালতা বৃদ্ধিতে এজিং এর যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে ।

গ। এজিং কালে ক্লে-র মধ্যে ব্যাকটেরিয়া জন্মায়।

ঘ। এজিং করার পূর্বে ক্লে-কে একদিন বা দুইদিন ঢেকে রাখতে হয়।


শূন্যস্থান পুরণ করুন-

ক। এজিং কালে পানি ক্লে কণিকাগুলোর মধ্যে প্রবেশ করে এদের মধ্যে ------------ এবং -------------      বন্ধন সৃষ্টি করে।

খ। কোন কোন পটাররা এজিং করার জন্য ক্লে-র সাথে -------------- পদার্থ ব্যবহার করে।

গ। এই অণুজীবগুলো জৈব ------------ তৈরি করে।

ঘ। ইহা ----------- কাদার মত সংকুচিত হয়।



উত্তর-১  

যে প্রক্রিয়ায় ক্লে-র আঠালতা বৃদ্ধি করে উহাকে যথাযথ কার্যোপযোগীতায় আনয়ন করা হয় তাকে এজিং বলে।


উত্তর-২

ক্লে বা মাটির সাথে পানি মিশ্রিত করে পেস্ট বা কাইয়ে পরিনত করার পর উহা সরাসরি দ্রব্য উৎপাদনের উপযোগী হয় না। দ্রব্য উৎপাদনের উপযোগী করার জন্য কাই বা পেস্ট কে একটি নির্দিষ্ট সময়ব্যাপী ঢেকে রাখা হয় যাতে করে মাটির আঠালতা বৃদ্ধি পায়।


উত্তর-৩

এজিং কালে ক্লের মধ্যে ব্যাকটেরিয়া জন্মায়। এই ব্যাকটেরিয়াগুলো বংশ বৃদ্ধি করতে থাকে। ফলে দিনে দিনে এদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এরা ক্লেতে এসিড ও জেল উৎপন্ন করে এবং এনজাইম ত্যাগ করে যা ক্লে কনিকাকে ভেঙ্গে ক্ষুদ্রতর কনায় পরিণত করে।


উত্তর- ৪

যেসব ক্লের মধ্যে নেফিলিন সায়ানাইট থাকে এদের তিন মাসের অধিক মজুত করে রাখা উচিত নয়। কারণ এতে ক্লের কনিকা আয়নাইজেশন হওয়ার সম্ভবনা থাকে। 


উত্তর- সত্য/ মিথ্যা

ক। মি

খ। স 

গ। স

ঘ। মি


উত্তর- শূন্যস্থান

ক। উত্তম, স্থায়ী

খ। জৈব

গ। পলিমার      

ঘ। সোয়াম



বিষয়বস্তু

১। পটারস হুইলে দ্রব্য তৈরির জন্য ব্যবহৃত উপকরণ সনাক্তকরণ ও তার প্রয়োগ করা। 

২। পটারস হুইলের বিভিন্ন অংশ সনাক্তকরণ।

৩। ক্লে ওয়েজিং করা। 

৪। হুইলে ক্লে সেন্টারিং করা।

৫। হুইল হেডের উপর দ্রব্য তৈরি করা।

৬। হুইল হেড থেকে দ্রব্য অপসারণ করা।


অ্যাসেসমেন্ট ক্রাইটেরিয়া

১। পটারস হুইলে দ্রব্য তৈরির জন্য ব্যবহৃত উপকরণ সনাক্ত করতে এবং তা প্রয়োগ করতে পারবেন।

২। পটারস হুইলের বিভিন্ন অংশ সনাক্ত করতে পারবেন।

৩। ক্লে ওয়েজিং করতে পারবেন।

৪। হুইলে ক্লে সেন্টারিং করতে পারবেন। 

৫। হুইল হেডের উপর দ্রব্য তৈরি করতে পারবেন।

৬। হুইল হেড থেকে দ্রব্য অপসারণ করতে পারবেন।


শর্তাবলি

প্রশিক্ষণার্থীদের অবশ্যই নিচের সরঞ্জামাদি সরবরাহ করতে হবে -

  * ক্লে

  * পটারস হুইল

  * টুলস

  * যন্ত্রপাতি


শিখনফল : স্পেসিফিকেশন অনুয়ায়ী পটার্স হুইলের উপর দ্রব্য তৈরি করণ।

শিখন কার্যক্রম

 বিশেষ নির্দেশনা

 স্পেসিফিকেশন অনুয়ায়ী পটার্স হুইলের উপর দ্রব্য তৈরি করণ

  ইনফরমেশন সিট ৩.৪-১ পড়ুন।

সেলফ চেক ৩.৪-১ এর উত্তর করুন।

উত্তরপত্র ৩.৪-১ এর সাথে মিলিয়ে নিন।


স্পেসিফিকেশন অনুয়ায়ী পটার্স হুইলের উপর দ্রব্য তৈরি করণ

পটারস হুইল :

পটারস হুইল এমন একটি মেশিন যার দ্বারা রাউন্ড বা চক্রাকার সিরামিক ওয়্যার থ্রোইং পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়।এছাড়াও এর সাহায্যে আধা শুকনা বা শুকনা দ্রব্যের বডি থেকে অতিরিক্ত বডি ট্রিমিং করে অপসারণ করার কাজে ব্যবহার করা হয়। দ্রব্যে খোদাই করে ডেকোরেশন করতে ব্যবহৃত হয়। এবং দ্রব্যের গায়ে কালার রিং করতেও ব্যবহার করা হয়।

জাপানে ১০ হাজার বছর পূর্বে জ্যামন পটারী শুরু হয়ে ছিল। আজ পর্যন্তও সেখানে ফ্রিহ্যান্ড ও হুইলে  এই উভয় পদ্ধতিতে পটারীর দ্রব্যাদি তৈরি হচ্ছে। যিশু খ্রিস্টের জন্মের ৩০০ বছর পূর্বের মেসোপটিয়া ও চীন দেশে পটার্স হুইলের নিদর্শন পাওয়া যায়। প্রাচীন এই চাক বা হুইলের ডিস্কগুলো পিভোট বা আলের বা অক্ষের উপর বসানো হত এবং এদের হাত দ্বারা ঘুরানো হত । 


প্রাচীনকালের হুইলগুলো পরিবর্তন করে নতুন এক ধরনের হুইল তৈরি করা হয়। এ জাতীয় হুইলগুলো কাঠের অবকাঠামোতে স্থাপন করা হয়। হুইলে দুইটি ডিস্ক থাকে। ডিস্ক দুইটি একটি ধাতব শ্যাফট দ্বারা সংযুক্ত থাকে। ডিস্কগুলো ধাতু অথবা পাথরের হয়ে থাকে। শ্যাফটটি বিয়ারিং এর মধ্যে স্থাপিত থাকে। উপরের ডিস্ককে হুইল হেড এবং নিচের ডিস্কটি কে ফ্লাই হুইল বলে। নিচের ডিস্কটি পায়ের সাহায্যে ধাক্কা দিয়ে ঘোরালে উপরের ডিস্কটিও ঘুরতে থাকে। এই ঘূর্ণায়মান ডিস্ক বা হুইল হেডের উপরই মাটি নিক্ষেপ করে দ্রব্যাদির আকৃতি প্রদান করা হয়। হুইলের গতি নিয়ন্ত্রন করার জন্য নিচের ডিস্কের সাথে ব্রেক সংযুক্ত থাকে। 

 

আধুনিক যুগের পটারস হুইল মধ্যযুগীয় হুইলের আধুনিক রূপ মাত্র। এই হুইল ঘোড়ানোর জন্য পায়ের পরিবর্তে বিদ্যুৎ শক্তিকে কাজে লাগানো হয়। হুইলের গতি নিয়ন্ত্রন করার জন্য গিয়ার ব্যবহার করা হয়। উপরের ডিস্কটি একটি বেসিন দ্বারা বেষ্টিত থাকে। যেন কাদাযুক্ত পানি শ্রমিকের গায়ে ছিটিয়ে পড়তে না পারে।


থ্রোইং :

থ্রোইং হচ্ছে ক্লে বা মাটির দ্রব্যাদি আকৃতি প্রদান করার একটি পদ্ধতি। থ্রোইং শব্দটি প্রাচীন ইংরেজী শব্দ থ্রোওয়ান (Thrawan) থেকে উদ্ভ‚ত। যার অর্থ হচ্ছে বির্দীণ করা বা ঘোরানো। এই পদ্ধতিতে ঘূর্ণনযোগ্য হুইল হেডের কেন্দ্রের উপর একটি ক্লের বল বা লাম্প স্থাপন করা হয়। অতপর হুইল হেডটি একটি লাঠির দ্বারা বা পা দ্বারা বা একটি পরিবর্তনশীল গতির মোটর দ্বারা  ঘুরানো হয়। সাধারণত পটার হুইলের উপর কোন পট বা পাত্র তৈরি করার নিমিত্তে এর উপর সম্পাদিত সকল কর্মকান্ডকে থ্রোইং বলে। কিন্ত ব্যাপক অর্থে শুধুমাত্র হুইল হেডের উপরের কর্মকান্ডই থ্রোইংয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় । 

বরং নিম্ন লিখিত ধাপ গুলো থ্রোইংয়ের অন্তর্ভুক্ত।

     ১। সেন্টারিংয়ের পূর্ব প্রস্তুতি

     ২। ক্লে ওয়েজ করণ

     ৩। হুইলে ক্লে সেন্টারিং করণ

     ৪। ক্লে ওপেন বা উন্মুক্ত করণ

     ৫। থ্রোইং বা ওয়াল উঠানো


পটারস হুইলে ক্লে সেন্টারিং করার পূর্বে কতিপয়  পদক্ষেপ নেয়া উচিত।এই প্রস্তুতি মূলক পদক্ষেগুলো আপনার কাজে সফলতা বয়ে আনতে সহায়তা করবে।


১। ড্রেনেজ ব্যবস্থা যথাযথভাবে স্থাপন করুণ : 

কাজ শুরু করার পূর্বে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো কাজ করার সময় বা পরে যে পথ দিয়ে কর্মক্ষেত্রের কর্দমাক্ত পানি নিষ্ক্রান্ত হয় সে পথ পরিষ্কার করা। যাতে কাদাযুক্ত পানির মধ্যস্থিত ক্লে কণিকা জমে পথ বন্ধ হয়ে না যায়। এ কারণে হুইল হেডের উপর সেন্টারিং করার পূর্বে আপনাকে যথাযথভাবে ড্রেনেজ ব্যবস্থা পরিষ্কার করে নিতে হবে।

২। আপনার হাতের আঙ্গুলের নখ কাটুন : 

এটা আপনার কাছে সামান্য ব্যাপার মনে হতে পারে। কিন্ত এটা বাস্তব সত্য যে আপনার আঙ্গুলের নখগুলো না কাটলে থ্রোইং কালে অনেক সম্ভাব্য সমস্যা সৃষ্টি  করতে পারে। হুইল দ্রূত ঘুরার সময় যদি আঙ্গুল অসাবধানতা বশত  নিয়ম বহির্ভ‚তভাবে কোনাকৃতি হয়ে যায় তাহলে আচড় পরে যাবে। এবং নখের ভিতর মাটি প্রবেশ করে নখ বির্দীন হয়ে যেতে পারে।  


৩। আপনার টুলস একত্র করুণ :

আপনার থ্রোইং টুলস গুলো যথাস্থানে রাখুন যাতে আপনি হুইলে কাজ করার সময় এদের সহজেই নাগালের মধ্যে পান।

  * দুই লিটার পানি বা স্লারি ধারণ করতে পারে এমন একটি পাত্র বা বালতি ডান হাতের নিকট নির্ভরযোগ্য বা নিরাপদ স্থানে রাখুন। আপনার পানি বা স্লারির পাত্রটি হুইল হেডের এত নিকটে রাখুন যাতে পানি বা স্লারি ব্যবহারের সময় ঝরে পড়তে না পারে ।

  * ভিজা ¯পঞ্জ ও ফিনিসিং লেদার রাখুন।

  * হুইলের পার্শ্বে আবর্জনা ও স্ক্রেপ ক্লের জন্য একটি বালতি রাখুন।

  * থ্রোইং শেষে হাত ও টুলস পরিস্কার করার জন্য হুইলের নিকট অন্য একটি বালতি রাখুন।

  * হাতের কাছে বেডগুলো প্রস্তুুত রাখুন।

  * যদি আপনি পানি বা স্লারি ব্যবহার করেন তাহলে সেগুলো নাগালের মধ্যে রাখুন।


৪। থ্রোইংয়ের জন্য যথাযথ কাঠিন্যতার ক্লে প্রস্তুুত করণ :

