ইউজিং মেজারিং টুলস এন্ড ইকুইপমেন্ট
৬ সপ্তাহ

সূচিপত্র

বিষয়

যেভাবে সক্ষমতাভিত্তিক এই শিখন উপকরণ ব্যবহার করতে হবে

মডিউল বিষয়বস্তু

শিখনফল ১ : পরিমাপ করার একক গণনা করণ

শিখন কার্যক্রম

ইনফরমেশন শিট ১.১-১: পরিমাপ করার একক

সেলফ চেক ১.১-১

উত্তর পত্র ১.১-১

শিখনফল ২: পরিমাপ করার পদ্ধতি এবং সেগুলোর প্রয়োগ করণ

শিখন কার্যক্রম

ইনফরমেশন শিট ১.২-১: পরিমাপ করার পদ্ধত

সেলফ চেক ১.২-১

উত্তর পত্র ১.২-১

শিখনফল ৩ : অঙ্কন ও পরিমাপের সাধারণ হিসাব পদ্ধতি অনুসরণ করণ

শিখন কার্যক্রম

ইনফরমেশন শিট ১.৩-১: অঙ্কন ও পরিমাপের সাধারণ হিসাব পদ্ধতি

সেলফ চেক ১.৩-১

উত্তরপত্র ১.৩-১

শিখনফল ৪ : মেজারিং টুলস এবং ইকুইপম্যান্ট সনাক্তকরণ

শিখন কার্যক্রম

ইনফরমেশন শিট ১.৪-১: মেজারিং টুলস এবং ইকুইপম্যান্ট

সেলফ চেক ১.৪-১

উত্তরপত্র ১.৪-১

কার্যক্রমপত্র ১.৪-১

স্পেসিফিকেশন শিট ১.৪-১

কার্যসম্পাদন মানদন্ডের তালিকা

সক্ষমতাসমূহের পুনরালোচনা

রেফারেন্স

সেক্টর

বিষয়

যেভাবে সক্ষমতাভিত্তিক এই শিখন উপকরণ ব্যবহার করতে হবে

মডিউল বিষয়বস্তু

শিখনফল ১ : পরিমাপ করার একক গণনা করণ

শিখন কার্যক্রম

ইনফরমেশন শিট ১.১-১: পরিমাপ করার একক

সেলফ চেক ১.১-১

উত্তর পত্র ১.১-১

শিখনফল ২: পরিমাপ করার পদ্ধতি এবং সেগুলোর প্রয়োগ করণ

শিখন কার্যক্রম

ইনফরমেশন শিট ১.২-১: পরিমাপ করার পদ্ধত

সেলফ চেক ১.২-১

উত্তর পত্র ১.২-১

শিখনফল ৩ : অঙ্কন ও পরিমাপের সাধারণ হিসাব পদ্ধতি অনুসরণ করণ

শিখন কার্যক্রম

ইনফরমেশন শিট ১.৩-১: অঙ্কন ও পরিমাপের সাধারণ হিসাব পদ্ধতি

সেলফ চেক ১.৩-১

উত্তরপত্র ১.৩-১

শিখনফল ৪ : মেজারিং টুলস এবং ইকুইপম্যান্ট সনাক্তকরণ

শিখন কার্যক্রম

ইনফরমেশন শিট ১.৪-১: মেজারিং টুলস এবং ইকুইপম্যান্ট

সেলফ চেক ১.৪-১

উত্তরপত্র ১.৪-১

কার্যক্রমপত্র ১.৪-১

স্পেসিফিকেশন শিট ১.৪-১

কার্যসম্পাদন মানদন্ডের তালিকা

সক্ষমতাসমূহের পুনরালোচনা

রেফারেন্স


সম্পন্ন হয়েছে

এই মডিউলে প্রশিক্ষণ উপকরণ ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সম্পর্কে বলা হয়েছে। এই কার্যক্রমগুলো আপনাকে সম্পন্ন করতে হবে। ইউজ মেজারিং টুলস এন্ড ইকুইপমেন্ট একটি অন্যতম সক্ষমতা। এই সক্ষমতাটি এনটিভিকিউ লেভেল-১ পেশার বিভিন্ন পরিমাপ এর জন্য প্রয়োজন। এই পেশার একজন মিডিয়াম পর্যায়ের দক্ষ কর্মীর জন্য যে জ্ঞান, দক্ষতা ও আচরণ প্রয়োজন তা এই কোর্সে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।
এই মডিউলে বর্ণিত শিখনফল অর্জনের জন্য আপনাকে কত গুলো ধারাবাহিকভাবে শিখন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। এইসব কর্মকান্ড একটি নির্দিষ্ট শ্রেণিকক্ষে বা অন্যত্রও সম্পন্ন করা যেতে পারে। নির্দিষ্ট কর্ম প্রক্রিয়ার সঙ্গে প্রাসঙ্গিক অন্যান্য শিক্ষণীয় বিষয়ও কর্মীদেরকে আয়ত্ব করতে হবে।
শিক্ষা কার্যক্রমের ধারা জানার জন্য মডিউলে বর্ণিত “শিখন কার্যক্রম” অংশটি অনুসরণ করুন। ধারাবাহিকভাবেজানার জন্য সূচিপত্রে ইনফরমেশন শিট, শিখন কার্যক্রম, শিখন ফল এবং উত্তরপত্রে পৃষ্ঠা ন¤¦র ব্যবহার করা হয়েছে। নির্দিষ্ট পাঠের সাথে সঠিক সহায়ক উপাদান সম্পর্কে জানার জন্য “শিখন কার্যক্রম” অংশটি দেখতে হবে। এই শিখন কার্যক্রম অংশ আপনার সক্ষমতা অর্জনের জন্য রোড ম্যাপ হিসেবে কাজ করবে।
ইনফরমেশন শিটটি পড়ুন। এতে কাজ সম্পর্কে এবং সুনির্দিষ্টভাবে কাজ করার সম্যক ধারণা পাওয়া যাবে। ইনফরমেশন শিটটি পড়া শেষ করে‘সেলফ চেক শিট’ এ উল্লিখিত প্রশ্নগুলোর উত্তর প্রদান করুন। শিখন গাইডের ইনফরমেশন শিট অনুসরণ করে‘সেলফ চেক’ করুন। একজন কর্মী কীভাবে কাজের ক্ষেত্রে উন্নতি লাভ করেছে সেটি জানতে ‘সেলফ চেক’ আপনাকে সহযোগিতা করবে। ‘সেলফ চেক’ কতটা সঠিক হয়েছে তা জানার জন্য উত্তরপত্র দেখুন। একজন কর্মী কীভাবে কাজের ক্ষেত্রে উন্নতি লাভ করেছে সেটি জানতে ‘সেলফ চেক শিট’ আপনার সহযোগিতা করবে। ‘সেলফ চেক শিট’ কতটা ভালো করেছেন তা জানতে 'উত্তরপত্র’ দেখুন।
কার্যক্রমপত্রে নির্দেশিত উপায়ে যাবতীয় কর্মসম্পাদন করুন। এখানেই আপনি নতুন সক্ষমতা অর্জনের পথে আপনার নতুন জ্ঞান কাজে লাগাতে পারবেন।
এই মডিউল অনুযায়ী কাজ করার সময় নিরাপত্তা বিষয়টি সম্পর্কে সবসময় সচেতন থাকবেন। কোনো বিষয়ে জানার থাকলে ফ্যাসিলিটেটরকে প্রশ্ন করতে সংকোচ করবেন না।
এই শিখন গাইডে নির্দেশিত সব কাজ শেষ করার পর অর্জিত সক্ষমতা অ্যাসেস করা হবে যে, আপনি পরবর্তী মূল্যায়নের জন্য কতটুকু উপয্ক্তু। প্রয়োজনীয় সব সক্ষমতা অর্জন হয়েছে কিনা তা জানার জন্য মডিউলের শেষে সক্ষমতা মানদন্ড এর একটি চেকলিস্ট দেয়া হয়েছে। এই তথ্যটি কেবলমাত্র আপনার নিজের জন্য। এটি কোনো দাপ্তরিক কাজে ব্যবহারের জন্য নয়।


মডিউলের শিরোনামঃ ইউজিং  মেজারিং  টুলস  এন্ড  ইকুইপমেন্ট 

মডিউলের বর্ণণা

এই মডিউলে মেজারিং টুলস এবং ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করে বিভিন্ন উপায়ে পরিমাপ করার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান, দক্ষতা এবং আচরণ সম্পর্কে বলা হয়েছে। এটি আপনাকে বিভিন্ন উপায়ে পরিমাপ করতে সহায়তা করবে এবং বিভিন্ন প্রকার পরিমাপকটুলস চিহ্নিতকরণে সহায়তা করবে। এছাড়াও এই মডিউলে বিভিন্ন প্রকার পরিমাপেরকৌশল সম্পর্ক আলোচনা করা হয়েছে।

এই মডিউলে আরও অন্তর্ভূক্ত রয়েছে ইনফরমেশন শিট, সেলফ চেক এবং উত্তরপত্র।

সময়কালঃ ২০ ঘন্টা

শিখনফলঃ

এই মডিউলটি শেষ করার পর আপনি যা করতে সমর্থ হবেন তা হলো-

১। ওএইচএস অনুশীলন করতে পারবেন।

২। পরিমাপ করার জন্য ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় বিভিন্ন প্রকার মেজারিং টুলস এবং ইকুইপমেন্ট সনাক্ত করতে পারবেন।

৩। বিভিন্ন প্রকারমেজারিং টুলস এবং ইকুইপমেন্ট সংরক্ষণ করতে পারবেন।

৪। বিভিন্ন প্রকার মেজারিং টুলস এবং ইকুইপমেন্টব্যবহার করেপরিমাপকরতে পারবেন।

৫। বিভিন্ন প্রকার মেজারিং টুলস এবং ইকুইপমেন্টের ত্রæটি চিহ্নিত ও প্রতিকার করতে পারবেন।

৬। পরিমাপ করার জন্যএককএবং হিসাব গণনাকরতে পারবেন।

৭। পরিমাপ করার যন্ত্রপাতি এবং কর্মক্ষেত্র পরিষ্কার করতে পারবেন।

 

অ্যাসেসমেন্ট ক্রাইটেরিয়া

প্রশিক্ষনার্থীকে নিম্মেক্ত কর্মসম্পাদন মানদন্ডের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করতে হবে-

১। কর্মক্ষেত্রে অনুষ্ঠিত কর্মের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম (পিপিই) এবং নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন।

২। কর্মের জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী পরিমাপ যন্ত্রপাতি নির্বাচন করতে পারবেন।

৩। প্রয়োজন অনুযায়ী পরিমাপ যন্ত্র ব্যবহার করে পরিমাপ করতে পারবেন।

৪। কাজের প্রয়োজন অনুযায়ী সহনশীলতার সীমা নির্ধারণ করতে পারবেন।

৫। পরিমাপ সঠিক ভাবে নিতে পারবেন।

৬। কাজের প্রয়োজন অনুযায়ী পরিমাপ করা হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করতে পারবেন।

৭। ফর্ম/অঙ্কন/স্কেল এর মাধ্যমে পরিমাপের রেকর্ড রাখতে পারবেন।

৮। পরিমাপ যন্ত্রপাতির সাধারণ ক্রটি এবং ক্রটির কারণ সমূহ চিহ্নিত করতে পারবেন।

৯। কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে রেকর্ডকৃত পরিমাপ ব্যাখ্যা করতে পারবেন।

১০। মাপের যন্ত্রগুলি নির্মাতার নির্দেশনা অনুযায়ী পরিস্কার এবং সংরক্ষণ করতে পারবেন।


বিষয়বস্তু

১। পরিমাপ করনের ইংলিশ এবং মেট্রিক একক নির্ণয় করা।

২। ব্রিটিশ এবং  মেট্রিক পদ্ধতিতে পরিমাপ গণনা করার নিয়ম।

অ্যাসেসমেন্ট  ক্রাইটেরিয়া

১। পরিমাপ করার ইংলিশ এক এবং মেট্রিক একক নির্ণয় করতে পারবেন।

২। পরিমাপ করার ইংলিশ এবং মেট্রিক পদ্ধতি হিসাব গণনা করতে পারবেন।

শর্তাবলি

প্রশিক্ষণার্থীদের অবশ্যই নিচের সরঞ্জামাদি সরবরাহ করতে হবে-

·  পরিমাপ করার স্কেল

·  পরিমাপ করার টেপ

·  কাগজ, পেন্সিল এবং ইরেজার


শিখনফল  পরিমাপ করার একক গণনা করণ।

শিখন কার্যক্রম

বিশেষ নির্দেশনা

  • পরিমাপ করার একক গণনা করণ।

  • ইনফরমেশন শিট১.১-১ পড়ুন।
  • সেলফ চেক ১.১-১ এর উত্তর করুন।
  • উত্তর পত্র ১.১-১ এর সাথে মিলিয়ে নিন। 


শিখন উদ্দেশ্য

এই ইনফরমেশন শিটটি পড়ার পর আপনি পরিমাপ করার একক গণনা করতে সক্ষম হবেন।

পরিমাপ  এককের ধারনা

পরিমাপের একক একটি আর্দশ সংখ্যা বা মান যার সাহায্যে কোন কিছু তুলনা করলে সবসময় একই মান পাওয়া যায়। যেকোনো গণনায় বা পরিমাপে একক প্রয়োজন। গণনার জন্য একক হচ্ছে স্বাভাবিক সংখ্যা ১। দৈর্ঘ্য পরিমাপের জন্য একটি নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যকে ১ একক ধরা হয়। অনুরূপভাবে, ওজন পরিমাপের জন্য নির্দিষ্ট কোনো ওজনকে একক ধরা হয়, যাকে ওজনের একক বলে। আবার তরল পদার্থের আয়তন পরিমাপের এককও অনুরূপভাবে বের করা যায়। ক্ষেত্রফল পরিমাপের ক্ষেত্রে ১ একক দৈর্ঘ্যরে বাহুবিশিষ্ট একটি ঘনকের ঘনফলকে ১ ঘন একক বলে। সকলক্ষেত্রই এককের মাধ্যমে গণনায় বা পরিমাপে সম্পূর্ণ পরিমাপের ধারণা লাভ করা যায়। কিন্তু পরিমাপের জন্য বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন একক রয়েছে।

বিভিন্ন দেশে পরিমাপের জন্য বিভিন্ন পরিমাপ পদ্ধতি প্রচলিত থাকায় আন্তর্জাতিক ব্যবসাবাণিজ্যে ও আদানপ্রদানে অসুবিধা হয়। তাই ব্যবসাবাণিজ্যে ও আদানপ্রদানের ক্ষেত্রে পরিমাপ করার জন্য আন্তর্জাতিক রীতি তথা মেট্রিক পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। এ পরিমাপের বৈশিষ্ট্য হলো এটা দশগুণোত্তর। দশমিক ভগ্নাংশের দ্বারা এ পদ্ধতিতে পরিমাপ সহজে প্রকাশ করা যায়।

মেট্রিক পদ্ধতি

যে দশমিক পদ্ধতিতে সারা পৃথিবীতে ওজন, দৈর্ঘ্য পরিমাপ করা হয় তাকে মেট্রিক পদ্ধতি বলে। ১ জুলাই ১৯৮২ হতে সরকারিভাবে বংলাদেশে মেট্রিক পদ্ধতি চলু হয়েছে।এখন দৈর্ঘ্য, ক্ষেক্রফল, ওজন ও তরল পদার্থের আয়তন প্রতিটি পরিমাপেই এ পদ্ধতি পুরোপুরি প্রচলিত রয়েছে।

দৈর্ঘ্য পরিমাপের একক মিটার। পৃথিবীর উত্তর মেরু থেকে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের দ্রাঘিমা রেখা বরাবর বিষুবরেখা পর্যন্ত দৈর্ঘ্যরে কোটি ভাগের এক ভাগকে এক মিটার হিসেবে গণ্য করা হয়। পরবর্তীতে প্যারিস মিউজিয়ামে রক্ষিত এক খন্ড ‘প্লাটিনামের রড’-এর দৈর্ঘ্য এক মিটার হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে। এ দৈর্ঘ্যকেই একক হিসেবে ধরে রৈখিক পরিমাপ করা হয়। দৈর্ঘ্যরে পরিমাপ ছোট হলে সেন্টিমিটারে এবং বড় হলে কিলোমিটার প্রকাশ করা হয়। দৈর্ঘ্যরে একক মিটার থেকে মেট্রিক পদ্ধতি নামকরণ করা হয়েছে।