আপনার ক্লে থ্রোইংয়ের জন্য উপযুক্ত কাঠিন্যের কিনা তা চেক করুণ। ক্লে অতিমাত্রায় স্টীপ বা অতিমাত্রায় নরম হলে এর দ্বারা কাজ করা প্রায় অসম্ভব। অভিজ্ঞতার আলোকেই আপনি ক্লের স্টিফনেসের র মাত্রা নির্ধারন করুন ।


ক্লে অতিমাত্রায় নরম হলে তা কেনভাস বা প্লাস্টারের ব্যাটের উপর ওয়েজিং করে শক্ত বা ওয়েজিং করা যায়। প্লাস্টার ব্যাটের উপর কাজ আগে নিশ্চিত হতে হবে যাতে এর কোন প্লাস্টারের ধুলো বা কনা না থাকে । 

ক্লে অতি মাত্রায় শক্ত (Stiff)  হলে ইহা পানির মধ্যে ডোবাও অতপর ওয়েজিং টেবিলের উপর ক্লেকে ছড়িয়ে তার উপর পানি ছিটিয়ে দাও। ছড়ানো ক্লে ভিতর দিকে ভাজ কর যাতে পানি দ্বারা বেষ্টিত হয়। ক্লেতে পানি পুরাপুরি না মিশা পর্যন্ত ওয়েজিং করুন। যদি ক্লে এর পরও শক্ত থাকে তাহলে একেই কাজের পুনরাবৃত্তি করুন। যে পর্যন্ত না কাজ করার উপযোগী হয়।


৫। সমসত্বভাবে ক্লে প্রস্তুত করণ :

উত্তম থ্রোইং এর জন্য আপনার ক্লে কে অবশ্যই সমসত্ব করে তৈরি করতে হবে। যেন ক্লে সঠিকভাবে কাজের জন্য উপযুক্ত স্টিফ হয়। ক্লে যথাযথভাবে স্টিফ না হলে তৈরি করা দ্রব্য শুকানোর সময় একই হারে শুকাবে না। ফলে দ্রব্য ফেটে যেতে পারে। এ জন্য দ্রব্য তৈরির ক্লে সমসত্বভাবে তৈরি করুণ। যাতে ক্লে সঠিকভাবে স্টিফ হয়।


৬। ক্লে বাতাস মুক্ত করণ :

ক্লে বাতাস মুক্ত না হলে একে হুইলে সেন্টারিং এবং থ্রোইং করতে সমস্যা সৃষ্টি করবে। এতে প্রায় সময়ই ব্লিবিং এর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ফলে ফায়ারিংকালে দ্রব্য কিলনে বিদীর্ণ হয়ে যাবে। তাই দ্রব্যকে নিরাপদে থ্রোইং ও পোড়াতে ক্লে-র এয়ার পকেট দূর করতে হয়। ওয়েজিং করে এয়ার পকেট দূর করা যায়। তাছাড়া ডি-এয়ারিং পাগিং করে এ কাজ উত্তমরূপে সম্পন্ন করা যায়। এয়ার পকেটগুলো খুব ছোট ছোট বুদবুদের ন্যায়। এরা ক্লের মসৃণ পৃষ্ঠের উপর উন্মুক্ত থাকতে পারে অথবা ক্লের মধ্যে বদ্ধ অবস্থায় থাকতে পারে। ক্লে কে উত্তমরূপে ওয়েজিং করে বুদবুদমুক্ত করতে পারবেন। ক্লে দীর্ঘসময় পানির নিচে থাকলে এদের পুনরায় প্রসেসিং করে নিতে হবে।


ক্লে ওয়েজিং করণ :

 পটারি দ্রব্যাদি তৈরি করার জন্য যে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয় ওয়েজিং তাদের মধ্যে অন্যতম। ওয়েজিংয়ের প্রধান উদ্দেশ্য হল ক্লেকে সমসত্বভাবে স্টিফ করা এবং  এয়ার পকেট দূর  করা। ওয়েজিং করার জন্য তিনটি পদ্ধতি প্রচলিত রয়েছে। সেগুলো হল-

১। কাটা ও চপেটাঘাত পদ্ধতি   ২। সিলিন্ডার ওয়েজিং পদ্ধতি  ৩। কোন্ (cone) ওয়েজিং পদ্ধতি


সব ওয়েজিং পদ্ধতিতেই ক্লে প্লাস্টার ব্যাট বা কেনভাস পৃষ্ঠের উপর করতে হবে। দাড়িয়ে ওয়েজিং করা উত্তম এতে কাজ করা সহজতর হয়।


১। কাটা ও চপেটাঘাত পদ্ধতি  : 

 এই পদ্ধতিতে ওয়েজিং করলে ক্লের মধ্যে এয়ার পকেট যুক্ত হয় না। যে সকল পটারের মাসেল বা হাতের জয়েন্টে সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য এই পদ্ধতি উপযোগী। কারণ সিলিন্ডার ও কোন্ পদ্ধতিতে হাত ও কব্জিতে চাপ পরে। কাটা ও চপেটাঘাত পদ্ধতিতে এক পাউন্ড বা তিন পাউন্ড ওজনের ক্লে লাম্পকে মাঝ বরাবর কেটে দুইভাগ করে পৃথক করতে হবে। এরপর এক অংশের উপর অপর অংশ সজোরে আঘাত  বা চপেটাঘাত করে একত্র করতে হবে । এই কাজ একাধিকবার করতে হবে।


২। কোন্ ওয়েজিং পদ্ধতি:

 ২। কোন্ ওয়েজিং পদ্ধতি:

কোন্ ওয়েজিং নিডিং করার ন্যায় একটি পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে একবারে দশ পাউন্ড পর্যন্ত ক্লে ওয়েজিং করা যায়। তবে যদি ক্লে ওয়েজকারির কব্জি খুব মজবুত হয় সেক্ষেত্রে বিশ পাউন্ড পর্যন্ত ওয়েজ করা যায়। এই পদ্ধতিতে সিলিন্ড্রিক্যাল পদ্ধতির চেয়ে দ্রূততম সময়ে করা যায়। তবে সেক্ষেত্রে মৌলিক দক্ষতা অর্জন করতে হবে।



কোন্ পদ্ধতিতে কিভাবে ক্লে ওয়েজ করা হয়: 

 (ক) ক্লে বল তৈরি করণ :

ক্লে কে সমসত্ব এবং এয়ার পকেট মুক্ত করার জন্য ওযেজিং করা হয়। কোন্ ওয়েজিং ক্লে স্পাইরাল প্রক্রিয়ায় কম্পেক্ট হয় এবং ক্লেকে কোন্  আকৃতি প্রদান করে থাকে এজন্যে এঁকে কোন্ পদ্ধতি বলে। বেশির ভাগ পটাররা এই পদ্ধতি পছন্দ করে। এই পদ্ধতিতে ওয়েজিং করার প্রথম কাজ হল ক্লেকে বল আকারে পরিণত করা । 


(খ) কোন্ ওয়েজিং এর প্রথম ধাপ :

কেনভাস বা প্লাস্টার স্লাবের উপর আপনার ক্লে বলটি স্থাপন করুন। যদি ইতিমধ্যে আপনি এঁকে কোন্ আকৃতি দিয়ে থাকুন তাহে ল কোন্রে সরু বা ছোট প্রান্ত ডান দিকে এবং পুরু বা মোট প্রান্ত বাম দিকে রাখুন। আপনার ডান হাত ক্লের ডান প্রান্তে এবং বাম হাত বাম প্রান্তে রাখুন।

এখন বাম হাত টেবিলের সাথে খাড়াভাবে থাকবে। ডান হাতে নিচের দিকে ধাক্কা দিন। আপনার কাছ থেকে ক্লে ধিরে ধিরে সরিয়ে আনুন। ক্লে কোন্রে ডান দিক হতে প্রতি ধাক্কায় ১ ইঞ্চি বা ২ ইঞ্চি করে সরে আসবে।


(গ) কোন্ ওয়েজিং এর দ্বিতীয় ধাপ : 

 বাম হাত দিয়ে ক্লেকে আপনার নিকট এনে পিষে ফেলুন যাতে প্রথম  ধাপের চেয়ে ইহা দাড়ানো অবস্থায় এক বা দুই ইঞ্চি লম্বা ক্লে লেজের সৃষ্টি হয়। বাম হাত দিয়ে সামান্য পরিমান উর্ধ্বমুখী এবং নিম্নমুখী চাপ প্রয়োগ করে ক্লেকে নিজের দিকে নিয়ে আসুন। তবে আগের ধাপে ডান হাতে যে পরিমান চাপ প্রয়োগ করেছেন তার চেয়ে কম চাপ প্রয়োগ করা উচিত। আপনার বাম হাত দ্বারা ক্লে রোলের সরু প্রান্তের দিকে পাকাতে থাকুন। এতে কোন্রে মূল অগ্রভাগ বাম দিকে প্রবাহিত হবে। পরিশেষে কোন্রে অগ্রভাগকে নিচের দিকে ভাজকরে দিতে হবে। 

ধাপ এক এবং দুই কে  ২০ থেকে ৫০ বার পুনরাবৃত্তি করতে হবে যে পর্যন্ত না ক্লে পুরাপুরি ভাবে সমসত্ব ও এয়ার পকেট মুক্ত হয়।




(ঘ)ওয়েজিং কালে কোন্ এর অবয়ব :

চিত্রে দেখা যাচ্ছে যে এই মাত্র যে ক্লে দ্বারা আপনি কাজ করছেন তার সরু অগ্রভাগ যা লেজের ন্যায় দেখাচ্ছে তা আপনার দিকে মুখ করে আছে। কোন্টি এর প্রান্তের উপর অবস্থান করছে। যা পরবর্তি দুই ধাপের  কাজের জন্য প্রস্তুত হয়েছে।  

চিত্রে দেখা যাচ্ছে ক্লে রোলের পূর্বের সরুপ্রান্ত বা লেজের কম্প্রেসনের দাগ বা চিহ্ন কোনের তলদেশের ডান প্রান্তে। আর কোন্রে  গোড়ার বাম দিকে স্পাইরাল বা পেচানো দেখা যাচ্ছে। 


(ঙ)কোন্রে তলদেশের আকৃতি দিন :

আপনি ওয়েজিং সম্পন্ন করেছেন। তবে এখনও ক্লের গোড়ার দিকে ওয়েজিং কালের ঘূর্ণি পাকের প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। এটা ওয়েজিং কা লে ক্লে পেচানোর কারণে হয়ে থাকে। আপনি যদি ক্লের এই ঘূর্ণিপাক বা খাজ দূর না করে ক্লে যেভাবে আছে সেভাবেই স্থাপন করেন তাহলে ক্লে এবং ব্যাটের মধ্যে এয়ার পেকেট তৈরি হবে। কোন্রে তলদেশের প্রান্তের চারিদিকে দৃঢ়ভাবে আঘাত করে এর তলদেশ গোলাকার করে খাজ দূর করুন। এই হল কোন- ওয়েজড পদ্ধতিতে ক্লে প্রস্তুতি


(চ)চুড়ান্তভাবে কোন্-ওয়েজিং ক্লে প্রস্তুত করণ:

 ইহা এখন থ্রোইং বা হাতে দ্রব্য প্রস্তুত করার জন্য উপযোগী। চুড়ান্ত ভাবে ইহা তলদেশের উপর স্থাপন করা হয়েছে। ক্লে রোলকে এর  বাম-পার্শ্বের উপর স্থাপন করে ওয়েজ করা হয়েছে। অতপর  ক্লে রোলের ঘূর্ণিবাত বা খাজ দূর করে চুড়ান্ত ভাবে আকৃতি দিতে হবে ।


পটার্স হুইলে উপর যথাযথ ভাবে সেন্টারিং করণ:

১। ব্যাটের উপর সজোরে ক্লে নিক্ষেপ করণ:

  ক্লে তৈরি হওযার পর ইহাকে থ্রোইংয়ের জন্য প্রস্তুুত করুন। পরবর্তী ধাপ হল একে পর্টাস হুইলের উপর সেন্টার করা। কোন কোন পটাররা সরাসরি হুইল হেডের উপর কাজ করে কিন্তু বেশির ভাগই ব্যাট ব্যবহার করে। অল্প পরিমান ক্লে-র জন্য বা ক্ষেত্রে আপনি সাধারণ ভাবে ক্লে বল বা ক্লে কোন্ ব্যাটের উপর যতদূর সম্ভব সেন্টার পয়েন্টের কাছে এনে  সশব্দে নিক্ষেপ করুণ। ক্লে বলকে চাপড়িয়ে ইহা থ্রোইং সারফেসের সাথে সংযুক্ত করুণ। একাজে হাতের আঙ্গুল ব্যবহার না করে হাতের তালু ব্যবহার করুণ। 

 ক্লের পরিমান বেশি হলে হুইল হেডের উপর সজোরে নিক্ষেপ করার পর হাত দ্বারা মৃদু আঘাত করে মাঝখানে নিয়ে আসুন। ক্লেকে ভিজানোর পূর্বে এবং সেন্টারিং করার শুরুতে এ কাজ করতে হবে। এ কাজ করতে উভয় হাতকে ক্লে বা মাটির দলার পার্শ্বদেশের উপর একে অপরের বিপরীত দিক থেকে হালকা আঘাত করতে হবে ।   

মনে রাখা দরকার থ্রোইং প্রসেসের সফলতা বহুলাংশে নির্ভর করে সেন্টারিং এর সঠিকতার উপর।




২। পটারস হুইলের উপর সেন্টারিং করণ :

পটারস্ হুইলের উপর সেন্টারিং করতে ক্লে গতিশীল ও  প্রচুর পিচ্ছিল হওয়া দরকার। এজন্য ক্লে-কে একমুষ্টি পানি বা স্লারি দ্বারা কাজের শুরুতে ভিজিয়ে নিন। কখনও ক্লেকে শুকাতে দিবেন না। এতে ক্লে বা মাটি আপনার উভয় হাতে লেগে যাবে এবং সেন্টার থেকে ক্লে উঠে যাবে। হুইল আপনার সেন্টারের ন্যায় পূর্ণ গতিতে ঘুরতে থাকবে। ঘূর্ণায়মান ক্লের উপর আপনার হাত রাখলে যদি হাতের নিচে কোন কিছু নড়াচড়া করছে না এমন মনে হয় এবং উভয় হাত ক্লের পার্শ্বদেশে স্থাপন করলে আপনার হাত মোটেই নড়াচড়া করছে না এমন অনূভুত হয় তাহলে বুঝতে হবে ক্লের সেন্টারিং সম্পন্ন হয়েছে । 

 সেন্টারিং সম্পন্ন হওয়ার পর আপনি চিন্তা করুন ক্লে দ্বারা আপনি কি করবেন।

  * যদি আপনি খুব চওড়া ও নিচু আকৃতির দ্রব্য যেমন- প্লেট বা কম উচ্চতা সম্পন্ন বাটি তৈরি করতে চান তাহলে আপনি আপনার ক্লেকে নিচু ডোম বা গম্বুজাকৃতি করে সেন্টার করা উচিত।

  * যদি আপনি সমান উচ্চতা ও প্রশস্ততা সম্পন্ন দ্রব্য তৈরি করতে চান তাহলে ক্লে গড় ডোমাকৃতি করে সেন্টার করবেন । 

  * যদি আপনি লম্বা আকৃতির দ্রব্য থ্রোইং করতে চান সেক্ষেত্রে ক্লেকে অপেক্ষাকৃত লম্বা সরু ডোমাকৃতির করে সেন্টারিং করবেন। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে দ্রব্যের আকৃতির জন্য ক্লেকে ওপেনিং করার সময় আপনার হাতের আঙ্গুল যেন ক্লের প্রায় তলদেশ পর্যন্ত পৌছায় ।

  * যদি আপনি একবার নিক্ষেপ করা ক্লে থেকে একাধিক দ্রব্য তৈরি করতে চান সেক্ষেত্রে নিক্ষিপ্ত সম্পূর্ণ ক্লের সেন্টারিং না করে শুধুমাত্র ক্লে স্তুপের উপরি ভাগের যে অংশে দ্রব্য তৈরি করতে চান সে অংশের ক্লের সেন্টারিং করুণ।

  * এখন সেন্টারিং করা অংশের নিম্নাংশে আন্ডারকাট করুন তবে এক্ষেত্রে আন্ডারকাট অতিমাত্রায় যেন না হয়ে যায় তা লক্ষ রাখতে হবে। যদি অতি মাত্রায় আন্ডারকাট হয়ে যায় তাহলে দ্রব্য তৈরি করার সময় তা ক্লে স্তুপের সাথে আবদ্ধ হয়ে যাবে।


৩। ক্লে টেনে সেন্টার করণ:

ক্লে টেনে সেন্টার করতে আপনি বিভিন্ন উপায় বা স্টাইল ব্যবহার করতে পারেন। এদের মধ্যে একটি পদ্ধতি হল ক্লেকে নিজের দিকে টেনে উভয় হাতে  দৃঢ়ভাবে ধরে ক্লের  মাঝখানে চাপ প্রয়োগ করুন। আর ক্লের পার্শ্বের দিক নিয়ন্ত্রন করতে আপনি আপনার আঙ্গুল ব্যবহার করুন। এবং ক্লের উপরিভাগ আপনার থাম দ্বারা নিয়ন্ত্রন করুণ। চাপ প্রয়োগ করে ক্লেকে ডোম আকৃতি দিন।

অল্প পরিমান ক্লের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি খুবই উপযুগী । বিশেষ করে যখন ক্লের পরিমান এক পাউন্ড থেকে তিন পাউন্ড হয়। 


 

৪। ক্লে ঠেলে এর সেন্টার করা :

এই পদ্ধতিতে ক্লেকে ঠেলে সেন্টারিং করা হয়। এই কাজটি সফলতার সাথে সম্পন্ন করার জন্য আপনি আপনার হাতকে ক্লের উভয় পার্শ্বে স্থাপন করুন। এক থেকে তিন পাউন্ড ক্লের জন্য আপনি এই পদ্ধতি প্রয়োগ করতে পারেন।আপনার থাম বা হাতের তালু দ্বারা ক্লের উপরি ভাগ নিয়ন্ত্রন করুণ। আপনার করতলের নিচের প্রান্ত ব্যবহার করে ডোমের নিম্নভাগ সেন্টার করুণ।


৫। হাতের তালু দিয়ে ক্লে সেন্টার করণ:

এই পদ্ধতিতে সেন্টার করতে অপনার কনুইকে উরুর সাথে লাগিয়ে হাতকে হুইল হেডের উপর এমন ভাবে রাখুন যাতে আপনার কনুই থেকে হুইল হেডের সেন্টার পর্যন্ত একই সরল রেখায় অবস্থান করে। এখন আপনার তালুর হিল দ্বারা ক্লেকে নিচের দিকে চাপ দিন। আপনার অন্য হাতের পার্শ্ব দ্বারা ডোমকে উপরের দিকে চাপ দিন। 

এই পদ্ধতির একটি সুবিধা হল যে হুইলে কাজ করার সময় আপনি আপনার হাতকে না নাড়িয়েই পানি বা স্লারি দ্বারা সিক্ত স্পঞ্জ দ্বারা ক্লেকে পিচ্ছিল করতে পারবেন। কারণ ক্লে সেন্টার করার সময় যথন ইহা শুকিয়ে আসবে তখন আপনি সহজেই একে ভিজাতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে পানি বা স্লারি নেয়ার প্রয়োজন হবে না।



৬। সেন্টারিং কালে হুইলের উপর ওয়েজিং করণ : 

ক্লেকে সেন্টারিং করার পর হুইল হেডের উপর ওয়েজিং করে নিলে উত্তম ফল পাওয়া যায়। এটা করার প্রধান কারণ হল ক্লে যাতে সমসত্ব ভাবে মিশ্রিত হয়। এতে থ্রোইং সহজতর হয়। তাছাড়া মাটি একটু শক্ত বা স্টিফ হলে এতে পানি যোগ করতেও করা হয়ে থাকে। 

হুইলে ওয়েজ করতে ডোম আকারে সেন্টারিং করুণ।  ডোমের মাঝখান উভয় হাতে চাপ দিয়ে একে উপরের দিকে চাপ দিয়ে উপর দিকে উঠিয়ে লেজের ন্যায় আকৃতি দিন। একাজ করার সময় ক্লেকে এমন ভাবে নিয়ন্ত্রন করুণ যাতে ক্লের মধ্যে ভাজ না পরে। ক্লে যেন ভিতর দিক থেকে বাহিরের দিকে ফেঁপে ওঠে। সেন্টার ডোমকে পূর্ণগঠন করুন। 

ক্লে যাতে সমসত্ব হয় এবং ক্লের কনিকাগুলো  যেন জোট বদ্ধ অবস্থায় অবস্থান করে তা নিশ্চিত। উত্তম ফলাফলের জন্য কমপক্ষে এ কাজের তিন বার পূনরাবৃত্তি করা উচিত।


১। পটারস হুইলের উপর ক্লের সেন্টার বের করণ  : 

 পটার্স হুইলের উপর ক্লেকে খুব সতর্কতার সাথে উন্মুক্ত করতে হয় কারণ এর উপরই থ্রোইং প্রক্রিয়ার বাকি অংশ নির্ভর করে। একাজ যথাযথ ভাবে করার জন্য ক্লের কেন্দ্র সঠিক ভাবে চিহ্নিত করতে হবে। যদি আপনি দ্রূত বা দুর্বল ভাবে হাত স্থাপন করে কেন্দ্র চিহ্নিত করতে চান তাহলে সঠিক ভাবে কেন্দ্র চিহ্নিত করা দূরহ হয়ে দাড়াবে। আর যদি কেন্দ্র চিহ্নিত করণে বিচ্যুতি ঘটে তাহলে দ্রব্যের আকৃতি দেয়া সম্ভব হবে না । 

ক্লে উন্মুক্ত করে প্রথমে পটের তলদেশের আকৃতি প্রদান করতে হয়। এ সময় হুইল পূর্ণ গতিতে বা পূর্ণ গতির তিন - চতুর্থাংশ গতিতে ঘুরা উচিত। ক্লের পৃষ্ঠদেশ উত্তম রূপে পিচ্ছিল রাখতে হবে। একাজ করার জন্য আপনি একটি সিক্ত স্পঞ্জ আপনার কাছে রাখুন। যাতে আপনি প্রয়োজন মত ক্লেতে পানি দিতে পারেন। ফলে আপনাকে বালতি থেকে কাপে করে পানি আনার দরকার হবে না।

 ক্লে ওপেনিং এবং থ্রোইং প্রসেসের সময় আপনাকে দৃঢ় এবং স্বাভাবিকভাবে থাকতে হবে। যাতে আপনি স্বাভাবিক ও ধীর গতিতে কাজ করতে পারেন। যারা প্রাথমিকভাবে থ্রোইং শিক্ষা করছে তাদের ক্ষেত্রে অবশ্যই এ প্রক্রিয়া অনুসরণীয়। কাজ করার সময় ক্লে দ্রূত ধাক্কা খেলে সেন্টর থেকে আলাদা হয়ে যাবে।তাই এ বিষয়ে সর্তক থাকতে হবে।

ওপেনিং বা উন্মুক্ত করণের কাজ অবশ্যই শুরু করতে হবে সেন্টার থেকে। ক্লের সেন্টার বাহির করার জন্য আপনার ডান হাত সেন্টার করা ক্লের উপর রাখুন যাতে উহা ক্লের কেন্দ্র বিন্দুতে গমন করে। আপনার বাম হাতের আঙ্গুলের ডগাগুলো ডান হাতের আঙ্গুলের উপর রাখুন। এভাবে হাত রাখার কারণে ক্লের সেন্টারে ওপেনিং করা সহজ হবে।


২। প্রয়োজনীয় গভীরতা পর্যন্ত পট উন্মুক্ত করণ:

আপনার হাতগুলো যে অবস্থায় ক্লের উপর অবস্থান করছে এ অবস্থায় পটারস হুইলের উপর পাত্রকে প্রয়োজনীয় গভীরতা  পর্যন্ত উন্মুক্ত করতে হবে। আপনার বামহাত দিয়ে ডান হাতের আঙ্গুলগুলোর উপর হালকা ভাবে নিচের দিকে ধাক্কা দিন। ডান হাতের আঙ্গুলগুলো সোজা রাখুন। কারণ আপনার ডান হাতের আঙ্গুলগুলো ক্লের সেন্টার বরাবর রয়েছে।  চাপের ফলে আপনা আপনি মাটি সরে আসবে এতে করে কেন্দ্রে ওপেনিং উৎপন্ন হয়ে যাবে । ওপেনিং কালে ক্লে যাতে পিচ্ছিল থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে। ডান হাতের আঙ্গুলের উপর চাপ অব্যাহত রাখবেন যে পর্যন্ত না বেটের পৃষ্ঠদেশ ও ওপেনিং এর তলদেশের মধ্যে আধা ইঞ্চি পুরুত্ব থাকে ।

এখন হুইল বন্ধ করুন। পটার সূচ বা নিডেল দিয়ে পটের ফ্লোরের গভীরতা চেক করুন। ইহার পুরুত্ব আধা ইঞ্চি ও কোয়ার্টার ইঞ্চির মধ্যে হওয়া উচিত। কারণ পরবর্তি কালে পট লেদার হার্ড অবস্থায় আসলে এর তলদেশে ফুট তৈরি করতে হলে এরূপ পুরুত্ব থাকা উচিত।