ওজন পরিমাপের একক গ্রাম। এটি মেট্রিক পদ্ধতির একক। কম ওজনের বস্তুকে গ্রামে এবং বেশি ওজনের বস্তুকে কিলোগ্রাম (কে.জি.) এ প্রকাশ করা হয়।

তরল পদার্থের আয়তন পরিমাপের একক লিটার। এটি মেট্রিক পদ্ধতির একক। অল্প আয়তনের তরল পদার্থের পরিমাপে লিটার ও বেশি পরিমাপের জন্য কিলোলিটার ব্যবহার করা হয়।


১। দৈর্ঘ্য পরিমাপের একক মিটার (meter),যাকে স দ্বারা সূচিত করা হয়।

২। ওজন পরিমাপের একক কিলোগ্রাম (kilogram), যাকে কম দ্বারা সূচিত করা হয়।

৩। সময় পরিমাপের একক সেকেন্ড (second), যাকে s দ্বারা সূচিত করা হয়।

৪। তাপমাত্রা পরিমাপের একক কেলভিন (kelvin),যাকে কদ্বারা সূচিত করা হয়।

৫। বিদ্যুৎ প্রবাহ পরিমাপের একক অ্যামপিয়ার (ampere) যাকে অ দ্বারা সূচিত করা হয়।

৬। পদার্থ পরিমাপের একক মৌল (mole) যাকে সড়ষদ্বারা সূচিত করা হয়।

৭। আলোর তীব্রতা পরিমাপের একক ক্যান্ডেলা (candela) যাকে পফ দ্বারা সূচিত করা হয়।

এস আই পদ্ধতিতে কিছু অধিক ব্যবহৃত পরিমাপের একক

দৈর্ঘ্য                                              ওজন

মিলিমিটার (মি.মি. বা mm)         মিলিগ্রাম (মি.গ্রা.বা mg)

সেন্টিমিটার  (সে.মি. বা cm)       গ্রাম (গ্রা.বা g)

মিটার (মি. বা m)                          কিলোগ্রাম (কি.গ্রা.বা কেজি বা kg)

কিলোমিটার (কি.মি. বা km)       মেট্রিকটন  (মে.টন বা t)

পরিমাপের ইংলিশ পদ্ধতি ১৮২৪ সালে ইমপিরিআল পদ্ধতির পরিবর্তে ব্রিটিশ ওয়েটস অ্যান্ড মেজরস অ্যাক্টের দ্বারা আদর্শ নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু ইংলিশ পদ্ধতি ১৮২৬ সালের ১লা জানুয়ারী থেকে প্রথম চালু হয়। এই পদ্ধতি দ্বারা দৈর্ঘ্য, আয়তন, ওজন, এলাকা ইত্যাদি পরিমাপ করা যায়। বর্তমানে এই পদ্ধতি আমেরিকাতেই বেশি প্রচলিত রয়েছে। আমেরিকাতে এই পদ্ধতির নাম ইউনাইটেড ষ্টেইট কাস্টমারী ইউনিট। ইংলিশ পদ্ধতিতে ৪ (চার) প্রকারের পরিমাপের একক রয়েছে।

১। দৈর্ঘ্য পরিমাপের একক ফুট (ঋববঃ), যাকে ভঃ দ্বারা সূচিত করা হয়।

২। ক্ষেত্রফল পরিমাপের একক একর (অপৎব), যাকে ধব দ্বারা সূচিত করা হয়।

৩। আয়তন পরিমাপের একক পাইনট (চরহঃ), যাকে ঢ়ঃ দ্বারা সূচিত করা হয়।

৪। ওজন পরিমাপের একক পাউন্ড (চড়ঁহফ), যাকে ষন দ্বারা সূচিত করা হয়।

ইংশিল পদ্ধতিতে কিছু অধিক ব্যবহৃত পরিমাপের একক

দৈর্ঘ্য                           ওজন

ইঞ্চি (in)                       গ্রেইন (gr)

ফুট  (ft)                        আউন্স (oz)

ইয়ার্ড (yd)                    পাউন্ড (ib)

ফার্লং (fur)      

মাইল (mi)       

ওজন পরিমাপের মেট্রিক এককসমূহ

ওজন পরিমাপের মূল এককঃ গ্রাম

১০ মিলিগ্রাম     = ১ সেন্টিগ্রাম

১০ সেন্টিগ্রাম   = ১ ডেসিগ্রাম

১০ ডেসিগ্রাম    = ১ গ্রাম

১০ গ্রাম            = ১ ডেকাগ্রাম

১০ ডেকাগ্রাম   = ১ হেক্টোগ্রাম

১০ হেক্টোগ্রাম   = ১ কিলোগ্রাম

১০০ কিলোগ্রাম = ১ কুইন্টাল

১ কিলোগ্রাম বা ১ কে.জি = ১০০০ গ্রাম

 

তরল পদার্থের আয়তন পরিমাপের মেট্রিক এককসমূহ

১০ মিলিলিটার  =          ১ সেন্টিলিটার

১০ সেন্টিলিটার =          ১ ডেসিলিটার

১০ ডেসিলিটার =          ১ লিটার

১০ লিটার          =          ১ ডেকালিটার

১০ ডেকালিটার =          ১ হেক্টোলিটার

১০ হেক্টোলিটার =          ১ কিলোলিটার


দৈর্ঘ্য পরিমাপের মেট্রিক এককসমূহ

দৈর্ঘ্য পরিমাপেরমূল একক ঃমিটার

১০ মিলিমিটার = ১ সেন্টিমিটার

১০ সেন্টিমিটার = ১ ডেসিমিটার

১০ ডেসিমিটার = ১ মিটার

১০ মিটার = ১ ডেকামিটার

১০ ডেকামিটার = ১ হেক্টোমিটার

১০ হেক্টোমিটার = ১ কিলোমিটার


দৈর্ঘ্য পরিমাপের মেট্রিক ও ব্রিটিশ এককের সম্পর্ক

মেট্রিক পদ্ধতি                  ব্রিটিশ পদ্ধতি

১০ মিলিমিটার (মি.মি) = ১ সেন্টিমিটার  (সে.মি) ১২ ইঞ্চি = ১ ফুট

১০ সেন্টিমিটার = ১ ডেসিমিটার (ডেসি. মি.) ৩ ফুট = ১ গজ

১০ ডেসিমিটার = ১ মিটার (মি.) ১৭৬০ গজ = ১ মাইল

১০ মিটার = ১ ডেকামিটার (ডেকা. মি) ৬০৮০ ফুট = ১ নটিকেল মাইল

১০ ডেকামিটার = ১ হেক্টোমিটার (হে. মি) ২২০ গজ = ১ ফার্লং

১০ হেক্টোমিটার =১ কিলোমিটার (কি.মি) ৮ ফার্লং = ১ মাইল


দৈর্ঘ্য পরিমাপের মেট্রিক ও ব্রিটিশ পদ্ধতির সম্পর্ক

১ মিটার = ৩৯.৩৭ ইঞ্চি (প্রায়)

১ কি. মি. = ০.৬২ মাইল (প্রায়)

১ ইঞ্চি = ২.৫৪ সে.মি. (প্রায়)

১ গজ = ০.৯১৪৪ মিটার (প্রায়)

১ মাইল = ১.৬১ কিলোমিটার  (প্রায়)


ক্ষেত্রফল পরিমাপের মেট্রিক এককসমূহ

ভূমি পরিমাপের মূল এককঃ বর্গমিটার

১০০ বর্গসেন্টিমিটার = ১ বর্গ ডেসিমিটার

১০০ বর্গ ডেসিমিটার = ১ বর্গ মিটার

১০০ বর্গ মিটার = ১ এয়র  (বর্গ ডেকামিটার)

১০০ এয়র = ১ হেক্টর বা ১ বর্গ হেক্টোমিটার

১০০ বর্গহেক্টোমিটার = ১ বর্গকিলোমিটার


ক্ষেত্রফল পরিমাপের ব্রিটিশ এককসমূহ

১৪৪ বর্গইঞ্চি = ১ বর্গফুট

৯ বর্গফুট = ১ বর্গগজ

৪৮৪০ বর্গগজ = ১ একর 

১০০ শতক  (ডেসিমেল) = ১ একর

১৭৬০ বর্গগজ = ১ মাইল


ক্ষেত্রফল পরিমাপের দেশিয় এককসমূহ

১ বর্গহাত = ১ গন্ডা

২০ গন্ডা = ১ ছটাক

১৬ ছটাক = ১ কাঠা

২০ কাঠা = ১ বিঘা


ক্ষেত্রফল পরিমাপের মেট্রিক ও ব্রিটিশ পদ্ধতির সম্পর্ক

১ বর্গ সেন্টিমিটার = ০.১৬ বর্গ ইঞ্চি (প্রায়)

১ বর্গমিটার = ১০.৭৬ বর্গফুট (প্রায়)

১ হেক্টর = ২.৪৭ একর (প্রায়)

১ বর্গ ইঞ্চি = ৬.৪৫ বর্গ সেন্টিমিটার (প্রায়)

১ বর্গফুট = ৯২৯ বর্গ সেন্টিমিটার (প্রায়)

১ বর্গগজ = ০.৪৮ বর্গ মিটার (প্রায়)

১ বর্গমাইল = ৬৪০ একর (প্রায়)



ক্ষেত্রফল পরিমাপের মেট্রিক, ব্রিটিশ ও দেশিয় এককের সম্পর্ক

১ বর্গ হাত = ৩২৪ বর্গ ইঞ্চি 

১ বর্গগজ বা ৪ গন্ডা = ৯ বর্গফুট = ০.৮৩৬ বর্গমিটার (প্রায়)

১ কাঠা =

= ৭২০ বর্গফুট = ৮০ বর্গগজ

৬৬.৮৯ বর্গমিটার (প্রায়)

১ বিঘা =

= ১৬০০ বর্গগজ

১৩৩৭.৮ বর্গমিটার (প্রায়)

১ শতক =

= ৪৩৫.৬ বর্গফুট (প্রায়)

১০০০ বর্গ কড়ি (১০০ কড়ি = ৬৬ ফুট)

১ বর্গমাইল = ১৯৩৬ বিঘা

১ বর্গ মিটার =

= ৪.৭৮ গন্ডা (প্রায়) 

০.২৩৯ ছটাক (প্রায়)

১ এয়র  = ২৩.৯ ছটাক (প্রায়)


আয়তন পরিমাপের মেট্রিক এককসমূহ

১ ঘন সে.মি. (সি.সি.)  ১ মিলিলিটার

১০০০ ঘনসেন্টিমিটার = ১ ঘন ডেসিমিটার= ১ লিটার

১০০০ ঘন ডেসিমিটার = ১ ঘন মিটার

১ ঘন মিটার = ১ স্টেয়র

১০ ঘনস্টেয়র = ১ ডেকাস্টেয়র

১ ঘনইঞ্চি = ১৬.৩৯ মিলিলিটার (প্রায়)


তরল পদার্থের আয়তন পরিমাপের মেট্রিক এককসমূহ 

তরল পদার্থের আয়তন পরিমাপের একক ঃ লিটার। ১ লিটার বিশুদ্ধ পানির ওজন ১ কিলোগ্রাম।

১০ মিলিলিটার (মি.লি) = ১ সেন্টিলিটার (সে.লি.)

১০ সেন্টিলিটার = ১ ডেসিলিটার ডেসি.লিা.)

১০ ডেসিলিটার = ১ লিটার (লি.)

১০ লিটার = ১ ডেকালিটার  (ডেকা. লি.)

১০ ডেকালিটার = ১ হেক্টোলিটার  (হে. লি.)

১০ হেক্টোলিটার = ১ কিলোলিটার  (কে.লি)


আয়তন পরিমাপের মেট্রিক ও ব্রিটিশ এককের সম্পর্ক

১ স্টেয়র = ৩৫.৩ ঘনফুট (প্রায়)

১ ডেকাস্টেয়র = ১৩.০৮ ঘনগজ (প্রায়)

১ ঘনফুট = ২৮.৬৭ লিটার (প্রায়)

১ ইঞ্চি = ২.৫৪ সেন্টিমিটার (প্রায়)

১ মিটার = ৩৯.৩৭ ইঞ্চি

১০০ এয়র = ১ হেক্টর

১ হেক্টর = ১০০০ বর্গমিটার

১ ঘন মিটার = ১০,০০,০০০ ঘন সিন্টিমিটার

১ বর্গমিটার = ১০.৭৬ বর্গফুট

২.৭৪ একর = ১ হেক্টর

১ লিটার = ১০০০ ঘন সিন্টিমিটার

১ লিটার = ০.২২ গ্যালন (প্রায়)

১ গ্যালন = ৪.৫৫ লিটার (প্রায়)

১ কি. গ্রাম  = ২.২ পা. 

১ কুইন্টাল = ১০০ কিলোগ্রাম

১ মেট্রিক টন = ১০ কুইন্টাল = ১০০০ কি.গ্রাম

১ এয়র = ১ বর্গ ডেকামিটার = ১০০ বর্গমিটার

১ বর্গমিটার = ১০০ বর্গ ডেকামিটার = ১০,০০০ বর্গসে.মি.

১ বর্গফুট = ১৪৪ বর্গইঞ্চি

১ বর্গগজ = ৯ বর্গফুট

১ বর্গচেইন = ৪৮৪ বর্গগজ ( ১চেইন = ২২ গজ)

১ একর = ৪৮৪০ বর্গগজ = ১০ বর্গচেইন

১ বর্গ মাইল = ৬৪০ একর

১ ছটাক = ৫ বর্গগজ

১ কাঠা = ১৬ ছটাক = ৮০ বর্গগজ

১ বিঘা =

= ২০ কাঠা

১৬০০ বর্গগজ

১ একর =

= ৪৮৪০ বর্গগজ

৩ বিঘা ৮ ছটাক

১ বর্গরশি = ১৬০০ বর্গগজ = ১ বিঘা (১ রশি =৪০ গজ)

১০০০ ঘন সেন্টিমিটার পানির ভর = ১ কি .গ্রাম


আমরা জানি, কোনো দশমিক সংখ্যার কোনো অঙ্কের স্থানীয় মান এর অব্যবহিত ডান অঙ্কের স্থানীয় মানের দশ গুণ এবং এর অব্যবহিত বাম অঙ্কের স্থানীয় মানের দশ ভাগের এক ভাগ। মেট্রিক পদ্ধতিতে দৈর্ঘ্য, ওজন বা আয়তন মাপার ক্রমিক এককগুলোর মধ্যেও এরূপ সম্পর্ক বিদ্যমান আছ্ েসুতরাং, মেট্রিক পদ্ধতিতে নিরূপিত কোনো দৈর্ঘ্য, ওজন বা আয়তনের মাপকে দশমিকের সাহায্যে সহজেই যেকোনো এককে প্রকাশ করা যায়। নিচে গ্রিক ও ল্যাটিন ভাষা হতে গৃহীত স্থানীয় মানের একটি ছক দেওয়া হলোঃ

গ্রিক ভাষা থেকে গুণিতকবোধক এবং ল্যাটিন ভাষা থেকে অংশবোধক শব্দ এককের নামের পূর্বে উপসর্গ হিসেবে যুক্ত করা হয়েছে। গ্রিক ভাষার ডেকা অর্থ ১০ গুণ, হেক্টো অর্থ ১০০ গুণ এবং কিলো অর্থ ১০০০ গুণ। ল্যাটিন ভাষায় ডেসি অর্থ দশমাংশ, সেন্টি অর্থ শতাংশ এবং মিলি অর্থ সহস্রাংশ। 

পরিমাপ স্যখ্যার পাতন


ক্ষেত্রফলের গুরুত্বপূর্ণ একক সমূহের পূর্ণ ও সংকেতিক নাম



মেট্রিক এককবলিতে যেকোনো একটি পরিমাপের একাবলি জানা থাকলে অপরগুলো সহজে মনে রাখা যায়। দৈর্ঘ্যরে এককবলি জানা থাকলে ওজন ও তরল পদার্থের আয়তন পরিমাপের এককগুলো শুধু মিটারের জায়গায় ‘গ্রাম’ বা ‘লিটাল’ বসালেই পাওয়া যায়।

মেট্রিক ও ব্রিটিশ পরিমাপের সম্পর্ক সঠিকভাবে নির্ণয় করা সম্ভব নয়। তাই এ সম্পর্ক আসন্নমান হিসেবে কয়েক দশমিক স্থান পর্যন্ত মান নিয়ে প্রকাশ করা হয়। মেট্রিক পদ্ধতিতে কোনা দৈর্ঘ্যকে নি¤œতর থেকে উচ্চতর অথবা উচ্চতর থেকে নি¤œতর এককে পরিবর্তিত করতে হলে, অঙ্কগুলো পাশাপাশি লিখে দশমিক লিখে দশমিক বিন্দুটি প্রয়োজনমতো বামে বা ডানে সরাতে হবে।

ছোট দৈর্ঘ্য পরিমাপের জন্য স্কেল ব্যবহৃত হয়। বড় দৈর্ঘ্য পরিমাপের জন্য ফিতা ব্যবহার করা হয়। ফিতা ৩০ মিটার বা ১০০ ফুট লম্বা হয়ে থাকে।



নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লিখুন -

প্রশ্ন-: পরিমাপের একক বলতে কি বুঝায় লিখুন?