 ৩। পটের ফ্লোর তৈরি করণ : 

ইতিমধ্যে আপনি পটের গভীরতা তৈরি করেছেন। এখন ফ্লোর তেরি করার সময়। এ অবস্থায় হুইলকে তার পূর্ণ গতির তিন-চতুর্থাংশ গতিতে ঘুড়াতে হবে। এবং ক্লেকে উত্তমরূপে পিচ্ছিল রাখতে হবে। 

আপনার আঙ্গুলগুলো ওপেনিং ওয়ালের বিপরীত দিকে স্থাপন করুন এবং আলতো করে নিজের দিকে টানুন। ফ্লোরকে বেটের সমান্তরালে রাখুন । যদি আপনি বাটি তৈরি করতে চান তাহলে পরবর্তী কালে ফুট তেরি করতে সুবিধা হবে। এক্ষেত্রে ফ্লোর পটের ওয়ালের সাথে কার্ভ অবস্থায় থাকবে। যেহেতু আপনি আপনার দিক ওয়াল টানছেন সেহেত আপনার আঙ্গুল কার্ভ করুন যাতে ক্লে উপরের দিকে সামান্য স্ফীত হয়ে উঠে আসে।এতে করে আপনি সমপুরুত্বের ওয়াল পাবেন। যেহেতু আপনি এখন ওয়াল তৈরি আরম্ভ করছেন। 

আপনি ফিনিস্ড দ্রব্যের অভ্যন্তর ভাগের তলদেশের যেরূপ চাচ্ছেন তার চেয়ে প্রশস্ত করে তৈরি করুণ। কারণ দ্রব্য শুকানোর পর ছোট হয়ে যাবে। যে পরিমান ছোট হবে তা হিসাব করে সে পরিমান প্রশস্ত করে তৈরি করুণ। 

ফ্লোর বা মেঝ তৈরির কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর একটি স্পঞ্জ ব্যবহার করে অতিরিক্ত তরল পদার্থ বা তরল কাদা মাটি অপসারন করুন। এখন ফ্লেরের উপর আপনার আঙ্গুল সামান্য চাপ দিয়ে সামনে পিছনে করুন। এই ধাপের উদ্দেশ্য হল ক্লেকে কম্প্রেস্ট করা। এই ধাপ একে শক্তি দিয়ে থাকে। 


পটার্স হুইলের উপর থ্রোইং কালে পটের দেওয়াল সোজা করা : 

এখন আপনার ফ্লোর তৈরি হয়েছে। আপনার ডান হাত পটের ওয়ালের বাহিরের দিকে এবং বাম হাত ভিতর দিকে স্থাপন করুন। এ অবস্থায় হুইল তার পূর্ণ গতির অর্ধেক বা এক চতুর্থাংশ গতিতে ঘুরা উচিত এবং ক্লে উত্তম রূপে লুব্রিকেটেট বা পিচ্ছিল অবস্থায় রাখতে হবে।

এমতবস্থায় আপনার হাত দ্বয় সম্পূর্ণরূপে একে অপরের বিপরীত দিকে থাকবে যাতে করে ক্লে এই দুই হাতের মধ্যে দিয়ে চলাচল করতে পারে। উভয় দিক থেকে মৃদুভাবে ধাক্কা বা চাপ দিন যাতে করে ওয়াল সোজা হয়ে উপরের দিকে উঠে আসে এবং উপর থেকে নিচ পর্যন্ত ওয়াল সমপুরুত্বের হয়। 

আপনি যদি এমন একটি পট তৈরি করতে চান যার উপরিভাগ সরু তাহলে আপনি সোজা দেওয়াল তৈরি করে সেখান থেকে আনুভ’মিক সিলিন্ডারের পরিবর্তে কোন্ করে আকৃতি দিতে পারেন । এটা সোজা আকৃতির দেয়াল বিশিষ্ট পটের চেয়ে আকৃতি দেয়া সহজতর। এখন একটি স্পঞ্জ ব্যবহার করে পটের ফ্লোরের থেকে তরল অপসারন করুন। আপনার পট এখন উন্মুক্ত এবং প্রথম থ্রোইং দেয়ার জন্য প্রস্তুত।


আপনি কিভাবে হুইল হেডের উপর থ্রো করবেণ:  

পটার্স হুইলের উপর দ্রব্য তৈরি করা কয়েকটি ধাপে বিভক্ত। নিম্নে এদের আলোক পাত করা হল। 

 ০১। থ্রোইং কালে পিচ্ছিল করার গুরুত্ব: 

সাধারণত পটার্স হুইলের উপর ক্লে দ্বারা পট তৈরি করার সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াকে থ্রোইং বলে। এই প্রক্রিয়ার কয়েকটি ধাপ রয়েছে। যেমন- 

  * সেন্টারিং

  * ওপেনিং

  * ওয়াল থ্রোইং করণ এবং 

  * দ্রব্যে চুড়ান্তরূপ প্রদান

সেন্টারিং ও ওপেনিং এর সময় ক্লেকে অবশ্যই উত্তমরূপে পিচ্ছিল রাখতে হবে। এজন্য ডান বা বাম হাতের তালুতে একটি স্পঞ্জ রাখলে খুবই সহায়ক হবে। তাহলে আপনি নড়াচড়া না করেই প্রয়োজন মত স্পঞ্জকে চাপ দিয়ে তরল তথা পানি দিতে সক্ষম হবেন। 

সহজেই পটের ওয়ালের উভয় পার্শ¦কে পিচ্ছিল করার জন্য আপনার এক হাত ইহার উপর স্থাপন করুন। এ অবস্থায় যেন দুইটি আঙ্গুল পটের দেওয়ালের উভয় পার্শ্বকে স্পর্শ করে অবস্থান করে। এখন স্পঞ্জ চাপ দিয়ে তরল বা স্লারি ফেলুন। ইহা আপনার আঙ্গুলের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে নিচের দিকে প্রবাহিত হবে এবং ওয়ালের উভয় পার্শ্বকে পিচ্ছিল করবে। 

ছবিতে আপনি দেখতে পাচ্ছেন আপনার প্রথম থ্রোইং এর পূর্বে পটকে পিচ্ছিল করা হয়েছে। 


 

০২। থ্রোইং কালে হুইলের গতি ও শারীরিক গতিবিধি :

পটের ওয়াল থ্রোইং কালে হুইলের গতি এর পূর্ণ গতির এক চতুর্থাংশ বা তার চেয়ে কম হবে। হুইলের গতি নিয়ন্ত্রনে সবচেয়ে বেশি সমস্যার সন্মুক্ষীণ হয় নবাগত শিক্ষার্থীরা। কাজ শেখার প্রথম দিকে হুইলের অপেক্ষাকৃত কম গতি রাখা নবনাগত শিক্ষার্থীদের জন্য অতি উত্তম ফল বয়ে আনে। থ্রোইং কালে নবাগত শিক্ষার্থীদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল হুইলের গতি নিয়ন্ত্রন করা। কারণ চলমান হুইলের গতি বৃদ্ধিকালে উহা প্রাকৃতিকভাবে আরো গতিশীল হয়। তবে কিছু দিন অনুশিলন করলে তা স্বভাবিক ভাবে নিয়ন্ত্রনে চলে আসে। থ্রোইং কালে যখন হুইল খুব দ্রূত গতিতে চলতে থাকে তখন নানা সমস্যার উদ্ভব হয়ে থাকে। তাই হুইলের গতি বৃদ্ধিপেলে তা নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসতে হয়। ক্লেকে উত্তম রূপে সেন্টারিং এবং ওপেনিং করতে আপনাপর গতি বিধি এবং চলাফেরা দৃঢ় এবং সমতাপূর্ণ হতে হবে। অর্থাৎ থ্রোইং কালে ক্লেকে সামঞ্জস্যপূর্ণ ভাবে স্পর্শ করতে হবে এবং ক্লের থেকে সামঞ্জস্যপূর্ণ ভাবে হাত অপসারণ করতে হবে। থ্রোইং কালে ঝাকুনি,হঠাৎ নড়াচড়া করে ক্লেকে স্পর্শ করা এবং ক্লে থেকে হঠাৎ হাত অপসারণ করার কারণে পটের কেন্দ্র চুত্যি ঘটতে পারে । আর একবার পট কেন্দ্র চুত্য হলে তা পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে প্রায় অসম্ভব ।


 ছবিতে আমরা থ্রোইংয়ের প্রথম পর্যায় দেখতে পাচ্ছি । এ পর্যায়ে ডান হাতের আঙ্গুল পটের বাহিরের দিকের তলদেশের নিচে চলে এসেছে এবং দুই হাত পরস্পরের বিপরীতে কাজ করছে ।  এবং এই দুই হাতের মধ্যে ক্লে পাঁক খেয়ে বক্র হচ্ছে ।আমরা থ্রোইংয়ের চতুর্থ পর্যায়ে এর কৌশল নিয়ে আলোচনা করব।

০৩। চাপ দিয়ে পটের রিম তৈরি করা :

পটার্স হুইলে কাজ করার সময় আপনাকে কতিপয় কাজ করতে হবে। এদের মধ্যে একটি হল পটের রিম তৈরি করা। আপনি এটা করতে পারেন হাতের আঙ্গুলের প্রান্ত দ্বারা বা চামড়া দ্বারা। এজন্য দুই ইঞ্চি বাই চার ইঞ্চি সাইজের এক টুকরা চামড়া ( হরিণের ) চামড়া সচরাচর ব্যবহার করা হয়ে থাকে ।  তবে সুবিধাজনক প্রকৃতির অন্য প্রানির চামড়া ও ব্যবহার করা যায়।  রিম তৈরি করার জন্য চামড়ার টুকরার দুই প্রান্ত দৃঢ়ভাবে ধরুণ এবং এঁকে  পটের উপরের প্রান্তের থেকে সামান্য নিচে পটের গাঁ স্পর্শ করে  ধরে রাখুন। উভয় প্রান্ত হতে মৃদুভাবে আঙ্গুল দ্বারা চাপ দনি। 

এই চাপের ফলে পঠের রিম দৃঢ়তা লাভ করে। প্রতি থ্রোইংয়ের শেষের দিকে পটের ফ্লোর থেকে অতিরিক্ত তরল অপসারণ করা উচিত। তারপর ওয়ালকে পুনরায় পিচ্ছিল করুণ ।


০৪। পটের ওয়াল থ্রোইংয়ের কৌশল : 

ছবিতে আমরা পটের থ্রোইংয়ের মাধ্যমিক পর্যায়ের কার্যক্রম দেখতে পাচ্ছি ।এই পর্যায়ে এক হাতকে পটের বাহির দিকে এবং অন্য হাতকে পটের ভিতর দিকে রেখে মৃদুভাবে চাপ প্রয়োগ করলে ওয়াল পাতলা হয়ে আসবে এবং অতিরিক্ত ক্লে স্ফীত হয়ে উঠে আসবে ফলে পটের উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে। পটের ওয়াল থ্রোইং করতে আপনার বাম হাতের তর্জনীর আঙ্গুল বাঁকা করে পটের ওয়াল থ্রোইং করতে পটের ওয়ালের তলদেশের বেইজের নিকট স্থাপন করুন। আর ডান হাতের তর্জনী আঙ্গুল পটের বাহির দিকে বেইজ বরাবর স্থাপন করুন। পটের তলশের পুরুত্বের কারণে আপনার বাম হাতের তর্জনীর চেয়ে ডান হাতের তর্জনী সামান্য উপরে থাকা উচিত । 

সামান্য ও মৃদুভাবে আপনার তর্জনীর জয়েন্টে চাপ প্রয়োগ করে উভয় হাতকে উপরের দিকে উঠিয়ে আনুন । এ সময় বাম হাতকে ডান হাতের চেয়ে সামান্য উপরে রাখুন।

উপরের দিকে উলম্বভাবে উত্থিত ওয়ালকে সামান্য পরিমানে ভিতর মুখী রাখুন । কারণ ক্লে বাহিরের দিকে মুভ করতে বা চলে যেতে চাবে। এটা কোন ক্রোমেই হতে দেয়া যাবেনা। তবে বাটি তৈরির ক্ষেত্রে এটা বিবেচনার প্রয়োজন নাই। মনে রাখতে হবে যে হুইল যদি অধিক দ্রূত গতিতে ঘোরে তাহলে ওয়াল উলম্বভাবে ধরে রাখর ক্ষেত্রে বিপরীত কাজ করবে ।

যেহেতু আপনার হাত পটের উপরের অংশে পৌছেছে সেহেতু এখন পটের ওয়ালের উপর আপনার হাতের চাপ কমিয়ে আনুন। অন্যথায় পটের নিচের অংশের ওয়াল অপেক্ষাকৃত মোটা থাকবে এবং উপরের অংশের ওয়াল অপেক্ষাকৃতভাবে চিকন হবে।

এখন পটের উপরিভাগে আপনার বাম হাত ক্লেকে স্পর্শকরে স্থিরভাবে ধরে রাখুন যতক্ষন না পর্যন্ত আপনার ডান হাত উপরের দিকে উঠে আসে। কারণ আপনার ডান হাত অবিরত উপরের দিকে উঠে আসে। 


০৫। প্রতি থ্রোইংয়ের পর অতিরিক্ত তরল মুছে তুলে ফেলুন :  

প্রতি থ্রোইংয়ের পর পটের রিমকে চাপ দিন ( ৩য় ধাপ দেখুন )। যে মাত্র পটের রিম চাপ বা কম্পেস্ড সম্পন্ন হয়েছে তখনই একটি স্পঞ্জ ব্যবহার করে পটের ফ্লোরের অতিরিক্ত তরল অপসারণ করুণ। যদি তরল দীর্ঘক্ষণ থাকে তাহলে ইহা ক্লে তথা পটের গঠন দুর্বল করে দিবে। এর কারণে পরবর্তি পর্যায়ে তথা পটের ড্রাইং বা ফায়ারিং কালে ক্রেকিং বা ফাটার সম্ভবনা থাকবে।

অতিরিক্ত তরল অপসারণ করার পর পরবর্তি থ্রোইং এর পূর্বে ( ১ম ধাপ দেখুন ) পটের ওয়াল পিচ্ছিল করে নিন।


০৬। পটের ওয়ালের তৃতীয় পর্যায়ের থ্রোইং করণ : 

সাধারণত বলা হয়ে থাকে মিডিয়াম সাইজের একটি পটের ওয়াল পাতলা করতে তিন বার বা তিন সাইকেল থ্রোইংয়ের প্রয়োজন হয়। তবে ছোট সাইজের ক্ষেত্রে তা একবার বা এক সাইকেল থ্রোইং লাগতে পারে। আবার অপেক্ষাকৃত বড় আকারের পটের ক্ষেত্রে অধিক বারের প্রয়োজন হয়। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল পটের ওয়ালের পুরুত্ব হওয়া বাঞ্জনীয় ।

যখন পটের ওয়ালের পুরুত্ব প্রায়ই প্রয়োজনের নিকটবর্তী বা পুরাপুরিভাবে কাঙ্খিত পুরুত্বের হয় তখন পটের রিমকে চাপ বা কম্প্রেস্ড করতে হবে এবং অতিরিক্ত তরল অপসারণ করতে হবে। ওয়ালকে শুধুমাত্র তখনই পিচ্ছিল করার প্রয়োজন হবে যখন পুনরায় কাজ করার দরকার হবে। এখন দ্রব্যকে চুড়ান্তভাবে ফিনিস্ড করার সময়।


কাঠের টুলস ব্যবহার করে চ‚ড়ান্তভাবে দ্রব্যের আকৃতি প্রদানঃ 

এই অবস্থায় আপনি বিভিন্ন ধরনের কাঠের টুলস ব্যবহার করে বা হাতের সাহায্যে দ্রব্যের পৃষ্ঠদেশ মসৃণ করে চুড়ান্তভাবে দ্রব্যের আকৃতি প্রদান করুন।

হুইল থেকে পট অপসারণ করণঃ

দ্রব্য তৈরির কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর পটের তলদেশের পুরুত্ব যে পরিমাণ রাখা দরকার তার নিচ বরাবর কাট অফ ওয়্যার দ্রব্যকে স্পর্শ  করে রাখলে হুইল ঘূর্ণনের ফলে দ্রব্যটি কেটে আলাদা হয়ে যাবে। দ্রব্য কাটার সময় হুইলের গতি কমিয়ে আনতে হয়। 

 

পটারীর দ্রব্য উৎপাদনে ব্যবহৃত মৌলিক টুলস:

পটার হুইলে ক্লে দ্বারা কাজ করার সময় প্রধানত দুইটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ রাখতে হয়।এদের মধ্যে একটি হল দ্রব্য তৈরি করার জন্য হাত দিয়ে মাটি সংগ্রহ করা এবং হুুইলের উপর দ্রব্যর আকৃতি প্রদান করা। উভয় কাজ সম্পাদন করার জন্য মৌলিক কতগুলো টুলস ব্যবহার হয়ে থাকে। মনে রাখা উচিত এগুলো মৌলিক টুলস কীট। এই টুলস গুলো প্রত্যেক পটারকে কাজ শুরু করার আগেই প্রস্তুত রাখতে হয়।

একজন পটারের থ্রোইং কাজ ফলপ্রসুভাবে স¤পন্ন করার জন্য নিম্নলিখিত যন্ত্রপাতিগুলো প্রয়োজন নিম্নে এগুলোর চিত্রসহ বিবরণ দেয়া হলো-

০১। তোয়ালে ও এপ্রোন (Towels and Apron) :

পটারীর কাজ হল একটি ময়লা যুক্ত কাজ। একাজ করার সময় হাতে কাদা লাগে। হাত পরিস্কার করার জন্য একটি তোয়ালে দরকার হয়। তাছাড়া কাপড় যাতে অপরিস্কার  না হয় এজন্য এপ্রোন প্রয়োজন হয়। পার্শে¦র চিত্রে তোয়ালে ও এপ্রোনের ব্যবহার দেখানো হল।


০২। চামড়া (Chamois):

ইহা একটি অতিব গুরুত্বপূর্ণ উকরণ। এর দ্বারা থ্রোইং করা দ্রব্যের উপরের প্রান্তে চাপ বা কম্পেসিং করা হয়। তাছাড়া দ্রব্যের পৃষ্ঠদেশ মসৃন করার কাজেও ইহা ব্যবহার হয়ে থাকে। সাধারণত ইহা পাশে ২ ইঞ্চি এবং দৈর্ঘ্যে ৪ ইঞ্চি সাইজের হয়ে থাকে। ইহা ব্যবহার করার পূর্বে ডেম্প করে নিতে হয়।প্রতিবার কাজ করার পরে ইহা ধুয়ে পরিস্কার করে নিতে হয়।


০৩। পটার্স সূচ (Potter's Needle) : 

এই লম্বা সূচ গুলোকে কাঠের, ধাতুর বা প্লাস্টিকের হাতলের সাথে স্থাপন করে তৈরি করা হয়।পটারী শিল্পে ইহার বহুমুখী ব্যবহার রয়েছে। হুইলের উপর দ্রব্যের উপরের প্রান্ত ট্রিমিং করতে ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া স্লাব ও কয়েল পদ্ধতিতে তৈরি করা দ্রব্যাদিতে খাজ কাটতে বা নকশা করার কাজে ব্যবহার করা হয়।


০৪। দ্রব্য কাটার তার (Cut of wires) : 

নির্দিষ্ট সাইজের এক পিচ তারের উভয় প্রান্তে শক্ত কাঠের টুকরা বেধেঁ ইহা তৈরি করা হয়। মাছ ধরার জালের সূতা বা চিকন তার  দ্রব্য কাটার কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। একে অনেকটা পনির কাটার সূতার মত দেখায়। এই ধরনের টুলস গুলো ক্লের বড় লাম্প কাটার কাজেও ব্যবহার করা হয়। আর পটার হুইল থেকে দ্রব্য কেটে তা অপসারণ করার কাজে ব্যবহার করা হয়।


০৫। ফেটলিং ছুরি (Fleeting knives): 

এ জাতীয় ছুরি গুলো পাতলা ব্লেড আকারের হয়ে থাকে । এরা হার্ড টেম্পার্ড বা নরম প্রকৃতির হয়ে থাকে। হার্ড তথা শক্তগুলো অনমনীয় পক্ষান্তরে নরম ফেটেলিং ছুরি গুলো নমনীয হয়ে থাকে। নমনীয় ছুরিগুলো কে বাঁকা করে কাঙ্খিত কোনাকৃতি এবং কার্ভ করা যায়। এগুলো কাস্টিং করা দ্রব্যের অতিরিক্ত অংশ কাটার কাজে ব্যবহার করা হত। তাছাড়া থ্রোইং করা দ্রব্যের ট্রিমিং করার জন্যও ব্যবহার করা হয় 


০৬। রিবস এবং স্ক্রেপার ( Ribs ans Scrapers) :

এই টুলস গুলো পটকে হুইলের উপর আকৃতি দিতে এবং এদের মসৃন করার জন্য ব্যবহার করা হয়


০৭। লুপ, তার এবং রিবন টুলস ( Loop Wire and Ribbon Tools):

এই টুলস গুলো কাঁচা দ্রব্যাদি  ট্রিমিং করার কাজে ব্যবহার করা হয়।


০৮। কাঠের মডেলিং টুলস (Wooden Modeling Tools) : 

এই জাতীয় টুলস গুলো বিভিন্ন আকৃতির হয়ে থাকে। এরাও দ্রব্যাদি হুইলের উপর ট্রিমিং করার কাজে ব্যবহার করা হয়।


০৯। স্পঞ্জ ( Sponge ) : 

স্পঞ্জ একটি অত্যাবশ্যকীয় টুলস। এটা দ্বারা থ্রোইং কালে দ্রব্যেকে পানি বা তরল দিয়ে পিচ্ছিল করা হয়। আবার প্রয়োজন মত দ্রব্য থেকে তরল শোষন করে দূর করে নেয়া যায়। 


১০। ব্রাস (Brushes) : 

এগুলো অত্যাবশ্যকীয় টুলস। এরা দ্রব্যের কোন নির্দিষ্ট এরিয়াতে পানি বা স্রিপ লাগানোর কাজে ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া দ্রব্যে আন্ডার গ্লেজ ওভার গ্লেজ পেইন্ট করার কাজে ব্যবহার করা হয় ।


১১। ক্যালিপারস ( Calipers) :

পটের ভিতর এবং বাহিরের দিক পরিমাপ করার জন্য ইহা ব্যবহার করা হয় । বিশেষ করে তৈরি করা দ্রব্যের যদি একাধিক পার্ট থাকে, যেমন-ঢাকনা যুক্ত জার বা পাত্র। কাপের বেইজ পরিমাপ করতে ব্যবহার করা হয় যাতে কাপের বেইজ সসারের সেন্টারের গর্তের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় 


১২ । বাক্স ( The Box) :

অনেক পটারী টুলস রয়েছে যে গুলো ছোট আকৃতির। এবং সহজেই স্থান চুত্য হয়ে যেতে পারে। বেশির ভাগ পটাররা এক ধরণের বাক্স ব্যবহার করে যাতে তাদের ছোট ছোট টুলস গুলো সুবিন্যাস্ত অবস্থায় রাখা যায়।









নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লিখুন-

প্রশ্ন ১। পটারস হুইল দ্বারা কোন ধরনের দ্রব্যাদির আকৃতি প্রদান করা যায় লিখুন ?

প্রশ্ন ২। থ্রোইং পদ্ধতি বলতে কি বুঝায় ?

প্রশ্ন ৩। হুইলে কাজ করার সময় কি কি জিনিসপত্র হাতের নাগালের ভেতরে রাখতে হয় লিখুন ?

প্রশ্ন ৪। ক্লে ওয়েজিং করার উদ্দেশ্য লিখুন ?

প্রশ্ন ৫। পটারস হুইলের উপর ক্লে সেন্টারিং হয়েছে তা কীভাবে বুঝবেন লিখুন ?

প্রশ্ন ৬। পটারস হুইলে দ্রব্য উৎপাদনে সেন্টারিং একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ ধাপ তা বুঝিয়ে লিখুন ?

প্রশ্ন ৭। প্রতি থ্রোইং এর পরপর ক্লে কে পিচ্ছিল করতে হয় কেন ?

প্রশ্ন ৮। পটের ওয়াল থ্রোইং এর কৌশল লিখুন ?

প্রশ্ন ৯। হুইলে কাজ করতে ব্যবহৃত দশটি মৌলিক টুলস এর নাম লিখুন ?