প্রশ্ন-২: মেট্রিক পদ্ধতি বলতে কি বুঝায় লিখুন?

প্রশ্ন-৩: এস আই পদ্ধতিতে পরিমাপ এককের শ্রেণি বিভাগ লিখুন?

প্রশ্ন-৪: ইংলিশ পদ্ধতিতে পরিমাপ এককের শ্রেণি বিভাগ লিখুন?


উত্তর-১

পরিমাপের একক

পরিমাপের একক একটি আর্দশ সংখ্যা বা মান যার সাহায্যে কোন কিছু তুলনা করলে সবসময় একই মান পাওয়া যায়। যেকোনো গণনায় বা পরিমাপে একক প্রয়োজন। গণনার জন্য একক হচ্ছে স্বাভাবিক সংখ্যা ১। দৈর্ঘ্য পরিমাপের জন্য একটি নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যকে ১ একক ধরা হয়। অনুরূপভাবে, ওজন পরিমাপের জন্য নির্দিষ্ট কোনো ওজনকে একক ধরা হয়, যাকে ওজনের একক বলে। আবার তরল পদার্থের আয়তন পরিমাপের এককও অনুরূপভাবে বের করা যায়। ক্ষেত্রফল পরিমাপের ক্ষেত্রে ১ একক দৈর্ঘ্যরে বাহুবিশিষ্ট একটি ঘনকের ঘনফলকে ১ ঘন একক বলে। সকলক্ষেত্রই এককের মাধ্যমে গণনায় বা পরিমাপে সম্পূর্ণ পরিমাপের ধারণা লাভ করা যায়।

উত্তর-২

মেট্রিক পদ্ধতি

যে দশমিক পদ্ধতিতে সারা পৃথিবীতে ওজন, দৈর্ঘ্য পরিমাপ করা হয় তাকে মেট্রিক পদ্ধতি বলে। ১ জুলাই ১৯৮২ হতে সরকারিভাবে বংলাদেশে মেট্রিক পদ্ধতি চলু হয়েছে।এখন দৈর্ঘ্য, ক্ষেক্রফল, ওজন ও তরল পদার্থের আয়তন প্রতিটি পরিমাপেই এ পদ্ধতি পুরোপুরি প্রচলিত রয়েছে।

উত্তর-৩

এসআই পদ্ধতিতে ৭ (সাত) প্রকারের পরিমাপের একক রয়েছে।

১। দৈর্ঘ্য পরিমাপের একক মিটার (meter),যাকে m দ্বারা সূচিত করা হয়।

২। ওজন পরিমাপের একক কিলোগ্রাম (kilogram), যাকে Kg দ্বারা সূচিত করা হয়।

৩। সময় পরিমাপের একক সেকেন্ড (second), যাকে S  দ্বারা সূচিত করা হয়।

৪। তাপমাত্রা পরিমাপের একক কেলভিন (kelvin),যাকে k দ্বারা সূচিত করা হয়।

৫। বিদ্যুৎ প্রবাহ পরিমাপের একক অ্যামপিয়ার (ampere) যাকে A দ্বারা সূচিত করা হয়।

৬। পদার্থ পরিমাপের একক মৌল (Mole) যাকে mole দ্বারা সূচিত করা হয়।

৭। আলোর তীব্রতা পরিমাপের একক ক্যান্ডেলা (candela) যাকে cd দ্বারা সূচিত করা হয়।

 

উত্তর-৪

ইংলিশ পদ্ধতিতে ৪ (চার) প্রকারের পরিমাপের একক রয়েছে।

১। দৈর্ঘ্য পরিমাপের একক ফুট (Feet), যাকে ft দ্বারা সূচিত করা হয়।

২। ক্ষেত্রফল পরিমাপের একক একর (Acre), যাকে ae দ্বারা সূচিত করা হয়।

৩। আয়তন পরিমাপের একক পাইনট (Pint), যাকে pt দ্বারা সূচিত করা হয়।

৪। ওজন পরিমাপের একক পাউন্ড (Pound), যাকে Ib দ্বারা সূচিত করা হয়।


বিষয়বস্ত

১। পরিমাপ পদ্ধতি ও পরিমাপক যন্ত্রসম্পর্কে ধারণা।

২। বিভিন্ন পরিমাপ কাজে ব্যবহৃত পরিমাপক যন্ত্রের প্রয়োগ করার নিয়ম।

অ্যাসেসমেন্ট ক্রাইটেরিয়া

১। পরিমাপপদ্ধতি ও পরিমাপক যন্ত্র সম্পর্কে ধারণা করতে পারবেন।

২। পরিমাপ করতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ পদ্ধতিতে গণনা করতে পারবেন।

শর্তাবলি

প্রশিক্ষণার্থীদের অবশ্যই নিচের সরঞ্জামাদি সরবরাহ করতে হবে-

  • পরিমাপ করার যন্ত্র
  • কাগজ, পেন্সিল এবং ইরেজা্র


শিখনফল  পরিমাপ করার পদ্ধতি এবং সেগুলির প্রয়োগ করণ।

শিখন কার্যক্রম

বিশেষ নির্দেশনা

  • পরিমাপ করার পদ্ধতি এবং সেগুলির প্রয়োগ করণ।

  • ইনফরমেশন শীট১.২-১ পড়ুন।
  • সেলফ চেক ১.২-১ এর উত্তরকরুন।
  • উত্তর পত্র ১.২-১ এর সাথে মিলিয়ে নিন।


পরিমাপ করার পদ্ধতি

শিখন উদ্দেশ্য 

এই ইনফরমেশন শিটটি পড়ার পর আপনি পরিমাপ করার পদ্ধতি নির্ধারণ করতে সক্ষম হবেন।

পরিমাপ পদ্ধতি (Measurement Systems)

কোন কিছুর পরিমাপ বলতে আমরা একটি পরিমাণকে বুঝি, যা কনো আর্দশ পরিমাণের সাথে তুলনা করে পাওয়া যায়। এই ভাবে দুইটি পরিমাণের তুলনামূলক ফলাফল গানিতিক সংখ্যার সাহায্যে প্রকাশ করা যায়। বস্তুত পরিমাপ হলো একটি পদ্ধতি, যা কোন ভৌত ধ্রব সংখ্যাকে (physical parameters) অর্থবহ বা কার্যকরী সংখ্যাতে পরিণত করে। যে পরিমাণ বা অংশ বা অংশবিশেষের সাখে তুলনা করে মাপ বা পরিমাপ নির্ণয় করা হয় তাকে মাপের একক  (unit) বলে। আদর্শ এককের সাথে তুলনা করেই কোন কিছুর পরিমাপ নির্ধারণ করা হয়। 

পরিমাপের পদ্ধতিকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায় ঃ

১। প্রত্যক্ষ পদ্ধতি (Direct Methods) ও 

২। পরোক্ষ পদ্ধতি (Indirect Methods)

১। প্রত্যক্ষ পদ্ধতি ঃ এই পদ্ধতিতে অজানা মানকে (যা পরিমাপ করা হবে) সরাসরি একটি আদর্শ মানের সাথে তুলনা করা হয় এবং ফলাফল সংখ্যা ও এককের সাহায্যে প্রকাশ করা হয়।

২। পরোক্ষ পদ্ধতি ঃ মাপ নির্ণয়ের সকল ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ পদ্ধতির প্রয়োগ সম্ভব হয় না। এই সকল ক্ষেত্রে পরোক্ষ পদ্ধতিই গ্রহণযোগ্য হয়। প্রকৌশলগত বিভিন্ন ধরনের পরিমাপ কাজের জন্য পরোক্ষ পদ্ধতির প্রয়োজন হয়।

বিভিন্ন গঠনগত উপাদনে পরিমাপক যন্ত্র

পরিমাপক যন্ত্র তৈরিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন গঠনগত উপাদানগুলিকে পরিমাপক যন্ত্রের কম্পজিশন বলা হয়। একটি পরিমাপক যন্ত্রের সমগ্র কার্যপ্রণালীকে প্রধান কার্যকরী অংশগুলির সাপেক্ষে বর্ণনা করা হয়। একই শ্রেণিভূক্ত বা একই প্রকার কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রগুলির গঠনে যথাসম্ভব সুনির্দিষ্ট নকশা প্রণয়ন করা হয়, যাতে যন্ত্রটি পরিচালনা এবং রক্ষণাবেক্ষণ সহজ হয়। এ লক্ষ্যে সবার জন্য গ্রহণযোগ্য পরিমাপ পদ্ধতি এবং এর বিশ্লষণের জন্য একটি নিয়মিত সংস্থা অপরিহার্য।

বিভিন্ন গঠনগত উপাদানের পরিমাপক যন্ত্র এবং সেগুলির প্রয়োগ

বিভিন্ন পরিমাপ কাজে ব্যবহৃত পরিমাপক যন্ত্রের নাম নিচে উল্লেখ করা হলো।

তাপমাত্রা পরিমাপক যন্ত্র

১। পারদ থার্মোমিটার

২। এলকোহল থার্মোমিটার

৩। গ্যাস থার্মোমিটার

৪। রেজিস্ট্যান্স থার্মোমিটার

৫। সেমিকন্ডাক্টর থার্মোমিটার

৭। রেডিয়েশন পাইরোমিটার

চাপ পরিমাপক যন্ত্র

১। ম্যাকলিয়ড গেজ

২। বার্ডোন এবং ডায়াফ্রাম গেজ

৩। পিরানী গেজ

৪। থার্মোকাপল গেজ

৫। আয়নাইজেশন গেজ

লেভেল পরিমাপক যন্ত্র

১। সাইট গ্ল্যাস

২। ফ্লোট ব্যবহৃত যন্ত্র

৩। ক্যাবল ও পুলিসহ ফ্লোট

৪। চুম্বকসহ ফ্লোট

৫। এয়ার ট্র্যাপ

৬। ডায়াফ্রাম বক্স

৭। বাবলার পাইপ

৮। প্রেসার গেজ

৯। ম্যানোমিটার

১০। তেজস্ক্রিয় প্রযুক্তিতে গাইগার টিউব

১১। আলট্রাসনিক প্রযুক্তি

প্রবাহ পরিমাপ যন্ত্র

১। অরিফিস প্লেট

২। ভেঞ্চুরিমিটার

৩। রোট্যামিটার

৪। পিটোট টিউব

৫। টারবিন মিটার

৬। ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ফ্লোমিটার

৭। হট ওয়ার এ্যানিমোমিটার

৮। আলট্রাসনিক ফ্লো-ট্রান্সডিউসার

আর্দ্রতা পরিমাপক যন্ত্র

১। রেজিস্টিভ হাইগ্রোমিটর

২। ক্যাপাসিটিভ হাইগ্রোমিটর

৩। মাইক্রোওয়েভ হাইগ্রোমিটর

৪। এ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড হাইগ্রোমিটর

৫। ক্রিস্টাল হাইগ্রোমিটর

 তাপমাত্রার পরিমাপ (Measurement of Temperature)

উষ্ণতা বা তাপমাত্রার পরিমাপ একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাপমাত্রার পরিবর্তন পরিমাপ পদ্ধতিসহ বিভিন্ন ধরনের যান্ত্রিক ব্যবস্থার উপর প্রভাব ফেলে এবং পদার্থের ভৌত ধর্মের (physical properties) পরিবর্তন ঘটায়। উষ্ণতা বা তাপমাত্রাপরিমাপের জন্য যে যন্ত্র ব্যবহার করা হয় তাকে থার্মোমিটার বলে। বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা এবং উন্নতির পাশাপাশি এই তাপমান যন্ত্র বা থার্মোমিটারেরও ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়েছে।

তাপমাত্রা পরিমাপের বিভিন্ন স্কেল (Measurement of Temperature)

কাঁচনলে পারদ ব্যবহারে নির্মিত থার্মোমিটার (পারদ থার্মোমিটার) এখনও জনপ্রিয়, যদিও ইলেকট্রনিক প্রযুক্তি নির্ভর বিভিন্ন ডিভাইস ব্যবহারে নির্মিত থার্মোমিটারের প্রচলনও ইতিমধ্যে ব্যাপকভাবে শুরু হয়েছে।

পারদ-থার্মোমিটারে তাপমাত্রা পরিমাপের জন্য বরফের গলনাঙ্ক এবং পানির স্ফুটনাঙ্ক চিহ্নিত করে দুইটি দাহ কাটা হয়। এই দাগ দুটি যে তাপমাত্রা নির্দেশ করে তাকে স্থিরাঙ্ক (fixed point) বলে। বরফের গলনাঙ্ক দ্বারা যে স্থিরাঙ্ক পাওয়া যায় তাকে নিন্মে-স্থিরাঙ্ক এবং ফুটন্ত পানির তাপমাত্রায় যে স্থিরাঙ্ক পাওয়া যায় তাকে উর্ধ্ব-স্থিরাঙ্ক বলে। থার্মোমিটারের নিন্মে-স্থিরাঙ্ক এবং উর্ধ্ব-স্থিরাঙ্ক মধ্যবর্তী দৈর্ঘ্যকে কতকগুলি সমান অংশে ভাগ করে দাগ কাটা হয়। প্রত্যেক সমান ভাহকে ডিগ্রী বলে। এই ভাবে থার্মোমিটারের একটি স্কেল গণনা করা হয়। তাপমাত্রা পরিমাপের ক্ষেত্রে প্রধানত তিন ধরণের স্কেলের ব্যবহার প্রচলিত আছে।

১। সেন্টিগ্রেড স্কেল (Centigrade Scale)

২। ফারেনহাইট স্কেল (Fahrenheit Scale)

৩। রোমার স্কেল (Reaumar Scale)

সেন্টিগ্রেড স্কেল 

সুইডেনের ওপ্সালা বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতিবির্দ্যার অধ্যাপক এন্ডারস সেলসিয়াস এই স্কেল উদ্ভাবন করেন। এজন্য সেন্টিগ্রেড স্কেলকে ‘‘সেলসিয়াস’’ স্কেলও বলা হয়। এই স্কেল অনুযায়ী নিন্মে-স্থিরাঙ্ক বা হিমাঙ্ককে O সে. (O০ C) এবং উর্ধ্ব-স্থিরাঙ্ক বা স্ফুটনাঙ্ককে ১০০ সে. ধরা হয় এবং দুই স্থিরাঙ্কের মধ্যবর্তী মূল দৈর্ঘ্যকে সমান ১০০ ভাগে ভাগ করা হয়। প্রত্যেক ভাগকে এক ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড বলে।

ফারেনহাইট স্কেল

১৭০৯ খ্রিষ্টাব্দে বিখ্যাত দার্শনিক এবং বিজ্ঞানী ফারেনহাইট এই স্কেলের উদ্ভাবন করেন। তিনি নিন্মে-স্থিরাঙ্ক বা হিমাঙ্ককে ৩২ F এবং উর্ধ্ব-স্থিরাঙ্ক বা স্ফুটনাঙ্ককে ২১২০ F হিসেবে ধরে এর মধ্যবর্তী মূল দূরত্বকে ১৮০ ভাগে ভাগ করেন। প্রতি ভাগকে  ১  ফারেনহাইট (১০ F) বলা হয়। বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারিং কাজে এবং ডাক্তারী থার্মোমিটারে এই স্কেল ব্যবহার করা হয়।

রোমার স্কেল 

ফরাসী দার্শনিক রোমার হিমাঙ্ককে রোমার O (OR) এবং স্ফুটনাঙ্ককে ৮০০রোমার হিসেবে ধরে মধ্যবর্তী মূল দূরত্বকে ৮০ ভাগে ভাগ করেন। প্রতিটি ভাগকে বলা হয় ১R। জার্মানী এবং রাশিয়াতে তাপমাত্রা পরিমাপে এই স্কেলের প্রচলন আছে।