প্রশ্ন ১০। নিচের টুলসগুলোর নাম লিখুন।

    

    ক।                         খ।                         গ।                        ঘ।                           ঙ।

নিচের বাক্যগুলো সত্য হলে "স" এবং মিথ্যা হলে "মি" লিখুন -

ক। থ্রোইং পদ্ধতিতে ঘূর্ণনযোগ্য হুইল হেডের পার্শ্বের উপর একটি ক্লের বল বা লা¤প স্থাপন করা হয়।

খ। খুব চওড়া ও নিচু আকৃতির দ্রব্য তৈরি করতে ক্লে কে লম্বা সরু ডোমাকৃতি করে সেন্টারিং করবেন।

গ। পটার সূচ বা নিডল দিয়ে পটের ওয়ালের পুরুত্ব চেক করুণ।

ঘ। চাপের ফলে পটের রিং দৃঢ়তা লাভ করে।

ঙ। প্রতি থ্রোইং এর পর পটের রিং কে চাপ দিন।

চ। মিডিয়াম সাইজের একটি পটের ওয়াল পাতলা করতে একবার বা এক সাইকেল থ্রোয়িংয়ের প্রয়োজন হয়।

ছ। পটারির কাজ হলো একটি ময়লাযুক্ত কাজ। 

জ। ফ্যাটলিং ছুরিগুলো পাতলা ব্লেড আকারের হয়ে থাকে। 

ঝ। রিবস এবং স্ক্র্যাপার পটার হুইলের উপর দ্রব্যের সেন্টারিং করতে ব্যবহৃত হয়। 

ঞ। লুপ, তার এবং রিবন কাঁচা দ্রব্যাদি ট্রিমিং করার কাজে ব্যবহৃত হয়।


শূন্যস্থান পুরণ করুণ -

 ক। জাপানে ------------ হাজার বছর পূর্বে জ্যামন পটারি শুরু হয়েছিল।

 খ। ক্লে অতিমাত্রায় ------------- বা অতিমাত্রায় ------------- হলে এর দ্বারা কাজ করা প্রায় অসম্ভব।

 গ। ক্লে কে ----------- এবং ------------ পকেট মুক্ত করার জন্য ওয়েজিং করা হয়।

 ঘ। পটারস হুইলের উপর ------------- করতে ক্লে গতিশীল ও প্রচুর ------------ হওয়া দরকার।

 ঙ। ক্লে উন্মুক্ত করে প্রথমে পটের ------------- আকৃতি প্রদান করতে হয়।

 চ। পটারস হুইলের উপর থ্রোইং কালে আপনার ----------- পটের ওয়ালের বাইরের দিকে এবং --------   ভেতরের দিকে স্থাপন করুন।

 ছ। থ্রোয়িং কালে নবাগত শিক্ষার্থীদের বড় সমস্যা হলো হুইলের -------------- নিয়ন্ত্রণ করা।

 জ। উলম্বভাবে উত্থিত ওয়ালকে সামান্য পরিমানে ------------- মুখী রাখুন।

 ঝ। যদি তরল দীর্ঘক্ষণ থাকে তাহলে ইহা ক্লে তথা পটের গঠন ----------- করে দিবে।

 ঞ। চামড়া ব্যবহার করার পূর্বে ---------- করে নিতে হয়।



উত্তর-১  

পটারস হুইল দ্বারা রাউন্ড বা চক্রাকার আকৃতির দ্রব্যাদির আকৃতি প্রদান করা যায়।


উত্তর-২

যে পদ্ধতিতে ঘূর্ণায়মান হুইল হেডের উপর ক্লে বল বা লা¤প নিক্ষেপ করে হাতের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে দ্রব্য তৈরি করা হয় উহাই থ্রোইং পদ্ধতি।


উত্তর-৩

হুইলে কাজ করার সময় নিম্নলিখ জিনিসপত্রগুলো হাতের নাগালের মধ্যে রাখতে হয়। 

  *  দুই লিটার পানি বা স্লারি ধারণ করতে পারে এমন একটি পাত্র বা বালতি ডান হাতের নিকট নির্ভরযোগ্য বা নিরাপদ স্থানে রাখুন। আপনার পানি বা স্লারির পাত্রটি হুইল হেডের এত নিকটে রাখুন যাতে পানি বা স্লারি ব্যবহারের সময় ঝরে পড়তে না পারে ।

  * ভিজা স্পঞ্জ ও ফিনিসিং লের্দা রাখুন।

  * হুইলের পার্শ্বে আবর্জনা ও স্ক্রেপ ক্লের জন্য একটি বালতি রাখুন।

  * থ্রোইং শেষে হাত ও টুলস পরিস্কার করার জন্য হুইলের নিকট অন্য একটি বালতি রাখুন।

  * হাতের কাছে বেডগুলো প্রস্তুুত রাখুন।

  * যদি আপনি স্লিপ ব্যবহার করেন তাহলে সেগুলো নাগালের মধ্যে রাখুন।


উত্তর-৪

ক্লে ওয়েজিং করার প্রধান উদ্দেশ্য হলো ক্লে কে সমসত্বভাবে স্টিফ করা এবং এয়ার পকেট দূর করা। 


উত্তর-৫ 

পটার্স হুইলের উপর ঘূর্ণায়মান ক্লের উপর হাত রাখলে যদি হাতের নিচে কোন কিছু নড়াচড়া করছেনা এমন মনে হয়। এবং উভয় হাত ক্লের পার্শ্বদেশে স্থাপন করলে হাত মোটেই নড়াচড়া করছেনা এমন অনুভ‚ত হয় তাহলেই বুঝা যাবে ক্লে সেন্টারিং স¤পন্ন হয়েছে।


উত্তর-৬ 

থ্রোইং প্রসেসে দ্রব্য উৎপাদনে সেন্টারিং একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। কারণ হুইল হেডের উপর নিক্ষিপ্ত ক্লে সঠিকভাবে সেন্টারিং না হলে ক্লে দ্বারা সঠিক আকৃতির দ্রব্য তৈরি করা দুরূহ। এমনকি কখনো কখনো দ্রব্যের আকৃতি দেওয়া অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। তাই মনে রাখা দরকার থ্রোইং প্রসেসের সঠিকতা বহুলাংশে নির্ভর করে সেন্টারিং এর সঠিকতার উপর।


উত্তর-৭

প্রতি থ্রোইং এর পরপর ক্লে কে পিচ্ছিল করতে হয় নতুবা ক্লে শুকিয়ে যাবে। এতে ক্লে বা মাটি হাতে লেগে যাবে। এমনকি সেন্টার থেকে ক্লে আগলা হয়ে যাবে। অর্থাৎ হুইল হেডের উপর স্বাচ্ছন্দে কাজ করা যাবেনা। তাই প্রতি থ্রোইং এর পর ক্লে কে পিচ্ছিল করে নিতে হয়।


উত্তর ৮ 

পটের ওয়ালের আকৃতি প্রদান করার সময় এক হাতকে পটের বাহিরের দিকে এবং অন্য হাতকে পটের ভেতরের দিকে রেখে মৃদুভাবে চাপ প্রয়োগ করলে ওয়াল পাতলা হয়ে আসবে। এবং অতিরিক্ত ক্লে স্ফিত হয়ে উপরের দিকে উঠে আসবে। ফলে পটের উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে। এ অবস্থায় পটের ওয়াল থ্রোইং করতে আপনার বাম হাতের তর্জনী আঙুল বাঁকা করে পটের ওয়াল থ্রোয়িং করতে উহার তলদেশে বেইজের নিকট স্থাপন করুণ। আর ডান হাতের তর্জনী আঙুল পটের বেইজে বরাবর স্থাপন করুণ। পটের তলদেশের পুরুত্বের কারনে আপনার বাম হাতের তর্জনীর চেয়ে ডান হাতের তর্জনী সামান্য উপরে রাখা উচিৎ। এখন সামান্য বা মৃদুভাবে আপনার তর্জনীর জয়েন্টে চাপ প্রয়োগ করে উভয় হাতকে উপরের দিকে উঠিয়ে আনুন। এই সময় বাম হাতকে ডান হাতের চেয়ে সামান্য উপরে রাখুন। এই কৌশলেই পটের ওয়াল থ্রোইং করুণ।

 

উত্তর ৯

নিচে দশটি মৌলিক টুলস এর নাম দেয়া হলো -

১। পটার্স সূচ।

২। দ্রব্য কাটার তার।

৩। ফেটলিং ছুরি।

৪। রিবস ও স্ক্র্যাপারস।

৫। লুপ, তার এবং রিবন।

৬। কাঠের মডেলিং টুলস।

৭। স্পঞ্জ।

৮। ব্রাশ।

৯। ক্যালিপার্স

১০। চামড়া।


উত্তর ১০

ক। কাঠের মডেলিং টুলস।

খ। ক্যালিপার্স 

গ। রিবস এন্ড স্ক্র্যাপারস।

ঘ। ফেটলিং ছুরি।

ঙ। পটারস সূচ।



উত্তর- সত্য / মিথ্যা

ক। মি

খ। মি

গ। মি

ঘ। স

ঙ। স

চ। মি

ছ। স

জ। স

ঝ। মি

ঞ। স


উত্তর- শূন্যস্থান

ক। দশ  

খ। স্টিফ, নরম

গ। সমসত্ব, এয়ার 

ঘ। সেন্টারিং, পিচ্ছিল 

ঙ। তলদেশের

চ। ডান হাত, বাম হাত 

ছ। গতি 

জ। ভিতর 

ঝ। দুর্বল 

ঞ। ডেম্প

 


বিষয়বস্তু

১। পটারি দ্রব্যাদিতে সৃষ্ট ক্রটিগুলো সনাক্ত করা 

২। পটারি দ্রব্যাদিতে সৃষ্ট ক্রটিগুলো দূর করা


অ্যাসেসমেন্ট ক্রাইটেরিয়া

১। পটারি দ্রব্যাদিতে সৃষ্ট ক্রটিগুলো সনাক্ত করতে পারবেন।

২। পটারি দ্রব্যাদিতে সৃষ্ট ক্রটিগুলো দূর করতে পারবেন।


শর্তাবলি

প্রশিক্ষণার্থীদের অবশ্যই নিচের সরঞ্জামাদি সরবরাহ করতে হবে -

  * কাঁচা দ্রব্য

  * পোড়ানো দ্রব্য

  * সিলিকা 

  * ক্লে


শিখনফল: পটারির ত্রুটি চিহ্নিত করণ এবং দূর করণ ।

 শিখন কার্যক্রম

 বিশেষ নির্দেশনা

 পটারির ক্রটি চিহ্নিত করতে এবং দূর করতে পারবেন।

ইনফরমেশন সিট ৩.৫-১ পড়ুন।

সেলফ চেক ৩.৫-১ এর উত্তর করুন

উত্তরপত্র ৩.৫-১ এর সাথে মিলিয়ে নিন।



  পটারির ক্রটি চিহ্নিত করণ এবং দূর করণ

 পটারি দ্রব্যাদিতে সৃষ্ট ক্রটি এবং তার প্রতিকার 


পটারি দ্রব্যাদি উৎপাদনের বিভিন্ন ধাপে ক্লে বডিতে বিভিন্ন ধরনের ক্রটি হতে পারে। ক্লে বডির এই ক্রটি গুলো একটু সতর্ক হলেই পরিহার করা যায়। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে প্রকৃতিতে প্রাপ্ত সকল ক্লের গুনাগুণ ও মানের মধ্যে তারতম্য রয়েছে। ক্লে দ্বারা যেসব কাজ করা হয় সেসব কাজের চাহিদা অনুযায়ী এদের কতিপয় গুনাগুণ থাকা বাঞ্ছনীয়। অন্যথায় কিছু কিছু সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। বাস্তবে কাজের সাথে পুরাপুরি সঙ্গতিপূর্ণ ক্লে প্রকৃতিতে পাওয়া দুরহ।

তাই ক্লে দ্বারা কোন দ্রব্য উৎপাদন করার প্রাথমিক পর্যায় থেকে চ‚ড়ান্ত পর্যায় পর্যন্ত বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। এই সমস্যা গুলোকে দ্রব্যের ক্রটি বা ডিফেক্ট বলে। এরা বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে।  একটু সতর্কতার সাথে কাজ করলে বা কোন কোন ক্ষেত্রে সঠিক কাঁচামাল নির্বাচন করে বা কোন নতুন কাঁচামাল যোগ করেএই ক্রটি গুলো পরিহার করা যায়। নিচে দ্রব্যের কতিপয় ক্রটি ও এর সমাধানের উপায় বর্ণিত হলো।

 ১। দ্রব্য শোকানোর সময় সৃষ্ট ক্রেকিং বা ওয়ার্পিং

ড্রায়িং ক্লের তৈরি দ্রব্যকে সম্ভাব্য মাত্রায় শক্ত দ্রব্যে পরিণত করে। ক্লে বডি হতে পানি অপসারনের 

প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করেই মূলত ক্রেকিং সংগঠিত হয়। 

ড্রায়িং কালের ক্রেকিং দূর করার জন্য -

  * দ্রব্যের ওয়াল ও তলদেশের পুরুত্ব যতদূর সম্ভব সমান রাখা।

  * থ্রোয়িং কালে পটের তলদেশে চাপের ফলে যেন এস-ক্রেক সৃষ্টি না হয়।

  * কাঁচা দ্রব্য দ্রূত শুষ্ক করা থেকে বিরত থাকুন। এই জন্য দ্রব্যকে এক সপ্তাহ তাকে রাখা। দ্রব্য কিলনে লোডিং করার পূর্বে এরা বোন ড্রাই অবস্থায় পরিনত হয়েছে কি না তা চেক করা। 