 

চিত্র ঃ তাপমাত্রার তিন ধরনের স্কেল

তাপমাত্রার পরম স্কেল (Absolute Scale of Temperature)

হিমাঙ্ক এবং স্ফুটনাঙ্ক এই দুটি স্থিরাঙ্কের মাধ্যমে তাপমাত্রার স্কেল গঠনের ক্ষেত্রে অনেক সময় অসুবিধার সৃষ্টি হয়। বরফ এবং বাষ্প-সম্পৃক্ত পানি সাম্যবস্থায় আসতে বাধা পায়, আবার বরফ গলতে শুরু করলেও চারিপার্শ্বের বিশুদ্ধ পানি জমে বরফ হওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়। পানির ত্রৈধ বিন্দ (triple point of water) অর্থাৎ একটি মাত্র স্থিরাঙ্কের উপর ভিত্তি করেই তাপমাত্রার পরম স্কেল নির্ধারণ করা হয়। যে নির্দিষ্ট তাপমাত্রা ও চাপে পানি তিন অবস্থাতে অর্থাৎ বরফ, পানি এবং জলীয় বাষ্পরূপে সহ অবস্থান করে তাকে ত্রৈধ বিন্দু বলে। পানির ত্রৈধ বিন্দুর তাপমাত্রা ২৭৩.১৬ কেলভিন বা সংক্ষেপে লেখা যায় ২৭৩.১৬ K। এই কেলভিনকেই তাপমাত্রার পরম স্কেল বলে। এই স্কেল অনুযায়ী বরফের গলনাঙ্ক ২৭৩K এবং পানির স্ফুটানাঙ্ক ৩৭৩K ।  আরো একটি পরম স্কেল রয়েছে যাকে রেনকিন বলে।

এক স্কেল হতে অন্য স্কেলে তাপমাত্রার রূপান্তর (Convert Temperature from one scale to another scale)

থার্মোমিটারের হিমাঙ্ক এবং স্ফুটনাঙ্ক অর্থাৎ দুই স্থিরাঙ্কের মধ্যবর্তী মৌলিক দূরত্বকে সেন্টিগ্রেড স্কেলে সমান ১০০ ভাগে, ফারেনহাইট স্কেলে সমান ১৮০ ভাগে এবং রোমার স্কেলে সমান ৮০ ভাগে ভাগ করা হয়। তিনটি স্কেল তুলনা করলে এদের মধ্যে পারস্পারিক সম্পর্ক স্থাপন করা যায়। স্কেলগুলির মধ্যে সম্পর্ককে নিন্ম রূপে প্রকাশ করা যায়।


এখানে সেন্টিগ্রেড, ফারেনহাইট এবং রোমার স্কেলকে যথাক্রমে C, F এবং R দ্বারা সূচিত করা হয়েছে। 

তিন স্কেলের তুলনামূলক ছক নিন্মে দেওয়া হলো

স্কেলের নাম

স্কেল সূচক

নিন্মে স্থিরাঙ্ক বা হিমাঙ্ক

উর্ধ্ব স্থিরাঙ্ক বা স্ফুটনাঙ্ক

দুই স্থিরাঙ্কের মধ্যবর্তী ভাগের সংখ্যা

সেন্টিগ্রেড

C

0

১০০0

১০০

ফারেনহাইট

F

৩২0

২১২0

১৮০

রোমার

R

0

৮০0

৮০


সেন্টিগ্রেড স্কেলের সাথে কেলভিনের সম্পর্ক

বরফের গলনাঙ্ক সেন্টিগ্রেড স্কেলের O0 সেন্টিগ্রেড এবং কেলভিনে ২৭৩0কেলভিন (K), আবার পানির স্ফুটনাঙ্ক   ১০০0C যা কেলভিনে ৩৭৩0K। কোন তাপমাত্রা সেন্টিগ্রেড স্কেলে যত হবে কেলভিনে তার চেয়ে ২৭৩ বেশি হবে। 

অর্থাৎ 00 C = ২৭৩ K

পাইরোমিটার (Pyrometer)

‘‘পাইরো’’ হলো একটি গ্রীক শব্দ এবং এর অর্থ হচ্ছে আগুন। অত্যন্ত উচ্চ তাপমাত্রা পরিমাপের জন্য ব্যবহৃত যন্ত্রকে পাইরোমিটার বলা হয়। পাইরোমিটার দ্বারা এমন উচ্চ তাপমাত্রা পরিমাপ করা হয় যা সাধারণ থার্মোমিটার দ্বারা সম্ভব হয় না। কোন তাপ উৎস অথবা অতি উত্তপ্ত বস্তু থেকে বিকিরিত তাপ-শক্তির পরিমাপের উপর ভিত্তি করেই তাপমাত্রার পরিমাপ পাওয়া যায়। সাধারণত ২ ধরণের পাইরোমিটার রয়েছে। 

১। অপটিক্যাল পাইরোমিটার (Optical Pyrometer)

২। মোট বিকিরণ পাইরোমিটার (Total Radiation Pyrometer)

আলোকীয় পাইরোমিটার বা অপটিক্যাল পাইরোমিটার (Optical Pyrometer)

আলেঅকীয় পাইরোমিটার বা অপটিক্যাল পাইরোমিটারের ক্ষেত্রে অতি উচ্চ তাপে উত্তপ্ত বস্তু থেকে বিকিরিত আলোক শক্তির উজ্জ্বলতার পরিমাপের সাপেক্ষে তাপমাত্রার পরিমাপ পাওয়া যায়। এই নীতির উপর ভিত্তি করেই অপটিক্যাল পাইরোমিটার কাজ করে। বিকিরণের তরঙ্গদৈর্ঘ্য গ্রহণযোগ্য অবস্থায় সুনিয়ন্ত্রিতভাবে একটি কালার ফিল্টারের সাহায্যে গৃহীত হয় এবং একটি আদর্শ বাতির সাপেক্ষে উজ্জলতা পরিমাপ করা হয়।

আলোকীয় বা অপটিক্যাল পাইরোমিটার ২(দুই) প্রকার-

১। অদৃশ্যমান ফিলামেন্ট আলোকীয় পাইরোমিটার (Disappearing Filament Optical Pyrometer)

২। সমবর্তন আলোকীয় পাইরোমিটার (Polarising Optical Pyrometer)

এখানে অদৃশ্যমান ফিলামেন্ট অপটিক্যাল পাইরোমিটারের কার্যনীতি আলোচনা করা হলো।

অদৃশ্যমান ফিলামেন্ট অপটিক্যাল পাইরোমিটার

 

চিত্রঃ অদৃশ্যমান ফিলামেন্ট জাতীয় অপটিক্যাল পাইরোমিটার।

চিত্রে একটি বহুল প্রচলিত অদৃশ্যমান ফিলামেন্ট অপটিক্যাল পাইরোমিটারের গঠন দেখানো হয়েছে। কোন অতি উত্তপ্ত উৎস বা বস্তু থেকে বিকিরিত তাপ অবজেকটিভ লেন্সের মাধ্যমে ঘণীভূত হয়ে অ্যাবস্যরপশন স্ক্রীনের উপর পড়ে। বিকিরিত শক্তির উজ্জ্বলতার সাথে পাইরোমিটারের ফিলামেন্টারি ল্যাম্পের উজ্জ্বলতার তলিনা করে তাপমাত্র নির্ণয় করা যায়।

 

চিত্রঃ অদৃশ্যমান ফিলামেন্টের অবস্থা ক) অতি উজ্জল ক) কালো অবস্থা গ) সমজ্জ্বল

তাপ উৎস থেকে প্রাপ্ত ইমেজ উজ্জ্বলতা ফিলামেন্টের উজ্জ্বলতার সমান হলে ফিলামেন্টের অদৃশ্য অবস্থা সৃষ্টি হবে চিত্র (C)।ফিলামেন্টের তাপমাত্রা উৎসের পরিমাপকৃত তাপমাত্রার চেয়ে বেশি হলে ফিলামেন্ট বেশি উজ্জল দেখাবে চিত্র (a) এবং ফিলামেন্টের তাপমাত্রা উৎসের চেয়ে কম হলে ফিলামেন্ট কালো দেখাবে চিত্র (b)।

অপটিক্যাল পাইরোমিটার কারখানার অগ্নিকুন্ডু, গলিত ধাতু এবং অন্যান্য অতি উত্তপ্ত পদার্থের তাপমাত্রার সঠিক পরিমাপের জন্য ব্যবহার করা হয়।

 

মোট বিকিরণ পাইরোমিটার (Total Radiation Pyrometer)

প্রকৃতপক্ষে মোট বিকরণ পাইরোমিটার উত্তপ্ত বস্তুর নির্দিষ্ট ক্ষেত্র থেকে বিকিরণ গ্রহণ করে একটি সুবেদী টেম্পারেচার ট্রান্সডিউসারে নেওয়া হয়। টেম্পারেচার ট্রান্সডিউসারে হিসেবে সাধারণত থার্মোকাপল ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এখানে মোট বিকিরণ বা টোটাল রেডিয়েশন শব্দটা ব্যবহার হয়েছে কারণ দৃশ্যমান এবং ইনফ্রা-রেড দুই ধরনের বিকিরণের জন্যই এই যন্ত্র কাজ করে। এজন্য এই রেডিয়েশন পাইরোমিটারকে মোট বিকিরণ বা টোটাল রেডিয়েশন পাইরোমিটার বলা হয়। মোট বিকিরণ পাইরোমিটার ১২০০ সে. থেকে ৩৫০০ সে. সীমার মধ্যে তাপমাত্রা পরিমাপের জন্য সাধারণভাবে ব্যবহৃত হয়।  ৬০০০0 সে. এর নীচের তাপমাত্রা এই দ্বারা পরিমাপ করা সম্ভব হয় না।

 

চিত্রঃ দর্পণ জাতীয় বিকিরণ গ্রাহকসম্পন্ন বিকরণ পাইরোমিটার।

এই জাতীয় রেডিয়েশন পাইরোমিটারে একটি বিকিরণ গ্রাহক অংশ (radiation-receiving element) এবং সরাসরি তাপমাত্রা পরিমাপের জন্য একটি পরিমাপক ডিভাইস থাকে যা তাপমাত্রা নির্দেশ করে।  দর্পণ জাতীয় (mirror type) রেডিয়েশন পাইরোমিটারের গঠন দেখানো হয়েছে। এখানে ডায়াফ্রাম অংশটি একটি দর্পণ যার মাধ্যমে বিকিরিত শক্তিকে সেনসিং ট্রান্সডিউসারে ফেলা হয়। 

ইনফ্রা-রেডবিকিরণের জন্য বিভিন্ন ধরনের ফটো-ইলেকট্রিক ট্রান্সডিউসারব্যবহার করা হয় যা ইনফ্রা-রেড অঞ্চলের তরঙ্গদৈর্ঘ্যরে জন্য কাজ করে। এক্ষেত্রে সচরাচর ফটোভল্টেইকসেলব্যবহার হয়।

থার্মোকাপল (Thermocouple)

থার্মোকাপল একটি টেম্পারেচার ট্রান্সডিউসার। থার্মোকাপলের কার্যকারিতায় তাপমাত্রার পরিমাপ নির্ভর করে থার্মো-ইলেকট্রিক ক্রিয়া seebackইফেক্টর উপর, যা জার্মানী পদার্থবিদ থমাস সিবেক (ThomasSeebeck) আবিষ্কার করেন।

গঠন ও কার্যপ্রণালী (Construction and working principle)

থার্মোকাপলের গঠনে দুইটা অসদৃশ (ফরংংরসরষধৎ) ধাতব তার এক প্রান্তে সংযুক্ত করা হয়। নিন্মের চিত্রে a বিন্দুতে এই সংযুক্ত অবস্থা দেখানো হয়েছে। এই a প্রান্তকে হট বা সেনসিং (hot or sensing) প্রান্ত বলা হয়। অন্য প্রান্তকে কোল্ড বা রেফারেন্স (cold or reference) প্রান্ত বলা হয়, কারণ এই প্রান্ত নিন্মে স্থির তাপমাত্রাতে থাকে। অ প্রান্ত উত্তপ্ত হলে mv মানের একটি emf এই প্রান্ত এবং ঠান্ডা প্রান্তদ্বয়েরই এবং C এর মধ্যে তৈরি হয়। এই emf নির্ভর করে দুইটি বিষয়ের উপর।

  • গরম এবং ঠান্ডা জাংশনে তাপমাত্রার পার্থক্যের উপর।
  • ব্যবহৃত ধাতক তারের ধরনের উপর।

ঠান্ডা প্রান্ত দুইটি স্থির তাপমাত্রাতে থাকে (সাধারণভাবে কক্ষ তাপমাত্রাতে) যে বস্তুর তাপমাত্রা পরিমাপ করা হবে সেই বস্তুতে গরম জাংশনের  অ প্রান্ত স্পর্শে করা হলে সা এর আউটপুট নির্দেশিত হয়। এই ক্ষেত্রে একটি মিলিভোল্টমিটার সরাসরি তাপমাত্রার সাথে নির্দিষ্ট পরিমাপেরর ক্রমাঙ্গ স্থিতিকরণ বা কালিব্রেশন করে রাখা হয়। 

 

চিত্রঃ থার্মোকাপলের গঠন।

বেশি সীমার তাপমাত্রা পরিমাপে জন্য কয়েক ধরনের ধাতব তার থার্মোকাপল তৈরিতে ব্যবহার করা হয়, যা-২৭০০ সে. থেকে + ২৭০০০ সে. পর্যন্ত তাপমাত্রা পরিমাপ করে। শিল্প-প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে তাপমাত্রা পরিমাপের জন্য আদর্শগত ভাবে দুইটি ধাতব তারের যে সমন্বয় ব্যবহার করা হয়।

থার্মোকাপল ব্যবহারের সাবধারতা (The Precautions of using Thermocouples)

থার্মোকাপলের সাহায্যে তাপমাত্রা পরিমাপের ক্ষেত্রে নিন্ম লিখিত বিষয়গুলির দিকে লক্ষ্য রাখার দরকার।

১। যে অবস্থানের বা যার তাপমাত্রা পরিমাপ করা হবে তার অবস্থা অনুযায়ী অর্থাৎ তাপমাত্রা সীমা অনুযায়ী থার্মোকাপলের ধরণ নির্বাচন করা।

২। যদিও থার্মোকাপল দ্বারা দূর থেকেই উত্তপ্ত অবস্থানের তাপমাত্রা পরিমাপ করা যায় তবুও সেন্সিং প্রান্তটি উত্তপ্ত অবস্থানের মধ্যে উপযুক্ত পরিমাপে প্রবেশ করতে হবে অথবা গরম বস্তুর যথাযথ সংস্পর্শে আনতে হবে।

৩। থার্মোকাপলের সেন্সিং প্রান্তটি আড়াআড়িভাবে উত্তপ্ত অবস্থানে বা কোন বস্তুর সংস্পর্শে না এসে খাড়াভাবে ব্যবহার করতে হবে।

৪। সেন্সিং প্রান্তটি যাতে সহজে তাপে সংবেদনশীল হয় সেজন্য প্রান্তটিতে যাতে কোন প্রলেপ বা আবরণ পড়ে বাধা সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখা এবং সাবধানে পরিষ্কার রাখা।

চাপের পরিমাপ (Measurement of Pressure)

প্রতি একক ক্ষেত্রফলের উপর প্রযুক্ত বলকে চাপ বলে। বিভিন্ন ধরনের শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং ল্যাবরেটারীসহ গবেষণা কাজের জন্য অন্যান্য পরিমাপের পাশাপাশি চাপের পরিমাপও অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। চাপ বা প্রেসার পরিমাপের কাজেও বিভিন্ন ধরনের যন্ত্র ব্যবহার হয়ে থাকে।

শিল্প ক্ষেত্রে সচরাচর চাপ পরিমাপের জন্য পরিমাপক গেজ (gauge)অথবা রেকর্ডার ব্যবহার করা হয়। এই ইন্সট্রুমেন্টগুলির কার্যপ্রণালী মেকানিক্যাল, ইলেকট্রো-মেকানিক্যাল অথবা ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে পরিচালিত হয়। প্রযুক্ত বল বা চাপের সাহায্যে স্থিতিস্থাপক পদার্থের সরণ অথবা অংশ বিশেষের সরণ সৃষ্টির মাধ্যমে বল বা চাপের পরিমাপ পাওয়া যায়, যা একটি প্রাইমারী ট্রান্সডিউসার হিসেবে কাজ কারে। এই সরণ প্রক্রিয়া থেকে যে যান্ত্রিক ব্যবস্থার মাধ্যমে চাপের পরিমাপ পাওয়া যায় তাকে সেকেন্ডারি ট্রান্সডিউসার বলা হয়।