  * দ্রব্য যত পুরু হবে তার ড্রায়িং প্রসেস তত দীর্ঘায়িত হবে। 

  * দ্রব্য সকল পার্শ্ব থেকে যেন সমভাবে শুকায়। এটা মূলত টাইলস এবং প্লেটের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

২। তাপীয় শক হতে ক্রেক

যখন দ্রব্য খুব দ্রূত উত্তপ্ত বা ঠান্ডা করা হয় তখন ক্রেক বা ফাটল সৃষ্টি হতে পারে। ক্লে বডির কণিকাগুলোর মধ্যের বন্ধন শক্তির চেয়ে প্রসারন বা সংকোচনের ফলে সৃষ্ট পীড়ন যখন বেশি হয় তখন এই ক্রটির সৃষ্টি হয়।

তাপীয় শক থেকে সৃষ্ট ক্রেক পরিহার করতে-

  * দ্রব্য পোড়ানোর জন্য ব্যবহৃত কিলনকে খুব দ্রূত গরম বা ঠান্ডা করা থেকে বিরত থাকা। 

  * কিলনের ওপেনিং এর মধ্য দিয়ে যাতে সহজেই ঠান্ডা বাতাস প্রবেশ করতে না পারে। বিশেষ করে যখন কিলন খুব উত্তপ্ত অবস্থায় থাকে।

  * যদি কিলনের মধ্য থেকে আপনি পিংইং শুনতে পান তাহলে দ্রূত কিলন ঠান্ডা করুণ। পিংইং হলো 

          কিলনে দ্রব্য ফাটার শব্দ। কিলনের দরজা বা ঢাকনা বন্ধ করে দিন। এবং সকল ধরনের ড্যাম্পার 

          গুলো বন্ধ করুণ। 

  * পোড়ানো দ্রব্য ড্যাম্প অবস্থায় থাকলে তা ওভেন বা মাইক্রোওভেনে রাখা থেকে বিরত থাকা। 

  * রেফ্রিজারেটর বা ফ্রিজ থেকে সরাসরি ওভেন বা মাইক্রোওভেনে দ্রব্য না রাখা।


৩। ডান্টিং 

ডান্টিং বলতে ক্লে বডি বা দ্রব্যের ফাটলকে বুঝায়। যা ফায়ারিং এর শেষের দিকে র‌্যাপিড কুলিং কালে সংগঠিত হয়। যেসব ক্লে বডিতে ২৫% বা তার চেয়ে বেশী সিলিকা থাকে ঐ সকল বডিতে ডান্টিং হয়ে থাকে। 

ডান্টিং প্রতিকারের উপায়-

দ্রব্যকে ধীর গতিতে ঠান্ডা করলে এই ক্রটি হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে।


৪। ব্লাকোনিং, ব্লোটিং এবং কার্বন কোরিং 

এই ক্রটিগুলো দ্রব্যের প্রথম ফায়ারিং এর সময় সংগঠিত হয়। যদি দ্রব্য তৈরিতে ব্যবহৃত ক্লে প্রাকৃতিকভাবে কার্বন ধারণ করে থাকে তবে এই কার্বন যথাযথ ভাবে প্রজ্বলিত হয়ে অপসারিত হয় না। 

এই ক্রটি গুলো পরিহার করতে- 

  * বিস্কুট বা প্রথম ফায়ারিং এ ধীরে ধীরে তাপমাত্রা উঠানো।

  * যদি দ্রব্য জ্বালানী দহনকারী কিলনে পোড়ানো হয় সে ক্ষেত্রে কিলন যেন রিডাকশন এটমোস্ফিয়ারের দিকে যেতে না পারে তা নিশ্চিত করা। দহনের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেন সরবরাহ করা।


৫। ব্লিবিং

ব্লিবিং হলো এয়ার প্যাকেট। এগুলো দ্রব্যের আকৃতি দেওয়ার সময় সৃষ্টি হয়। ফায়ারিং কালে বাতাস 

স্ফীত হয়ে বেলুনের ন্যায় ক্লে বডির সারফেসের উপর দেখা যায়। 

ব্লিবিং দূর করতে- 

  * আপনার ক্লে ব্যবহারের পূর্বে যথাযথ ভাবে ওয়েজিং করে নিন বা ডি-এয়ারিং পাগমিলে পাগিং করা 

          ক্লে ব্যবহার করুণ। 

  * ব্লিবিং যদি কোন নির্দিষ্ট ক্লের ক্ষেত্রে হতে থাকে তাহলে গ্রগ যোগ করুণ বা ক্লে বডি পরিবর্তন করে 

          নিন। 

যদিও ব্লিবিং ক্লে বডির ক্রটি তবুও এরা গ্লেজে প্রভাব বিস্তার করে। ব্লিবিং গ্লেজে পিট, পিনহোল এবং 

ব্লিস্টারিং এর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।


৬। ডিফ্লোকিউলেশন

আপনি যখন ক্লে তৈরি করতে থাকেন তখন কদাচিৎ ই দেখা যায় ইহা আপাত ভাবে হঠাৎ নরম হয়ে যায়। এতে ইহা কাজের অনুপযোগী হয়ে যায়। কোন কোন ক্ষেত্রে দেখা যায় এক মুঠি মাটি নিয়ে হাতে ঝাকি দিলে অনেকটা তরলায়িত হয়ে যায়। এই তরলায়িত হওয়াই হলো ডিফ্লোকিউলেশন। এই ক্লের কণিকাগুলো আয়োনাইজেশন হয়েছে। যাকে সোজা কথায় বলা যায় একে অপরকে বিকর্ষণ করছে। 


কদাচিৎ সংগঠিত এই সমস্যা হলে আপনি কি করবেন ?

  * ক্লেতে যদি নেফেলিন সায়ানাইড থাকে সেক্ষেত্রে পানি মিশ্রিত করে রাখুন ।

  * যদি ক্লে বডিতে অধিক পরিমাণ ফেল্ডস্পার, টাল্ক বা ফ্রিট থাকে তাহলে ক্লের সাথে ০.৪% ড্রাই 

         বেসিস ইপসন লবণ ব্যবহার করুন। 

  * থ্রোয়িং ক্লে তে অধিক পরিমাণ কেওলিন থাকলে সেক্ষেত্রে ক্লের সাথে ০.৫%- ১% ইপসন লবণ ব্যবহার করুন।

 ৭। ক্লে-গ্লেজ ফিটঃ 

যখন বডি এবং গ্লেজ একে অপরের সাথে সঠিকভাবে ফিট না হয় তখন এই সমস্যার সৃষ্টি হয়। ১০% এর চেয়ে কম সিলিকা ধারণকারী ক্লে বডির সাথে গ্লেজ ফিট করা কঠিন হয়। যদি এটাই একমাত্র কারণ হয় সে ক্ষেত্রে সিলিকার পরিমাণ বৃদ্ধি করে এই সমস্যা দূর করা যায়।



নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লিখুন-

প্রশ্ন ১। পটারির দ্রব্যাদিতে সৃষ্ট পাঁচটি ক্রটির নাম লিখুন ?

প্রশ্ন ২। কোন ধরনের পটারির দ্রব্যাদিতে ডান্টিং এর সৃষ্টি হয় ?

প্রশ্ন ৩। বিøবিং বলতে কি বুঝায় ?

প্রশ্ন ৪। ব্ল্যাকেইন, ব্লোটিং এবং কার্বন কোরিং ক্রটি দূর করার উপায় লিখুন ?


নিচের বাক্যগুলো সত্য হলে "স" এবং মিথ্যা হলে "মি" লিখুন -

ক। দ্রব্য খুব দ্রূত ঠান্ডা বা উত্তপ্ত করা হলে ক্রেক বা ফাটল সৃষ্টি হতে পারে।

খ। ডান্টিং স্লো কুলিং এর সময় সংগঠিত হয়।

গ। ১০% এর চেয়ে কম সিলিকা ধারণকারী ক্লে বডিতে গ্লেজ ফিট করা কঠিন।


শূন্যস্থান পুরণ করুণ -

 ক। কিলনের মধ্যে দ্রব্য ফাটার শব্দ কে ----------- বলে।

 খ। দ্রব্য যত পুরু হবে তার ড্রায়িং প্রসেস তত ---------- হবে।

 গ। থ্রোইংকালে পটের তলদেশে চাপে যেন ---------- সৃষ্টি না হয়।


উত্তর-১  

পটারির দ্রব্যাদিতে সৃষ্ট পাঁচটি ক্রটির নাম নিম্নরূপ -

ক। দ্রব্য শুকানোর সময় সৃষ্ট ক্রেকিং বা ওয়ার্পিং।

খ। তাপীয় শক হতে সৃষ্ট ক্রেক।

গ। ডান্টিং।

ঘ। ব্লিবিং।

ঙ। ব্ল্যাকেইং, ব্লোটিং এবং কার্বন কোরিং

উত্তর-২

যে সকল ক্লে বডিতে ২৫% বা তার অধিক সিলিকা থাকে ঐ সকল বডিতে ডান্টিং হয়ে থাকে।

উত্তর-৩

দ্রব্য আকৃতি প্রদানকালীন সময়ে এর মধ্যে সৃষ্ট এয়ার পকেটকেই ব্লিবিং বলে।

উত্তর-৪

ব্লাকোনিং, ব্লোটিং এবং কার্বন কোরিং ক্রটি গুলো দূর করার উপায় সমূহ নিম্নরূপ-

  * বিস্কুট বা প্রথম ফায়ারিং এ ধীরে ধীরে তাপমাত্রা উঠানো।

  * যদি দ্রব্য জ্বালানী দহনকারী কিলনে পোড়ানো হয় সে ক্ষেত্রে কিলন যেন রিডাকশন এটমোস্ফিয়ারের দিকে যেতে না পারে তা নিশ্চিত করা। দহনের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেন সরবরাহ করা।


উত্তর- সত্য / মিথ্যা

ক। স

খ। মি

গ। স


উত্তর- শূন্যস্থান

ক। পিংইং

খ। দীর্ঘায়িত

গ।  এস- ক্রেক



শিরোনামঃ পটার্স হুইলে দ্রব্য তৈরি করণ।

উদ্দেশ্যঃ পর্টাস হুইলে দ্রব্য তৈরি করতে সমর্থ হবেন। 

কাজের জন্য প্রয়োজনীয় টুলস ও যন্ত্রপাতি- স্পেসিফিকেশন শীটের তালিকা অনুযায়ী।

পদ্ধতি

প্রশিক্ষককে অবহিত করুন যে, আপনি কাজের জন্য প্রস্তুত।

প্রশিক্ষক এখন আপনাকে প্রয়োজনীয় সকল টুলস, যন্ত্রপাতি এবং কাঁচামাল সরবরাহ করবেন।

ওএসএইচ অনুশীলন করে কাজ সম্পন্ন করতে হবে।

টুলস, যন্ত্রপাতি এবং কাঁচামাল ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত আছে কিনা তা পরীক্ষা করতে হবে।