বায়ু চাপ, গেজ চাপ এবং পরম চাপ

বায়ুর চাপ (Atmospheric Pressure)

ভূ-পৃষ্ঠ থেকে অনেক উর্ধ্ব পর্যন্ত বায়ুমন্ডল বিস্তৃত। বিশাল এই বায়ুমন্ডলে কতকগুলি স্তর একের পর এক সাজানো রয়েছে। প্রতিটি স্তর তার উপরের স্থরের ভর বহন করছে। এই ভরকেই বলা হয় বায়ুচাপ। একক প্রস্থচ্ছেদ বিশিষ্ট কোন স্থানের উপর রায়ুস্তরগুলি বা বায়ুস্তম্ভের যে চাপ পরিরক্ষিত হয় তাকে বায়ুচাপ বলে। ভূ-পৃষ্ঠে বাযু মন্ডলের চাপ সবচেয়ে বেশি। ভূ-পৃষ্ঠ থেকে যতই উপরে উঠা যাবে বাযুমন্ডলের চাপ ততই কমতে থাকবে। পৃথিবী পৃষ্ঠে প্রতি বর্গ ইঞ্চিতে বাযুমন্ডলের এই চাপ প্রায় ১৫ পাউন্ড।


গেজ চাপ (Gauge Pressure) 

একটি নির্দিষ্ট মানের চাপকে আর্দশ বাযুমন্ডলের চাপ হিসেবে ধরে অন্যান্য চাপের সাথে তুলনা করা যায়। ৭৬০ মিলিমিটার বা ৭৬ সেন্টিমিটার উচ্চতাসম্পন্ন পারদস্তম্ভের চাপকে আর্দশ চাপ বলা হয়। এই আর্দশ চাপের বেশি অথবা কম যে চাপ প্রেসার গেজ দ্বারা পরিমাপ করা হয় তাকে গেজ প্রেসার বা গেজ চাপ বলে। গেজ চাপ পরিমাপের ক্ষেত্রে বায়ুমন্ডলের চাপকে শূণ্য ধরা হয় এবং আর্দশ চাপের চেয়ে কম অথবা বেশি চাপের পরিমাপ পাওয়া যায়। 


পরম গেজ (Absolute Pressure)

পরম চাপ বা অ্যাবস্যলুট প্রেসার বলতে আর্দশ চাপ এবং গেজ চাপের যোগফলকে বুঝায়। পরম চাপকে নি¤œরূপে লেখা যায়ঃ

পরম চাপ = আর্দশ বায়ুর চাপ + গেজ চাপ। গেজ চাপ পজিটিভ অথবা নেগেটিভ হতে পারে। আর্দশ বায়ুচাপের বেশি হলে তাকে পজিটিভ গেজ চাপ এবং কম হলে নেভেটিভ গেজ চাপ বলে (ভ্যাকুয়াম সিস্টেমের চাপের ক্ষেত্রে)।


পরিমাপ সীমাসহ বিভিন্ন চাপ পরিমাপের যন্ত্রাদি (Different pressure Measuring Instrument with their Rangs of Operation)

পরিমাপ সীমাসহ কিছু চাপ পরিমাপের যন্ত্রাদির একটি তালিকা নিচে দেওয়া হলোঃ

চাপ পরিমাপক যন্ত্রের নাম

চাপ পরিমাপের সীমা মি.মি. মারকারী

ম্যাকলিয়ড গেজ (Mcleod Gauge)

১০-১ থেকে ১০-২

বার্ডোন টিউব এবং ডায়াফ্রাম গেজ  (Bourdon tube and Diaphragm Gauge)

১০-৪ পর্যন্ত

পিরানী গেজ (PiraniGauge)

১০-১ থেকে ১০-৩

থার্মোকাপল গেজ (Thermocouples Gauge )

১০-৩ পর্যন্ত

আয়নাইজেশন গেজ(IonizationGauge)

১০-৩ থেকে ১০-৮


সাধারণত ব্যবহৃত ম্যানোমেট্রিক তরল পদার্থ (Commonly used Monomeric Liquid)

নিম্ন লিখিত তরল পদার্থগুলি সাধারণভাবে ম্যানোমিটারে ব্যবহার হয়ঃ

১। পারদ (Hg)

২। টলুইন

৩। কার্বন টেট্রো-ক্লোরাইড

৪। পানি

৫। কেরোসিন

৬। ইথাইল এলকোহল

ভ্যাকুয়াম গেজের বৈশিষ্ট্য (The Nature of Vacuum Gauge)

যে ডিভাইস ভ্যাকুয়াম সিস্টেমের চাপ পরিমাপ করে তাকে ভ্যাকুয়াম গেজ বলে। কোন কোন ক্ষেত্রে একে প্রেসার গেজও বলা হয়। সাধারণভাবে গেজগুলি চাপের একক অথবা সস ঐম তে ক্যালিব্রেশন করা থাকে। বাণিজ্যিকভাবে তৈরি বিভিন্ন ধরনের প্রেসার গেজ বায়ুমন্ডলের চাপের নিচে ১০-১২সস ঐম  পর্যন্ত চাপ পরিমাপ করতে পারে। কার্যপ্রণালী অনুযায়ী ভ্যাকুয়াম গেজগুলিকে নি¤œলিখিত শ্রেণিতে ভাগ করা যায়ঃ

১। হাইড্রোস্ট্যাটিক গেজ (Hydrostatic gagu) ঃ এই ধরনের গেজের কার্যপ্রণালী গ্যাসের প্রকৃত চাপের উপর নির্ভরশীল। মারকারী এবং অয়েল ম্যানোমিটার, ম্যাকরিয়ড গেজ, বার্ডোন গেজ এবং ডায়াফ্রাম গেজ এই শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত।

২। থার্মাল কন্ডাকটিভিটি গেজ (Thermal Conductivity Gauge) ঃ এই জাতীয় গেজের কার্যকারিতা চাপের সাথে গ্যাসের মধ্যে দিয়ে তাপ পরিবাহিতার পরিবর্তনের উপর নির্ভর করে। পিরানী এবং থার্মোকাপল এই ধরনের গেজ।

৩। ভিস্কোসিট গেজ (Viscosity Gauge) ঃ এই ধরনের গেজের কার্যনীতি চাপের সাথে গ্যাসের সান্দ্রতা বা ভিস্কোসিটির পরিবর্তনের উপর নির্ভরশীল। ল্যংমর(Langmuir) ভিস্কোসিটি গেজ এই জাতীয় গেজ।

৪। রেডিওমিটার গেজ (Radiometer Gauge) ঃ এই শ্রেনির গেজের কার্যকারিতা ধীর গতির মৌলের চেয়ে দ্রæত গতির মৌল দ্বারা সৃষ্ট বলের উপর নির্ভর করে। এই মৌলের গতি আবার তাপমাত্রার সাথে সরাসরি সমানুপাতিক। উদাহরণ স্বরূপ-Knudsen gague  ।

৫। আয়নাইজেশন গেজ (IonizationGauge) ঃ এই ধরনের গেজের কার্যকারিতা গ্যাসের আয়নায়ন থেকে উদ্ভুত বিদ্যুতের পরিমাপের উপর নির্ভরশীল। উদাহরণ স্বরূপ নি¤œলিখিত গেজগুলি উল্লেখ করা যায়-

(ক) থার্ম-আয়নিক আয়নাইজেশন গেজ

(খ) ক্লোল্ড ক্যাথোড গেজ

(গ) তেজস্ক্রিয় উৎস ব্যবহৃত গেজ যেমন, আলফাট্রন (Alphatron)

৬। ডিস্চার্জ টিউব (Discharge Tube) ঃ এর কার্যপ্রণালী কিছু ভৌত বৈশিষ্ট্যের (অবস্থা অথবা আকৃতি) গ্যাসের চার্জমুক্ত হওয়ার উপর নির্ভর করে। 

আর্দ্রতা পরিমাপ (Measurement of Humidity)

আর্দ্রতা হচ্ছে কোন স্থানের বাতাস বা গ্যাসে জলীয় বাষ্পের একটি পরিমাপ। আর্দ্রতার পরিমাণকে সচরাচর আপেক্ষিক আর্দ্রতা, পরম আর্দ্রতা অথবা শিশিরাংক হিসেবে পরিমাপ করা হয়ে থাকে। আর্দ্রতা প্রাকৃতিক পরিবেশ, জীবজগৎ, এমনকি মানুষের মন মেজাজের উপরও প্রভাব ফেলে। এজন্য অনেক ক্ষেত্রেই আর্দ্রতা পরিমাপের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হয়। ভূ-পৃষ্ঠে ভিজা মাটি, খালবিল, নদীনালা, সমূদ্র প্রর্ভতি হতে প্রতিনিয়ত প্রচুর পানি বাষ্পের পরিণত হয়ে বায়ুমন্ডলে মিশে যাচ্ছে। জলীয় বাষ্পের পরিমাণ সকল স্থানে এক থাকে না। পানির উৎসের অবস্থান এবং ভৌগলিক কারণে আর্দ্রতার পরিবর্তন ঘটে। বিজ্ঞানের যে শাখায় কোন নির্দিষ্ট আয়তনের বায়ুমন্ডলে আর্দ্রতা অর্থাৎ জলীয় বাষ্পের পরিমাণ নির্ণয় সম্পর্কে আলোচনা হরা হয় তাকে আর্দ্রতামিতি (ঐুমৎড়সবঃৎু)বলে। 

আপেক্ষিক আর্দ্রতা ও পরম আর্দ্রতা (Relative Humidity and Absolute Humidity) 

 আপেক্ষিক আর্দ্রতা

একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় একটি নির্দিষ্ট আয়তণের বায়ুমন্ডলের যে পরিমাণ জলীয় বাষ্প রয়েছে এবং ঐ একই তাপমাত্রায় একই আয়তনের বায়ুকে সম্পৃক্ত করতে যে পরিমাণ জলীয় বাষ্পের প্রয়োজন হবে তার অনুপাতকে আপেক্ষিক আর্দ্রতা বলা হয়। অর্থাৎ আপেক্ষিক আর্দ্রতা, 


 আপেক্ষিক আর্দ্রতাকে শতকরা হিসাবে পরিমাপ করা হয়। যেমন-আপেক্ষিক আর্দ্রতা শতকরা ৮৫ বা ৮৫% বলতে আমরা বুঝি, বাতাস সর্বোচ্চ যে জলীয় বাষ্প ধারণ করতে পারতো অর্থাৎ বাতাস সম্পৃক্ত হতে যে পরিমাণ জলীয় বাষ্পের প্রয়োজন তার শতকরা ৮৫ ভাগ জলীয় বাষ্প রয়েছে। 

পরম আর্দ্রতা 

একক আয়তনের বায়ুতে যে পরিমাণ জলীয় বাষ্প বিদ্যমান থাকে তাকে পরম আর্দ্রতা বলে। প্রতি ঘন মিটার বাতাসে কত গ্রাম জলীয় বাষ্প আছে, সেই পরিমাণ দ্বারা পরম আর্দ্রতা প্রকাশ করা হয়। বাতাসে বিদ্যমান জলীয় বাষ্প দ্বারা বাতাস সম্পৃক্ত না হওয়া পর্যন্ত আর্দ্র বাল্বের কাপড় থেকে পানি বাষ্পায়ীত হতে থাকবে। এজন্য আর্দ্র বাল্বের তাপমাত্রা শুষ্ক বাল্ব অপেক্ষা কম হবে। এই ভাবে থার্মোমিটার দুটিতে তাপমাত্রার পার্থক্য পাওয়া যাবে। কিন্তু বাতাস সম্পৃক্ত অবস্থায় থাকলে থার্মোমিটার দুটিতে একই তাপমাত্রা নির্দেশ করবে। থার্মোমিটার দুটির তাপমাত্রার পার্থক্য নির্ভর করবে বায়ুমন্ডলের আর্দ্রতার উপর। শুস্কবাল্ব এবং আর্দ্র বাল্বের তাপমাত্রা পাঠ থেকে সাইক্রোমেট্রিক চার্ট অনুযায়ী আর্দ্রতা নির্ণয় করা যায়। সাধারণত আবহাওয়া দপ্তরে সাইকোমিটার ব্যবহার করা হয়। 


 চিত্রঃসাইকোমিটার।

ময়সচ্যার (Moisture)

ময়সচ্যার বলতে কোন কিছুর ভিজা বা সেঁতসেঁতে অবস্থা অর্থাৎ বস্তুর ঈষৎ সিক্ত অবস্থা বুঝায়। ময়সচ্যার পরিমাপের মাধ্যমে কোন উপাদান বা বস্তু কতটা শুস্ক বা তার মধ্যে কি পরিমাণ আর্দ্র অবস্থা বিদ্যামন তা বুঝা যায়। ময়সচ্যার পরিমাপের জন্য ব্যবহৃত যন্ত্রকে ময়সচ্যার মিটার বলা হয়। 


নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লিখুন -

প্রশ্ন-১: পরিমাপ পদ্ধতি বলতে কি বুঝায় লিখুন?

প্রশ্ন-২: পরিমাপ পদ্ধতির প্রকারভেদলিখুন?

প্রশ্ন-৩: তাপমাত্রা পরিমাপের প্রকারভেদ লিখুন?

প্রশ্ন-৪: পাইরোমিটার বলতে কি বুঝায় লিখুন?

প্রশ্ন-৫: আর্দ্রতা বলতে কি বুঝায় লিখুন?

প্রশ্ন-৬: ময়সচ্যার বলতে কি বুঝায় লিখুন?


উত্তর-১

পরিমাপ পদ্ধতি

কোন কিছুর পরিমাপ বলতে আমরা একটি পরিমাণকে বুঝি, যা কনো আর্দশ পরিমাণের সাথে তুলনা করে পাওয়া যায়। এই ভাবে দুইটি পরিমাণের তুলনামূলক ফলাফল গানিতিক সংখ্যার সাহায্যে প্রকাশ করা যায়। বস্তুত পরিমাপ হলো একটি পদ্ধতি, যা কোন ভৌত ধ্রুব সংখ্যাকে (physical parameters) অর্থবহ বা কার্যকরী সংখ্যাতে পরিণত করে। যে পরিমাণ বা অংশ বা অংশবিশেষের সাখে তুলনা করে মাপ বা পরিমাপ নির্ণয় করা হয় তাকে মাপের একক (unit) বলে। আদর্শ এককের সাথে তুলনা করেই কোন কিছুর পরিমাপ নির্ধারণ করা হয়। 

উত্তর-২

পরিমাপের পদ্ধতিকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায় ঃ

১। প্রত্যক্ষ পদ্ধতি (Direct Methods) ও 

      ২। পরোক্ষ পদ্ধতি (Indirect Methods)

১। প্রত্যক্ষ পদ্ধতি ঃ এই পদ্ধতিতে অজানা মানকে (যা পরিমাপ করা হবে) সরাসরি একটি আদর্শ মানের সাথে তুলনা করা হয় এবং ফলাফল সংখ্যা ও এককের সাহায্যে প্রকাশ করা হয়।

২। পরোক্ষ পদ্ধতি ঃ মাপ নির্ণয়ের সকল ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ পদ্ধতির প্রয়োগ সম্ভব হয় না। এই সকল ক্ষেত্রে পরোক্ষ পদ্ধতিই গ্রহণযোগ্য হয়। প্রকৌশলগত বিভিন্ন ধরনের পরিমাপ কাজের জন্য পরোক্ষ পদ্ধতির প্রয়োজন হয়।

উত্তর-৩

তাপমাত্রা পরিমাপের ক্ষেত্রে প্রধানত তিন ধরণের স্কেলের ব্যবহার প্রচলিত আছে।

১। সেন্টিগ্রেড স্কেল (Centigrade Scal)

২। ফারেনহাইট স্কেল (Fahrenheit Scale)

৩। রোমার স্কেল (ReaumarScale)