ক্লে বডি প্রস্তুত করে কাজের চাহিদা মোতাবেক উপযোগী করতে হবে।

গুণগতমান অর্জনে উৎপাদিত দ্রব্যের ক্রটি সমূহ চিহ্নিত করে রিপোর্ট করতে হবে।

কাজের নির্দেশনা ও গুণগতমান অনুযায়ী দ্রব্যটি পরীক্ষা করতে হবে। 

বাতিল দ্রব্যগুলো চিহ্নিত ও আলাদা করতে হবে। 

এরপর ফলাফল সংরক্ষণ করতে হবে।

টুলস, যন্ত্রপাতি এবং কার্যক্ষেত্রকে আদর্শমান অনুযায়ী পরিষ্কার রাখতে হবে।

সবশেষে আবর্জনা সঠিকভাবে অপসারণ করতে হবে।


অ্যাসেসমেন্ট পদ্ধতি

কার্যসম্পাদন মানদন্ডের তালিকা প্রদর্শন।


উপরের কাজটি স¤পন্ন করতে নিম্নলিখিত টুলস, যন্ত্রপাতি এবং কাঁচামাল প্রয়োজন হবে- 

পিপিই (ব্যাক্তিগত নিরাপত্তা জনিত সরঞ্জাম) ঃ-

  * সেইফটি বুট

  * হেয়ার নেট

  * মাস্ক

  * এপ্রোন

  * নেইল কাটার


টুলস, যন্ত্রপাতি এবং কাঁচামালঃ- 

  * পটার্স হুইল

  * বাকেট

  * পটার্স সূচ

  * দ্রব্য কাটার তার

  * ফেটলিং ছুরি

  * রিবস ও স্ক্রোপার

  * লুপ, তার এবং রিবন

  * কাঠের মডেলিং টুলস

  * স্পঞ্জ

  * ব্রাশ

  * ক্যালিপার্স

  * চামড়া

  * গ্রগ

  * প্লাস্টিক ক্লে

  * মিহি বালি 

  * আয়রন অক্সাইড

  * প্লাস্টার বেড 

  * সেলফ


বিষয়বস্তু

১। কর্মক্ষেত্রের আদর্শমান অনুযায়ী কর্মক্ষেত্র পরিষ্কার করা।

২। কোম্পানির আইন অনুযায়ী বর্জ্য পদার্থ অপসারণ করা। 


অ্যাসেসমেন্ট ক্রাইটেরিয়া

১। কার্য সম্পাদনের চাহিদা অনুযায়ী নিরাপদ কার্য অনুশীলন করতে পারবেন।

২। কর্মক্ষেত্রের আদর্শ মান অনুযায়ী কর্মক্ষেত্র পরিষ্কার করতে পারবেন।

৩। কোম্পানির আইন অনুযায়ী বর্জ্য পদার্থ অপসারণ করতে পারবেন।


শর্তাবলিঃ 

প্রশিক্ষণার্থীদের অবশ্যই নিচের সরঞ্জামাদি সরবরাহ করতে হবে- 

  * পরিষ্কার করার সরঞ্জাম

  * টুলস ও কাঁচামাল 


শিখন উপকরণ-

  * বই, ম্যানুয়াল 

  * মডিউল বা রেফারেন্স


শিখনফল : কর্মক্ষেত্র পরিষ্কার করণ।

 শিখন কার্যক্রম

 বিশেষ নির্দেশনা

 কর্মক্ষেত্র পরিষ্কার করণ

 ইনফরমেশন শিট ৩.৬-১ পড়ুন।

সেলফ চেক ৩.৬-১ এর উত্তর করুন।

উত্তরপত্র ৩.৬-১ এর সাথে মিলিয়ে নিন।


    কর্মক্ষেত্র পরিষ্কার করণ

 শিখন উদ্দেশ্য

এই ইনফরমেশন শিটটি পড়ার পর আপনি সঠিক নিয়ম অনুসরণ করে কর্মক্ষেত্র পরিষ্কার করতে সক্ষম  হবেন। 


কর্মক্ষেত্র পরিষ্কার করা 

ক। অতিরিক্ত ক্লে বডিকে একত্র করে নির্ধারিত বাকেটে রাখা।

খ। অব্যবহৃত কাঁচামাল নির্দিষ্ট জায়গায় ফেরত পাঠানো।

গ। কর্মক্ষেত্রের মেঝে ও টেবিল ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কার করা।

ঘ। ময়লা জায়গা পানি ব্যবহার করে পরিষ্কার করা।


যন্ত্রপাতি পরিষ্কার ও সংরক্ষণ করা

অপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ও সরঞ্জামাদি থেকে কর্মক্ষেত্রকে পরিষ্কার রাখতে হবে যেন কোন ব্যক্তি আঘাত 

না পায় এবং পড়ে না যায়। কর্মক্ষেত্রের মেঝেতে কোন মাটি বা পিচ্ছিল জাতীয় পদার্থ রাখা যাবে না। 

পিচ্ছিল মেঝে মারাত্নক বিপদজনক। কাজ শেষে কাপড় ব্যবহার করে মেঝে পরিষ্কার রাখতে হবে। 

টুলস ও সরঞ্জামাদি পরিষ্কার করে গুদামজাত করতে হবে। কাজ শেষে বিলম্ব না করে টুলস ও অন্যান্য 

দ্রব্যাদি নির্দিষ্ট স্থানে রাখুন।



নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লিখুন- 

ক। কর্মক্ষেত্র পরিষ্কারের ক্ষেত্রে কি কি কার্যাবলী নিহিত আছে ?

খ। কর্মক্ষেত্র পরিষ্কারের ক্ষেত্রে আপনি কীভাবে দুর্ঘটনা এড়াতে পারবেন ?



উত্তর-১

কর্মক্ষেত্র পরিষ্কারের ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত কার্যাবলী নিহিত আছেঃ

ক। অতিরিক্ত ক্লে বডিকে একত্র করে নির্ধারিত বাকেটে রাখা।

খ। অব্যবহৃত কাঁচামাল নির্দিষ্ট জায়গায় ফেরত পাঠানো।

গ। কর্মক্ষেত্রের মেঝে ও টেবিল ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কার করা।

ঘ। ময়লা জায়গা পানি ব্যবহার করে পরিষ্কার করা।


উত্তর-২ 

কর্মক্ষেত্র পরিষ্কারের ক্ষেত্রে আমি দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য নিচের পদক্ষেপগুলো গ্রহন করবোঃ

 অপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ও সরঞ্জামাদি থেকে কর্মক্ষেত্রকে পরিষ্কার রাখবো যেন কোন ব্যক্তি আঘাত না পায় এবং পড়ে না যায়। কর্মক্ষেত্রের মেঝেতে কোন মাটি বা পিচ্ছিল জাতীয় পদার্থ রাখবো না। পিচ্ছিল মেঝ মারাত্নক  বিপদজনক। কাজ শেষে কাপড় ব্যবহার করে মেঝ পরিষ্কার করবো। কাজ শেষে বিলম্ব না করে টুলস ও  অন্যান্য দ্রব্যাদি নির্দিষ্ট স্থানে রাখবো।


   হুইলে দ্রব্য তৈরির কাজ সম্পন্ন করা

প্রশিক্ষণার্থীর নামঃ ----------------------------------                           তারিখঃ ----------------

কার্যসম্পাদন মানদণ্ড 

    হ্যাঁ

না 

 আমি কি -

 ১। ওএসএইচ চাহিদা অনুযায়ী কর্মক্ষেত্রের মান বজায় রাখতে পেরেছি ?

 

 

 ২। ওএসএইচ চাহিদা অনুযায়ী কার্যসম্পাদন করতে পেরেছি ?

 

 

 ৩। টুলস ও যন্ত্রপাতি ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত আছে কিনা তা পরীক্ষা করতে পেরেছি ?

 

 

 ৪। কর্মক্ষেত্রের চাহিদা অনুযায়ী প্রাথমিক পরীক্ষা সম্পন্ন করতে পেরেছি ?

 

 

 ৫। সঠিক পদ্ধতিতে গুনগতমান বজায় রেখে হুইলে দ্রব্য তৈরির কাজ সম্পন্ন করতে পেরেছি ?

 

 

 ৬। দ্রব্য তৈরি করার পর দ্রব্যের ক্রটিসমূহ ভালোভাবে পরীক্ষা করে চিহ্নিত করতে পেরেছি ?

 

 

 ৭। বাতিল দ্রব্য অপসারণ করে রেকর্ড সংরক্ষণ করেছি ?

 

 

 ৮। কর্মক্ষেত্রের মান অনুসারে কর্মক্ষেত্র ও যন্ত্রপাতি পরিষ্কার করেছি ?

 

 

 ৯। কারখানার নিয়ম নীতি অনুসারে বর্জ্য অপসারণ করতে পেরেছি ?

 

 


পটার্স হুইলে পটারির দ্রব্যাদি তৈরি মডিউলে যোগ্যতা মূল্যায়নের মানদন্ডের তালিকা নিম্নে দেয়া হলো 

 কার্যসম্পাদন মানদন্ড

হ্যাঁ 

না 

 ১। প্রয়োজনীয় উপকরণ ও যন্ত্রপাতি ব্যবহারের সময়, পূর্বে ও পরে প্রয়োজনীয় সকল নিরাপত্তা বিষয়াবলি বা নিয়ম নীতি মানা হয়েছে।

 

 

২। প্রয়োজনীয় উপকরণ ও যন্ত্রপাতি ব্যবহারের সময়, পূর্বে ও পরে অনিরাপদ ও গুরুত্বপূর্ণ

যন্ত্রপাতিসমূহ চিহ্নিত করা এবং নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসারে সে গুলো মেরামত করা হয়েছে।

 

 

 ৩। ব্যক্তিগত নিরাপত্তা পোশাক পরিধান করা হয়েছে।

 

 

 ৪। কারখানার নিয়ম অনুসারে কর্মক্ষেত্র প্রস্তুত করা হয়েছে।

 

 

৫। উৎপাদনকারীর নির্দেশনা এবং কার্যনির্দেশনা অনুসারে টুলস এবং যন্ত্রপাতি নির্বাচন ও প্রস্তুত করা হয়েছে।  

 

 

 ৬। দ্রব্য তৈরির জন্য কাঁচামাল সংগ্রহ, বাছাই ও সুবিন্যস্ত করা হয়েছে।

 

 

 ৭। কারখানায় নিয়ম অনুসারে পটার্স হুইলে পটারির দ্রব্যাদি তৈরি করা হয়েছে।

 

 

 ৮। উৎপাদিত দ্রব্যের বিভিন্ন সমস্যা এবং ক্রটিসমূহ চিহ্নিত করে ক্রটি দূর করার ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে ।

 

 

 ৯। কারখানা কর্তৃক নির্ধারিত গুনগতমান এবং কাজের নির্দেশনা মেনে পটার্স হুইলে পটারির দ্রব্যাদি তৈরি করা হয়েছে।

 

 

 ১০। বাতিল দ্রব্যগুলো অপসারণ এবং রেকর্ড সংরক্ষণ করা হয়েছে।

 

 

 ১১। কর্মক্ষেত্রের ষ্ট্যান্ডার্ড অনুসারে কর্মক্ষেত্র ও যন্ত্রপাতি পরিষ্কার করা হয়েছে।

 

 

 ১২। কারখানার নিয়ম নীতি অনুসারে বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে।

 

 



এখন আমি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে যোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য প্রস্তুত।





স্বাক্ষরঃ ----------------------                                                  তারিখঃ -------------------



https://www.thespruce.com/what-is-throwing-on-potters-wheel-274628     

                                           

Developed by:

Mr. Md. Faisal Alam Patwary, Deputy Manager, RAK Ceramics (BD) Ltd, Dhaka. Mobile: 0177750689, Email: faisal.alam@rakceramics.com

 

Editor by:

Mr. Belayet Hossain

Chief Instructor (Tech)

Bangladesh Institute of Glass & Ceramics, Dhaka.




সূচীপত্র

   বিষয়

যেভাবে সক্ষমতাভিত্তিক এই শিখন উপকরণ ব্যবহার করতে হবে 

ভিডিও ভিত্তিক বিষয়বস্তু

১. পটার্স হুইলের উপর দ্রব্য তৈরি পদ্ধতি  পর্ব ১

২. পটার্স হুইলের উপর দ্রব্য তৈরি পদ্ধতি  পর্ব ২

৩. কোয়েল তৈরি পদ্ধতি

মডিউল বিষয়বস্তুু 

শিখনফল ১ : ব্যক্তিগত নিরাপত্তাজনিত সরঞ্জাম অনুশীলন এবং অনুসরণ করতে পারবেন।

শিখন কার্যক্রম

ইনফরমেশন শিট ৩.১-১

সেলফ চেক ৩.১-১

উত্তর পত্র ৩.১-১

শিখনফল ২: স্বীকৃত পদ্ধতি অনুসারে দ্র্রব্য তৈরির উপযোগী করে ক্লে বডি তৈরি করতে পারবেন।

শিখন কার্যক্রম

ইনফরমেশন শিট ৩.২-১

সেলফ চেক ৩.২-১

উত্তর পত্র ৩.২-১

শিখনফল ৩ : ক্লে কে এজিং করতে পারবেন।

শিখন কার্যক্রম

ইনফরমেশন শিট ৩.৩-১

সেলফ চেক ৩.৩-১

উত্তরপত্র ৩.৩-১

শিখনফল ৪: স্পেসিফিকেশন অনুয়ায়ী পটার্স হুইলের উপর দ্রব্য তৈরি করতে পারবেন।

শিখন কার্যক্রম

ইনফরমেশন শিট ৩.৪-১

সেলফ চেক ৩.৪-১

উত্তরপত্র ৩.৪-১

শিখনফল ৫: পটারির ক্রটি চিহ্নিত করতে এবং দূর করতে পারবেন।

শিখন কার্যক্রম

ইনফরমেশন শিট ৩.৫-১

সেলফ চেক ৩.৫-১

উত্তরপত্র ৩.৫-১

কার্যক্রমপত্র ৩.৫-১

স্পেসিফিকেশন ৩.৫-১

শিখনফল ৬: কাজের স্থান পরিস্কার করতে পারবেন।

শিখন কার্যক্রম

ইনফরমেশন শিট ৩.৬-১

সেলফ চেক ৩.৬-১

উত্তরপত্র ৩.৬-১

কার্যসম্পাদন মানদন্ডের তালিকা

সক্ষমতাসমূহের পুনরালোচনা

রেফারেন্স