সেন্টিগ্রেড স্কেল 

সুইডেনের ওপ্সালা বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতিবির্দ্যার অধ্যাপক এন্ডারস সেলসিয়াস এই স্কেল উদ্ভাবন করেন। এজন্য সেন্টিগ্রেড স্কেলকে ‘‘সেলসিয়াস’’ স্কেলও বলা হয়। এই স্কেল অনুযায়ী নি¤œ-স্থিরাঙ্ক বা হিমাঙ্ককে ০ সে. (০) এবং উর্ধ্ব-স্থিরাঙ্ক বা স্ফুটনাঙ্ককে ১০০ সে. ধরা হয় এবং দুই স্থিরাঙ্কের মধ্যবর্তী মূল দৈর্ঘ্যকে সমান ১০০ ভাগে ভাগ করা হয়। প্রত্যেক ভাগকে এক ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড বলে।

ফারেনহাইট স্কেল

১৭০৯ খ্রিষ্টাব্দে বিখ্যাত দার্শনিক এবং বিজ্ঞানী ফারেনহাইট এই স্কেলের উদ্ভাবন করেন। তিনি নিম্ন স্থিরাঙ্ক বা হিমাঙ্ককে ৩২০  F এবং উর্ধ্ব-স্থিরাঙ্ক বা স্ফুটনাঙ্ককে ২১২F হিসেবে ধরে এর মধ্যবর্তী মূল দূরত্বকে ১৮০ ভাগে ভাগ করেন। প্রতি ভাগকে  ১০ ফারেনহাইট (১০ F) বলা হয়। বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারিং কাজে এবং ডাক্তারী থার্মোমিটারে এই স্কেল ব্যবহার করা হয়।

রোমার স্কেল 

ফরাসী দার্শনিক রোমার হিমাঙ্ককে রোমার 00 (00R) এবং স্ফুটনাঙ্ককে ৮০রোমার হিসেবে ধরে মধ্যবর্তী মূল দূরত্বকে ৮০ ভাগে ভাগ করেন। প্রতিটি ভাগকে বলা হয় ১ R । জার্মানী এবং রাশিয়াতে তাপমাত্রা পরিমাপে এই স্কেলের প্রচলন আছে।

উত্তর-৪

পাইরোমিটার 

‘‘পাইরো’’ হলো একটি গ্রীক শব্দ এবং এর অর্থ হচ্ছে আগুন। অত্যন্ত উচ্চ তাপমাত্রা পরিমাপের জন্য ব্যবহৃত যন্ত্রকে পাইরোমিটার বলা হয়। পাইরোমিটার দ্বারা এমন উচ্চ তাপমাত্রা পরিমাপ করা হয় যা সাধারণ থার্মোমিটার দ্বারা সম্ভব হয় না। কোন তাপ উৎস অথবা অতি উত্তপ্ত বস্তু থেকে বিকিরিত তাপ-শক্তির পরিমাপের উপর ভিত্তি করেই তাপমাত্রার পরিমাপ পাওয়া যায়।

উত্তর-৫

আর্দ্রতা 

আর্দ্রতা হচ্ছে কোন স্থানের বাতাস বা গ্যাসে জলীয় বাষ্পের একটি পরিমাপ। আর্দ্রতার পরিমাণকে সচরাচর আপেক্ষিক আর্দ্রতা, পরম আর্দ্রতা অথবা শিশিরাংক হিসেবে পরিমাপ করা হয়ে থাকে। আর্দ্রতা প্রাকৃতিক পরিবেশ, জীবজগৎ, এমনকি মানুষের মন মেজাজের উপরও প্রভাব ফেলে। এজন্য অনেক ক্ষেত্রেই আর্দ্রতা পরিমাপের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হয়। ভূ-পৃষ্ঠে ভিজা মাটি, খালবিল, নদীনালা, সমূদ্র প্রর্ভতি হতে প্রতিনিয়ত প্রচুর পানি বাষ্পের পরিণত হয়ে বায়ুমন্ডলে মিশে যাচ্ছে। জলীয় বাষ্পের পরিমাণ সকল স্থানে এক থাকে না। পানির উৎসের অবস্থান এবং ভৌগলিক কারণে আর্দ্রতার পরিবর্তন ঘটে। বিজ্ঞানের যে শাখায় কোন নির্দিষ্ট আয়তনের বায়ুমন্ডলে আর্দ্রতা অর্থাৎ জলীয় বাষ্পের পরিমাণ নির্ণয় সম্পর্কে আলোচনা হরা হয় তাকে আর্দ্রতামিতি (Hygrometry)বলে। 

উত্তর-৬

ময়সচ্যার 

ময়সচ্যার বলতে কোন কিছুর ভিজা বা সেঁতসেঁতে অবস্থা অর্থাৎ বস্তুর ঈষৎ সিক্ত অবস্থা বুঝায়। ময়সচ্যার পরিমাপের মাধ্যমে কোন উপাদান বা বস্তু কতটা শুস্ক বা তার মধ্যে কি পরিমাণ আর্দ্র অবস্থা বিদ্যামন তা বুঝা যায়। ময়সচ্যার পরিমাপের জন্য ব্যবহৃত যন্ত্রকে ময়সচ্যার মিটার বলা হয়। 


বিষয়বস্তু

১। অঙ্কন ওপরিমাপের সাধারণ হিসাব পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা।

২। বিভিন্ন অঙ্কন ও পরিমাপের সাধারণ হিসাব পদ্ধতির প্রয়োগ করণ।

অ্যাসেসমেন্ট ক্রাইটেরিয়া 

১। অঙ্কন ও পরিমাপের সাধারণ হিসাব পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা করতে পারবেন।

২। বিভিন্ন অঙ্কন ও পরিমাপের সাধারণ হিসাব পদ্ধতির প্রয়োগ করতে পারবেন।

শর্তাবলি 

প্রশিক্ষণার্থীদের অবশ্যই নিচের সরঞ্জামাদি সরবরাহ করতে হবে-

  • পরিমাপ করার টুল্স
  • কাগজ, পেন্সিল এবং ইরেজার


শিখনফল : অঙ্কন ও পরিমাপের সাধারণ হিসাব পদ্ধতি অনুসরণ করণ।

শিখন কার্যক্রম

বিশেষ নির্দেশনা

  • অঙ্কন ও পরিমাপের সাধারণ হিসাব পদ্ধতি অনুসরণ করণ।

  • ইনফরমেশন শীট১.৩-১ পড়ুন।
  • সেলফ চেক ১.৩-১ এর উত্তরকরুন।
  • উত্তর পত্র ১.৩-১ এর সাথে মিলিয়ে নিন।


অঙ্কন ও পরিমাপের সাধারণ হিসাব পদ্ধতি 

শিখন উদ্দেশ্য 

এই ইনফরমেশন শিটটি পড়ার পর আপনি অঙ্কন ও পরিমাপের সাধারণ হিসাব পদ্ধতি অনুসরণ করতে সক্ষম হবেন।

অঙ্কন বা ড্রাইং (Drawing)

কোন একটি বস্তু বা বস্তুর অংশবিশেষ একটি সতমলের উপর সংক্ষিপ্ত ও সম্পূর্ণভাবে এর আকৃতি, প্রকৃতি, পরিদর্শন এবং উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সার্বিক তথ্য সম্বলিত কতগুলো ভিন্ন ভিন্ন রেখার মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তকণের ভাষ্যাকেই ড্রইং বলা হয়। 

অথবা-কোন একটি বস্তুকে একটি কাগজের উপর নিয়মতান্ত্রিক রেখাসমূহের মাধ্যমে উপস্থাপন করার কৌশলকে ড্রইং বলে।

ড্রইং-এর উদ্দেশ্য

মানুষের মনের ভাবকে অন্যের নিকট প্রকাশ করতে যেমন ভাষার প্রয়োজন হয়, কবি ও লেখকেরা তাদের মনের অভিব্যক্তিকে যেমন-কবিতা ও প্রবন্ধের মাধ্যমে অন্যের কাছে ব্যক্ত করে তোলেন, ঠিক তেমনি কারিগরি বা ইঞ্জিনিয়ারিং ক্ষেত্রে কোন বস্তু তৈরি, ডিজাইন ও কনস্ট্রাকশনের কাজে কতগুলো ভিন্ন ভিন্ন রেখার মাধ্যমে তাদের বিষয়টিকে অপরের কাছে উপস্থাপন বা প্রকাশ করার কৌশলই ড্রইং-এর উদ্দেশ্য। তাই প্রকৌশলবিদগণের উক্তি হল- "Drawing is the language of Engineer’’

ড্রইং-এর শ্রেণিবিভাগ

ড্রইংকে প্রধানত দুভাগে ভাগ করা যেতে পারে। যথা-

১। শৈল্পিক ড্রইং (Artistic, Free hand or Model Drawing)

২। প্রকৌশল ড্রইং (Engineering or Projectile Drawing)

প্রকৌশল ড্রইংকে নিম্ন লিখিত প্রধান ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। যথা-

১। জ্যামিতিক ড্রইং (Geometrical Drawing)

২। যান্ত্রিক ড্রইং (Mechanical Engineering Drawing)

৩। পুরকৌশল ড্রইং (Civil Engineering Drawing)

৪। তড়িৎ কৌশল ড্রইং (Electrical Engineering Drawing)

জ্যামিতিক ড্রইংকে দু’ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

১। প্লেন জ্যামিতিক ড্রইং (Plan Geometrical Drawing)

২। সলিড জ্যামিতিক ড্রইং (Solid Geometrical Drawing)

যান্ত্রিক ড্রইংকে নিম্ন লিখিত ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

১। শীট্ মেটাল ড্রইং (Sheet Metal Drawing)

২। মেরিন ড্রইং (Marine Drawing)

৩। এয়ার ক্রাফট ড্রইং (Air Craft Drawing)

৪। কেবিনেট ড্রইং (Cabinet Drawing)

পুরকৌশল ড্রইংকে দু’ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

১। স্থপতি বিদ্যা বিষয়ক ড্রইং (Architectural Drawing)

২। অট্টালিকার গঠন সম্বন্ধীয় ড্রইং (Structural Drawing)

বিভিন্ন প্রকার ড্রইং-এর বর্ণনা ও ব্যবহার

শৈল্পিক ড্রইং (Artistic Drawing)

একজন চিত্রকর কোন একটি বস্তুকে নিজের কল্পনার মাধ্যমে অথবা বস্তুটিকে সামনে রেখে যেমন-পেইন্টিং, সিনেমা স্লাইড, বিজ্ঞাপন ও বোর্ড ইত্যাদিতে উপস্থাপন করে, এর কৌশলকেই শৈল্পিক ড্রইং বলে। শৈল্পিক ড্রইং সাধারণত বাণিজ্যিক উদ্দেশে ব্যবহার হয়।  

প্রকৌশল ড্রইং (Engineering Drawing)

প্রকৌশল সম্মন্ধীয় বস্তু, যেমন- ইমারত, সড়ক, মেশিন ও যন্ত্রপাতিসমূহ একটি কাগজের উপরে উপস্থাপন করার কৌশলকেই প্রকৌশল ড্রইং বলে।

জ্যামিতিক ড্রইং (Geometrical Drawing)

জ্যামিতিক বস্তুসমূহ যেমন-বর্গক্ষেত্র, আয়তক্ষেত্র, মোচক, সিলিন্ডার ও গোলক ইত্যাদি একটি কাগজের উপর উপস্থাপন করার কৌশলই জ্যামিতিক ড্রইং নামে পরিচিত।

(ক) প্লেন জ্যামিতিক ড্রইং (Plan Geometrical Drawing)

বস্তুসমূহের দ্বিমাত্রিকভাবে, অথবা দৈর্ঘ্য ও বিস্তার যেমন- বর্গক্ষেত্র, আয়তক্ষেত্র, ত্রিভুজ ইত্যাদি কাগজের উপর বিভিন্ন রেখার মাধ্যমে উপস্থাপন করার কৌশলকেই প্লেন জ্যামিতিক ড্রইং বলে।

(খ) সলিড জ্যামিতিক ড্রইং (Solid Geometrical Drawing)

বস্তুসমূহের ত্রিমাত্রিকভাবে অথবা দৈর্ঘ্য, বিস্তার ও পুরুত্ব যেমন-ঘন বস্তু, সিলিন্ডার ও গোলক ইত্যাদি একটি কাগজের উপর রেখার মাধ্যমে বর্ণনা করার কৌশলকেই সলিড জ্যামিতিক ড্রইং বলে।

যান্ত্রিক ড্রইং (Mechanical Engineering Drawing)

যে ড্রইং-এর মাধ্যমে কোন ডিজাইনার শীট মেটাল, ইঞ্জিন, ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশ, মেশিন, মেশিনারী পার্টস, ইলেকট্রিক্যাল, এয়ারক্রাফটস প্রভৃতি যন্ত্রপাতি ও দ্রব্য সামগ্রীর কার্যপদ্ধতি, কার্যক্ষমতা, সংযোগ পদ্ধতি পরিচালনা, পদার্থের উপাদান ও সংমিশ্রণ ইত্যাদি গুনাবলির বর্ণনা, বিশ্লেষণ করে থাকে, তাকে যান্ত্রিক ড্রইং বলে।

পুরকৌশল ড্রইং (Civil Engineering Drawing)

যে ড্রইংকে ডিজাইন এবং কনস্ট্রাকশন, যেমন- রোড, বিল্ডিং, ব্রীজ ও বাঁধসমূহ তৈরির কাজে ব্যবহার করা হয়। তাকে পুরকৌশল ড্রইং বলে। 

তড়িৎ কৌশল ড্রইং (Electrical Engineering Drawing)

যে ড্রইং বৈদ্যুতিক বস্তুসমূহের ডিজাইন ও কনস্ট্রাকশন, যেমন-মটর, জেনারেটর, ট্রান্সফরমার, পোল ও টাওয়ার ইত্যাদি তৈরির কাজে ব্যবহার করা হয়, তাকে তড়িৎ কৌশল বলা হয়। 

বিভিন্ন প্রকার যান্ত্রিক ড্রইং(Mechanical Engineering Drawing)-এর বর্ণনা 

(ক) শীট মেটাল ড্রইং (Sheet metal Drawing)

যে ড্রইং শীট মেটাল দিয়ে বালতি, চিমনি ইত্যাদি বা বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ও ব্যবহার্য দ্রব্যাদি তৈরির কারখানার ব্যবহার করা হয়, তাকে শীট মেটাল ড্রইং বলে।

(খ) মেরিন ড্রইং (Marine Drawing)

যে ড্রইং ডক্ইয়ার্ডে লঞ্চ (Dock Yard), স্টীমার ও জাহাজ তৈরির কারখানার ব্যবহার করা হয়, তাকে মেরিন ড্রইং বলে।

(গ) এয়ার ক্রাফ্ট ড্রইং (Air Craft Drawing)

যে ড্রইং বিমান চালনা সংক্রান্ত, বিমান তৈরির কারখানায় ডিজাইনের জন্য ব্যবহার করা হয়, তাকে এয়ার ক্রাফ্ট ড্রইং বলে।

(ঘ) কেবিনেট ড্রইং (Cabinet Drawing)

যে ড্রইং খাস কামরার আসবাবপত্র ডিজাইনের কাজে ব্যবহার করা হয় তাকে কেবিনেট ড্রইং বলে।

বিভিন্ন প্রকার পুরকৌশল ড্রইং (Civil Engineering Drawing)-এর বর্ণনা

(ক) স্থপতি বিদ্যা বিষয়ক ড্রইং (Architectural Drawing)

যে ড্রইং বিল্ডিং-এর সৌন্দর্য ও যাবতীয় সুবিধা বৃদ্ধির উদ্দেশে ডিজাইনের কাজে ব্যবহার করা হয়, তাকে স্থপতি বিদ্যা বিষয়ক ড্রইং বলে।

(খ) অট্টালিকার গঠন সম্বন্ধীয় ড্রইং (Structural Drawing)

যে ড্রইং ব্রীজ, ষ্টীল ষ্ট্রাকচার এবং অট্টালিকার গঠন সম্বন্ধীয় কাজে ব্যবহার করা হয়, তাকে অট্টালিকার গঠন সম্বন্ধীয় ড্রইং বলে।

ড্রইং-এর প্রয়োজনীতা

কারখানা, শিল্প প্রতিষ্ঠান, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং কারিগরি স্কুল ও কলেজগুলোর প্রথম ধাপ অঙ্কন বা ড্রইং। কারণ ড্রইং ব্যতিত কোন কর্মী বা প্রশিক্ষণার্থী মেকানিক্যাল, ইলেকট্রিক্যাল ও কনস্ট্রাকশনের ব্যবহারিক কাজ করতে পারে না। প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে নমুনা ছাড়াই কাজ বা জবের প্রতিটি অংশের মাপ, পরিমাপ, কার্যপদ্ধতির প্রতি লক্ষ করে জব প্রস্তুত করতে হয়। সে জন্য ড্রইং-এর সাহায্যে একমাত্র ঐ সমস্ত মাপ, পরিমাপ নিয়ে কর্মী বা প্রশিক্ষণার্থীরা জবের উপর প্রত্যক্ষভাবে কাজ করতে পারে।

প্রতিটি ক্ষেত্রে যদিও ডিজাইনার, ড্রাফটম্যানকে প্রত্যেক কাজের জন্য নির্ভুল ড্রইং দিয়ে থাকেন। তথাপি ট্রেড্সম্যানদেও ঐ কাজের কম-বেশি ড্রইং সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হয়। যেহেতু ট্রেড্সম্যানদের ঐ জবের পরিপূর্ণ দ্রব্য উৎপাদনের ভূমিকায় সক্রিয় অংশগ্রহণ করে থাকে। নচেৎ ট্রেড্সম্যানরা নমুনা ব্যতিত কোন পরিকল্পিত কাজ করতে পারবে না।

মেকানিক্যাল, ইলেকট্রিক্যাল ও পুরকৌশল যে কোন ধরণের ড্র¦ইং-এর সাহায্যে ট্রেড্সম্যানরা নিপুণতার সাথে নিত্য নতুন কোন ছিুর উপযোগ সৃষ্টির ক্ষেত্রে আবষ্কিারকদের সাহায্য করছে। কাজেই মেকানিক্যাল, ইলেকট্রিক্যাল ও পুরকৌশল ড্রইং-এর ক্ষেত্রে ট্রেডস্ম্যানদের প্রয়োজনীয়তা যথোপযুক্ত ও গুরুত্বপূর্ণ।

পরিমাপ করার সাধারণ হিসাবপদ্ধতি

যোগ প্রক্রিয়া

যে কোন দুটি রাশির মাঝে (+) যোগ চিহ্ন থাকলে প্রথম রাশির সাথে ২য় রাশির যোগ বুঝায়। যেমন x ও y এর মাঝে (+) চিহ্ন থাকলে এদের যোগ করা বুঝায়। (x+y) হলো যোগ প্রক্রিয়া। এখানে x এর মান ৫,  y এর মান ২ হলে এদের যোগফল হবে (x+y) = ৫ + ২ = ৭।

বিয়োগ প্রক্রিয়া

যে কোন দুটি সংখ্যা বা রাশির মাঝে (-) বিযোগ চিহ্ন থাকলে উভয় রাশির মাঝে বিয়োগ করা বুঝায়। যেমন x ও y এর মাঝে (-) চিহ্ন থাকলে এদের বিয়োগ করা বুঝায়। (x-y) হলো বিযোগ প্রক্রিয়া। এখানে x এর মান ৫, y এর মান ২ হলে এদের বিয়োগফল হবে (x-y) = ৫- ২ = ৩।

মিশ্র প্রক্রিয়া

মিশ্র রাশিমালাদ্বয়ের মাঝে বিয়োগ করার সময় দ্বিতীয় রাশির চিহ্ন বিপরীতধর্ম হয়।

যেমন- (a+b+c)-(d-e-f)

= a+b+c-d+e+f

গুন প্রক্রিয়া

যে কোন দুটি সংখ্যা বা রাশির মাঝে x চিহ্ন থাকলে উভয় রাশির গুণ করা বুঝায়। যেমন-x ও y এর মাঝে (x) চিহ্ন থাকলে এদের গুণ করা বুঝায়। সুতরাং (xyz) হলো গুণ প্রক্রিয়া। এখানে x এর মান ৬,  y এর মান ৫ হলে এদের গুণফল হবে (xyz) = ৬ x ৫ = ৩০।

গুণের সাধারণ নিয়ম 

একই চিহ্নযুক্ত দু'টি সংখ্যার গুণফলের সংখ্যা মান তাদের সংখ্যা মানের গুণফলের সমান এবং গুণফলের চিহ্ন ধনাত্নক। যেমন-৫ x ৫ = ২৫ এবং 

ভিন্ন চিহ্নযুক্ত দু'টি সংখ্যার গুণফলের সংখ্যা মান তাদের সংখ্যা মানের গুণফলের সমান এবং গুণফলের চিহ্ন ঋণাত্নক। যেমন-(-৫) x (+ ৫) = -২৫।

ভাগ প্রক্রিয়া

যে কোন দু'টি রাশির মাঝে (/) ভাগ চিহ্ন থাকলে প্রথম রাশিদ্বয়ের মাঝে ভাগ করা বুঝায়। যেমন-x ও y এর মাঝে (/) চিহ্ন থাকলে এদের ভাগ করা বুঝায়। সুতরাং (x/y) হলো যোগ প্রক্রিয়া। এখানে x এর মান ৬, y এর মান ৩ হলে এদের ভাগফল হবে (x/y) = ৬ / ৩ = ২।

লক্ষ্য করুন

  • যোগের সংক্ষিপ্ত নিয়ম গুণ।
  • বিয়োগের সংক্ষিপ্ত নিয়ম ভাগ।
  • বিয়োগ হলো যোগের বিপরীত পদ্ধতি।
  • ভাগও হলো গুণের বিপরীত পদ্ধতি।
  • বহুপদী রাশিকে সকল রাশিতে যোগ, বিয়োগ, গুণ বা ভাগের মাধ্যমে পরিণত করতে হলে এক জাতীয় রাশিতে পরিণত করতে হয়।

পরিমাপ করার জ্যামিতিক হিসাব পদ্ধতি 

আয়তন

ঘনবস্তুর ঘনফলই আয়তন। অর্থাৎ একটি বন্ধ পৃষ্ঠ দ্বারা আবদ্ধ ত্রিমাত্রিক স্থানের পরিমাপই ঐ বস্তুর আয়তন।

আয়তাকার ঘনবস্তুর আয়তনের পরিমাপ = দৈর্ঘ্যরে পরিমাপ x প্রস্থের পরিমাপ x উচ্চতার পরিমাপ।

 

চিত্রঃ আয়তন।

দৈর্ঘ্যরে পরিমাপ, প্রস্থের পরিমাপ ও উচ্চতার পরিমাপ একই এককে প্রকাশ করে আয়তনের পরিমাপ ঘন এককে নির্ণয় করা হয়। দৈর্ঘ্য ১ সেন্টিমিটার, প্রস্থ ১ সেন্টিমিটার এবং উচ্চতা ১ সেন্টিমিটার বিশিষ্ট বস্তুর আয়তন ১ ঘন সেন্টিমিটার।

তরল পদার্থের আয়তন পরিমাপ

কোনো তরল পদার্থ যতটুকু জায়গা জুড়ে থাকে তা এর আয়তন। একটি ঘনবস্তুর দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা আছে। কিন্তু কোনা তরল পদার্থের নির্দিষ্টভাবে তা নেই। যে পাত্রে তরল পদার্থ রাখা হয় সেই পাত্রের আকার ধারণ করে। এ জন্য নির্দিষ্ট আয়তনের কোনা ঘনবস্তুর আকৃতির মাপনি দ্বারা তরল পদার্থ মাপা হয়। এক্ষেত্রে আমরা সাধারণত লিটার মাপনি ব্যবহার করি। এ মাপনিগুলো ১/৪,১/২ , ১, ২, ৩, ৪ ইত্যাদি লিটার বিশিষ্ট এলুমিনিয়াম বা টিনের শিট দ্বারা তৈরি এক প্রকারের কোনক আকৃতির পাত্র বা সিলিন্ডার আকৃতির মগ। আবার স্বচ্ছ কাচেঁর তৈরি ২৫, ৫০, ১০০, ২০০, ৩০০, ৫০০, ১০০০ মিলিলিটার দাগকাটা খাড়া পাত্রও ব্যবহার করা হয়।

 

চিত্রঃ তরল পদার্থের আয়তন।

৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ১ ঘনসেন্টিমিটার (Cubic Centimeter) বিশুব্ধ পানির ওজন ১ গ্রাম। Cubic Centimeter কে সংক্ষেপে ইংরেজিতে প.প. (সি.সি.) লেখা হয়।

ক্ষেত্রফল 

ক্ষেত্রফলের অপর নাম কালি। কোন স্থানের পরিমাণই হলো ঐ স্থানের ক্ষেত্রেফল; যেমন-একটি স্থানের দৈর্ঘ্য ৫ মিটার ও প্রস্থ ২ মটিার হলে ঐ স্থানের ক্ষেত্রফল হলো ৫*২ বা ১০ বর্গ মিটার।

 

চিত্রঃ ক্ষেত্রফল।

ক্ষেত্রফল পরিমাপ

একটি বস্তুর সমতল পৃষ্ঠের উপর দ্বি-মাত্রিক কত স্থানে আছে তা পরিমাপ করাই ক্ষেত্রফল পরিমাপ।

আয়তাকার ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফলের পরিমাপ = দৈর্ঘ্যরে পরিমাপ x প্রস্থের পরিমাপ

বর্গাকার ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফলের পরিমাপ = (বাহুর পরিমাপ)

বর্গক্ষেত্রের কর্ণ = √(বাহু+বাহু )

ত্রিভুজাকার ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফলের পরিমাপ = ১/২ x ভূমির পরিমাপ x উচ্চতার পরিমাপ

সামান্তরিক ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল = ভূমি x উচ্চতা।

স্থানচ্যুতি (Displacement) 

স্থানচ্যুতি হল একটি ভেক্টর য়ার দৈর্ঘ্যটি প্রাথমিক থেকে শেষ পর্যন্ত একটি বিন্দু ঢ় এর চূড়ান্ত অবস্থান। এটি প্রাথমিক অবস্থান থেকে পয়েন্টের চূড়ান্ত অবস্থান পর্যন্ত একটি সরল রেখা বরাবর একটি কল্পিত গতির দূরত্ব এবং দিক যা উভয়ই সংখ্যায় ব্যক্ত করা যায়।

 

চিত্রঃ স্থানচ্যুতি।

দূরত্বের সাথে স্থানচ্যুতির পার্থক্য হল, দূরত্বটি একটি স্কেলের পরিমাপ যা তার গতির সময় ‘‘কতটুক বস্তুকে অবতীর্ণ করেছে’’ তা উল্লেখ করে কিন্তু স্থানচ্যুতি একটি ভেক্টর পরিমাণ যা বোঝায় যে ‘‘কতটুকু দূরত্বে বস্তুটি অবস্থান করেছে’’ এটি অবস্থানের বস্তুর সামগ্রিক পরিবর্তন।


দৈর্ঘ্য (Length) 

দৈর্ঘ্য একটি বস্তুর সর্বাধিক বিস্তৃত মাত্রা। অর্থাৎ কোন বস্তুর এক প্রান্ত হতে অন্য প্রান্তের দূরত্বই দৈর্ঘ্য। এককের আন্তর্জাতিক পদ্ধতিতে অর্থাৎ এস.আই পদ্ধতিতে দৈর্ঘ্যরে একক মিটার। ইংলিশ এককে দৈর্ঘ্যরে একক ইঞ্চি। 

 

চিত্রঃ দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ।

ট্যাপার (Taper) 

ট্যাপারিং বলতে বুঝায়, কোন এক দিকে ক্রমাগত সরু হয়ে যাওয়া। অর্থাৎ একটি বস্তুর আকৃতি ক্রমানুসারে ক্ষয়প্রাপ্ত বা এক প্রান্তের দিকে সঙ্কীর্ণ (যেমনঃ প্রোফাইল) হয়ে যাওয়াকে ট্যাপার বলে।

 

চিত্রঃ ট্যাপার গেজ।


বৃত্ত(Circle)

কোন সমতলে একটি বিন্দুকে কেন্দ্র করে সমান দূরত্ব বজায় রেখে অপর একটি বিন্দু তার চারদিকে একবার ঘুরে এলে তাকে বৃত্ত বলে। বৃত্ত একটি বক্ররেখা।

 

চিত্রঃ বৃত্ত।


জ্যা ও চাপ(Chord)

বৃত্তের যেকোনো দুইটি বিন্দুর সংযোজক রেখাংশ বৃত্তটির একটি জ্যা। প্রত্যেক জা বৃত্তকে দুইটি চাপে বিভক্ত করে। 

 

চিত্রঃ জ্যা।


উপরের চিত্রে, একটি বৃত্ত দেখানো হয়েছে। যার, কেন্দ্র 0। বৃত্তের উপর যেকোনো বিন্দু A, B নিয়ে এদের সংযোজক রেখাংশ AB টানি। অই রেখাংশ বৃত্তটির একটি জ্যা। জ্যা দ্বারা বৃত্তিটি দুইটি অংশে বিভক্ত হয়েছে। জ্যা দ্বারা বিভক্ত বৃত্তের প্রত্যেক অংশকে বৃত্তচাপ, বা সংক্ষেপে চাপ বলে। 

ব্যাস, ব্যাসার্ধ ও পরিধি (Diameter, Radiusand Circumference)

 

চিত্রঃ ব্যাস ও পরিধি।

উপরের চিত্রে  AB এমন একটি জ্যা, যা বৃত্তের কেন্দ্র 0 দিয়ে গেছে। জ্যাটি বৃত্তের একটি ব্যাস। ব্যাসের দৈর্ঘ্যকেও ব্যাস(diameter) বলা হয়।  অই ব্যাসটি দ্বারা সৃষ্ট চাপ দুইটি সমান; এরা প্রত্যেকে একটি অর্ধবৃত্ত। বৃত্তের কেন্দ্রগামী যেকোনো জ্যা, বৃত্তের একটি ব্যাস। ব্যাস বৃত্তের বৃহত্তম জ্যা। বৃত্তের প্রত্যেক ব্যাস বৃত্তকে দুইটি অর্ধবৃত্তে বিভক্ত করে। ব্যাসের অর্ধেক দৈর্ঘ্যকে ব্যাসার্ধ (radius)বলে। ব্যাস ব্যাসার্ধের দ্বিগুণ। 

বৃত্তের সম্পূর্ণ দৈর্ঘ্যকে পরিধি (circumference) বলে। অর্থাৎ বৃত্তস্থিত যেকোনো বিন্দু অ থেকে বৃত্ত বরাবার ঘুরে পুনরায় A  বিন্দু পর্যন্ত পথের দূরত্বই পরিধি।

বৃত্তক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল = আয়তক্ষেত্রটির ক্ষেত্রফল = দৈর্ঘ্য x প্রস্থ

= পরিধির অর্ধেক x ব্যাসার্ধ 

= ১/২ x ২πr x r= πr

∴ বৃত্তক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল = πr

অভ্যন্তরের ব্যাস (Inside diameter) 

বৃত্তের একটি ব্যাস বা কোনও সরল রেখাংশ যাহা বৃত্তের কেন্দ্রের মধ্য দিয়ে যায় এবং অন্তবর্তী বৃত্তের মাঝে অবস্থান করে। এটি বৃত্তের দীর্ঘতম জ্যা হিসাবেও সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে। এই জ্যা বা সরল রেখাংশটির দুই প্রান্তের দৈর্ঘ্যরে মাপই হল অভ্যন্তরের ব্যাস। এটি কোন পাইপ বা সিলিন্ডারের ভিতরের পৃষ্ঠের মাপ নির্ণয়ের জন্য ব্যবহার করা হয়।

 

চিত্রঃ অভ্যন্তরের ব্যাস।

বাইরের ব্যাস (Outside diameter)

বৃত্তের একটি ব্যাস বা কোনও সরল রেখাংশ যাহা বৃত্তের কেন্দ্রের মধ্য দিয়ে যায় এবং বৃত্তের বাইরের পৃষ্ঠে অবস্থান করে। এই সকল রেখাংশটির দুই প্রান্তের দৈর্ঘ্যরে মাপই হল বাইরের ব্যাস। এটি কোন পাইপ বা সিলিন্ডারের বাহিরের পৃষ্ঠের মাপ নির্ণয়ের জন্য ব্যবহার করা হয়।

 

চিত্রঃ বাইরের ব্যাস।


পূরুত্ব (Thickness) 

একটি বস্তুর দুই পৃষ্ঠের মধ্যে যে আয়তন বা ঘনত্ব বিরাজমান থাকে, তাকে পূরুত্ব বলে।

 

চিত্রঃ পূরুত্ব বা ওয়াল থিকনেস্।


গোল আকৃতি বাইরে (Out of roundness)

কোনও গোলাকার বস্তু যদি পূর্ণবৃত্ত না হয়ে এর পৃষ্ঠ যদি অসমান হয় তবে তাকে আউট অফ রাউন্ডনেস্ বা গোল আকৃতির বাইরে বলা হয়। 

 

চিত্রঃ গোল আকৃতি বাইরে।


নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লিখুন -

প্রশ্ন-১: ড্রাইং বলতে কি বুঝায় লিখুন?

প্রশ্ন-২: ড্রইং-এর শ্রেণিবিভাগ লিখুন?

প্রশ্ন-৩: দৈর্ঘ্যবলতে কি বুঝায় লিখুন?

প্রশ্ন-৪: পূরুত্ববলতে কি বুঝায় লিখুন?

প্রশ্ন-৫: ড্রইং-এর প্রয়োজনীতালিখুন?



উত্তর-১

ড্রাইং 

কোন একটি বস্তু বা বস্তুর অংশবিশেষ একটি সতমলের উপর সংক্ষিপ্ত ও সম্পূর্ণভাবে এর আকৃতি, প্রকৃতি, পরিদর্শন এবং উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় সার্বিক তথ্য সম্বলিত কতগুলো ভিন্ন ভিন্ন রেখার মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তকণের ভাষ্যাকেই ড্রইং বলা হয়। 

অথবা-কোন একটি বস্তুকে একটি কাগজের উপর নিয়মতান্ত্রিক রেখাসমূহের মাধ্যমে উপস্থাপন করার কৌশলকে ড্রইং বলে।

উত্তর-২

ড্রইং-এর শ্রেণিবিভাগ

ড্রইংকে প্রধানত দুভাগে ভাগ করা যেতে পারে। যথা-

১। শৈল্পিক ড্রইং (Artistic, Free hand or Model Drawing)

২। প্রকৌশল ড্রইং (Engineering or Projectile Drawing)

প্রকৌশল ড্রইংকে নিম্ন লিখিত প্রধান ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। যথা-

১। জ্যামিতিক ড্রইং (Geometrical Drawing)

২। যান্ত্রিক ড্রইং (Mechanical Engineering Drawing)

৩। পুরকৌশল ড্রইং (Civil Engineering Drawing)

৪। তড়িৎ কৌশল ড্রইং (Electrical Engineering Drawing)

জ্যামিতিক ড্রইংকে দু’ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

১। প্লেন জ্যামিতিক ড্রইং (Plan Geometrical Drawing)

২। সলিড জ্যামিতিক ড্রইং (Solid Geometrical Drawing)

যান্ত্রিক ড্রইংকে নিম্ন লিখিত ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

১। শীট্ মেটাল ড্রইং (Sheet Metal Drawing)

২। মেরিন ড্রইং (Marine Drawing)

৩। এয়ার ক্রাফট ড্রইং (Air Craft Drawing)

৪। কেবিনেট ড্রইং (Cabinet Drawing)

 পুরকৌশল ড্রইংকে দু’ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

১। স্থপতি বিদ্যা বিষয়ক ড্রইং (Architectural Drawing)

২। অট্টালিকার গঠন সম্বন্ধীয় ড্রইং (Structural Drawing)

উত্তর-৩

দৈর্ঘ্য

দৈর্ঘ্য একটি বস্তুর সর্বাধিক বিস্তৃত মাত্রা। অর্থাৎ কোন বস্তুর এক প্রান্ত হতে অন্য প্রান্তের দূরত্বই দৈর্ঘ্য। এককের আন্তর্জাতিক পদ্ধতিতে অর্থাৎ এস.আই পদ্ধতিতে দৈর্ঘ্যরে একক মিটার। ইংলিশ এককে দৈর্ঘ্যরে একক ইঞ্চি। 

উত্তর-৪

পূরুত্ব 

একটি বস্তুর দুই পৃষ্ঠের মধ্যে যে আয়তন বা ঘনত্ব বিরাজমান থাকে, তাকে পূরুত্ব বলে।

উত্তর-৫

ড্রইং-এর প্রয়োজনীতা

কারখানা, শিল্প প্রতিষ্ঠান, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং কারিগরি স্কুল ও কলেজগুলোর প্রথম ধাপ অঙ্কন বা ড্রইং। কারণ ড্রইং ব্যতিত কোন কর্মী বা প্রশিক্ষণার্থী মেকানিক্যাল, ইলেকট্রিক্যাল ও কনস্ট্রাকশনের ব্যবহারিক কাজ করতে পারে না। প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে নমুনা ছাড়াই কাজ বা জবের প্রতিটি অংশের মাপ, পরিমাপ, কার্যপদ্ধতির প্রতি লক্ষ করে জব প্রস্তুত করতে হয়। সে জন্য ড্রইং-এর সাহায্যে একমাত্র ঐ সমস্ত মাপ, পরিমাপ নিয়ে কর্মী বা প্রশিক্ষণার্থীরা জবের উপর প্রত্যক্ষভাবে কাজ করতে পারে।

প্রতিটি ক্ষেত্রে যদিও ডিজাইনার, ড্রাফটম্যানকে প্রত্যেক কাজের জন্য নির্ভুল ড্রইং দিয়ে থাকেন। তথাপি ট্রেড্সম্যানদেও ঐ কাজের কম-বেশি ড্রইং সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হয়। যেহেতু ট্রেড্সম্যানদের ঐ জবের পরিপূর্ণ দ্রব্য উৎপাদনের ভূমিকায় সক্রিয় অংশগ্রহণ করে থাকে। নচেৎ ট্রেড্সম্যানরা নমুনা ব্যতিত কোন পরিকল্পিত কাজ করতে পারবে না।

মেকানিক্যাল, ইলেকট্রিক্যাল ও পুরকৌশল যে কোন ধরণের ড্র¦ইং-এর সাহায্যে ট্রেড্সম্যানরা নিপুণতার সাথে নিত্য নতুন কোন ছিুর উপযোগ সৃষ্টির ক্ষেত্রে আবষ্কিারকদের সাহায্য করছে। কাজেই মেকানিক্যাল, ইলেকট্রিক্যাল ও পুরকৌশল ড্রইং-এর ক্ষেত্রে ট্রেডস্ম্যানদের প্রয়োজনীয়তা যথোপযুক্ত ও গুরুত্বপূর্ণ।


বিষয়বস্তু

১।মেজারিং টুলস এবং ইকুইপম্যান্ট স¤পর্কে ধারণা।

২। বিভিন্ন মেজারিং টুলস এবং ইকুইপম্যান্টেরব্যবহার পদ্ধতি।

অ্যাসেসমেন্ট ক্রাইটেরিয়া 

১। মেজারিং টুলস এবং ইকুইপম্যান্ট স¤পর্কে ধারণা করতে পারবেন।

২। বিভিন্ন মেজারিং টুলস এবং ইকুইপম্যান্ট ব্যবহার করতে পারবেন।

শর্তাবলি 

প্রশিক্ষণার্থীদের অবশ্যই নিচের সরঞ্জামাদি সরবরাহ করতে হবে-

বিভিন্ন মেজারিং টুলস এবং ইকুইপম্যান্ট 

কাগজ, পেন্সিল এবং ইরেজার


শিখনফলঃ মেজারিং টুলস এবং ইকুইপম্যান্ট সনাক্তকরণ।

শিখন কার্যক্রম

বিশেষ নির্দেশনা

  • মেজারিং টুলস এবং ইকুইপম্যান্ট সনাক্তকরণ।

  • ইনফরমেশন শিট ১.৪-১ পড়ুন।
  • সেলফ চেক ১.৪-১ এর উত্তরকরুন।
  • উত্তর পত্র ১.৪-১ এর সাথে মিলিয়ে নিন।


মেজারিং টুলস এবং ইকুইপম্যান্ট 

শিখন উদ্দেশ্য 

এই ইনফরমেশন শিটটি পড়ার পর আপনি মেজারিং টুলস এবং ইকুইপম্যান্ট সনাক্তকরণ ও ব্যবহার পদ্ধতি অনুসরণ করতে সক্ষম হবেন।

মেজারিং টুলস এন্ড ইকুইপম্যান্ট (Measuring Tools and equipment)

যে সকল ডিভাইস কোন বস্তু বা যন্ত্রাংশের মাপ গ্রহণে ব্যবহার হয় তাদেরকে মাপন যন্ত্র বা মেজারিং টুলস বা ইকুইপম্যান্ট বলে। যেমন- স্টিল রুল, কম্বিনেশন স্টে, মাইক্রোমিটার, ভার্নিয়ার ক্যালিপার্স ইত্যাদি।

মেজারিং টুলস এবং ইকুইনম্যান্ট মধ্যে পার্থক্য 

মেজারিং টুলস

মেজারিং ইকুইপম্যান্ট

১। নন প্রিসিশন মেজারিং জিভাইসগুলোকে সাধারণত মেজারিং টুলস বলে।যেমন-স্টিল রুল, ট্রামেল,কম্বিনেশন সেট,সারফেস গেজইত্যাদি। 

১। প্রিসিশন মেজারিং ডিভাইসগুলোকে প্রধানত মোজারিং ইকুইপম্যান্ট বলে। যেমন- মাইক্রোমিটার, ভার্নিয়ার ক্যালিপার্স, হাইট গেজ, ভার্নিয়ার বিভেল প্রোট্রাক্টর ইত্যাদি।

২। বহুল উৎপাদনে পরিদর্শন কাজে ব্যবহার হয় না।

২। বহুল উৎপাদনে পরিদর্শন কাজে ব্যবহার হয়।

৩। অধিকাংশগুলোর উৎপাদন খুবই সহজ।

৩। অধিকাংশগুলোর উৎপাদন খুবই জটিল।


লে-আউট (Lay-out)

কোন ওয়ার্কপিচ, কার্যবস্তু বা সরবরাহকৃত কাঁচামালের সাহায্যে যে দ্রব্য, জব বা বস্তু উৎপাদন হবে, কাজ আরম্ভ করার পূর্বে সরবরাহকৃত কাঁচামালের উপর উৎপন্ন দ্রব্যের অবিকল প্রতিচ্ছবি অঙ্কন বা চিহ্নিত করাকে লে-আউট বলে।

লে-আউট যন্ত্র, যেমন- স্ক্রাইবার স্টিল রুল, টাইস্কোয়ার, পাঞ্চ, হ্যামার ইত্যাদি।

জবের উপর মার্কিং বা লে-আউট করার টুলসের নাম 

সারফেস প্লেট, সারফেস গেজ, স্টিল রুল, ডিভাইডার, প্রিক পাঞ্চ, সেন্টার পাঞ্চ, কম্বিনেশন সেট, হারমাফ্রোডাইট ক্যালিপার্স,  প্লেইন প্রট্রাক্টর, ট্রাইস্কোয়ার, হ্যামার, ট্রামেল ইত্যাদি।

ডাইরেক্ট মেজারিং টুলস বা ইকুইপম্যান্ট

যে সকল পরিমাপক যন্ত্রের সাহায্যে পণ্য দ্রব্য বা যন্ত্রাংশের পরিমাপ সরাসরি গ্রহণ করা যায় তাদেরকে ডাইরেক্ট মেজারিং ইকুইপম্যান্ট বলে। যেমন- স্টিল রুল, বিভেল প্রট্রাক্টর, মাইক্রোমিটার, ভার্নিয়ার ক্যালিপার্স ইত্যাদি।

ইনডাইরেক্ট মেজারিং টুলস বা ইকুইপম্যান্ট

যে সকল যন্ত্রের সাহায্যে সরাসরি মাপ গ্রহণ করা যায় না তাদেরকে ইনডাইরেক্ট মেজারিং টুলস বলে। অন্যভাবে যে সকল ডিভাইসের সাহায্যে মাপ গ্রহণ করতে অন্য একটি ডাইরেক্ট মেজারিং টুলসের প্রয়োজন হয় তাকে ইনডাইরেক্ট মেজারিং টুলস বলে। যেমন-ক্যালিপার্স, ডিভাইডার, ট্রামেল, হোল গেজ, টেলিস্কোপিক গেজ ইত্যাদি।

মেজারিং ইকুইপম্যান্ট প্রকারভেদ ঃ

মেজারিং টুলস বা ইকুইপম্যান্ট প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যথা-

(ক) নন প্রিসিশিন ইকুইপম্যান্ট (NonPricision equipment)

(খ) প্রিসিশন ইকুইপম্যান্ট  (Pricision equipment)

মেজারিং ইকুইপম্যান্ট মাপ গ্রহণের সূ²তার উপর বিবেচনা করে চার ভাগে ভাগ করা হয়। যথা-

(ক) নন প্রিসিশন ইকুইপম্যান্ট; যেমন-ট্রাইস্কোয়ার

(খ) সেমিপ্রিসিশন ইকুইপম্যান্ট; যেমন-স্টিল রুল, কম্বিনেশন সেট, পয়েন্ট ক্যালিপার্স

(গ) প্রিসিশন ইকুইপম্যান্ট; যেমন-মাইক্রোমিটার, ভার্নিয়ার ক্যালিপার্স, ভার্নিয়ার হাইট গেজ

(ঘ) হাই প্রিসিশন ইকুইপম্যান্ট; যেমন-অপটিক্যাল ফ্ল্যাট, সাইন বার।

স্টিল রুলের প্রকারভেদ ঃ

আকৃতি ও ব্যবহার অনুযায়ী স্টিল রুল বা স্কেলকে নয় ভাগে ভাগ করা হয়। যেমন-

১। প্লেইন স্টিল রুল (Plain Steel Rule)

২। স্টিল টেপ রুল (Steel Tape Rule)

৩। এন্ড রুল (EndRule) 

৪। ফিলেট রুল (FilletRule)

৫। হুক রুল (HookRule)

৬। পকেট ক্যালিপার রুল (Poket CaliperRule)

৭। ডেপথ রুল (DepthRule)

৮। কী-সিট রুল (Key-SeatRule) এবং

৯। শ্রিংক রুল (ShringRule)


প্লেইন স্টিল রুল (Plain Steel Rule)

এ ধরনের রুল মেশিনের শপে সবচেয়ে বেশি ব্যবহুত হয়। এটি সাধারণত ৬" বা ১২" লম্বা হয়।

স্টিল টেপ রুল (Steel TapeRule)

এটি মেশিন শপে কদাচিং ব্যবহৃত হয়। তবে নির্মাণ কাজে এর ব্যবহার অধিক। বড় ধরনের গোলাকৃতি বস্তুর ব্যাস পরিমাপের ক্ষেত্রেও এটি ব্যবহৃত হয়।

এন্ড রুল (EndRule)

এ ধরনের রুলের প্রান্তে প্রস্থ বরারব দাগাংকিত থাকে যা কোন ছিদ্রের ভিতরে অপেক্ষাকৃত ছোট ব্যাস নেয়ার কাজে ব্যবহৃত হয়।

ফিলেট রুল (FilletRule)

এটি ঢালু (taper) প্রাস্ত বিশিষ্ট এক ধরনের রুল। কোণ(Angle) পরিমাপের ক্ষেত্রে এটি ব্যবহৃত হয়। 

হুক রুল (HookRule)

এ রুলের এক প্রান্তে হুক থাকে যাতে ঐ হুক বস্তুর সাথে আটকিয়ে নিশ্চিতভাবে পরিমাপ গ্রহণ করা সম্ভব হয়।

পকেট ক্যালিপার রুল (Poket CaliperRule)

এটি এক ধরনের খুদে ভার্নিয়ার বিশেষ। ভার্নিয়ারের মত তা না হলেও এটি দ্বারা ভিতরের ও বাইরের পরিমাপ অনেকটা সঠিকভাবে নেয়া সম্ভব। 

ডেপথ রুল (DepthRule)

কোন ছিদ্রের গভীরতা পরিমাপের জন্য এ স্কেল ব্যবহৃত হয়। 

কী-সিট রুল (Key-SeatRule) 

এটি মূলত সমান্তরাল রেখা টানার কাজের ব্যবহৃত হয়। কোন কী-ওয়ে (Key way) এর ভিতর সমান্তরাল রেখা টানতে হলে দুটি কী-সিট রুল একত্রিত করে তা টানা হয়।

শ্রিংক রুল (ShringRule)

এটি ঢালাই কার্যে অধিক ব্যবহৃত হয়। ঢালাই এর পর ঢালাইকৃত অংশটি যে, কাস্ট আয়রণের ক্ষেত্রে এ সংকোচনের হার প্রতি ফুটে ৪/১২৫ ইঞ্চি।

এটি ছাড়াও গঠন ও ব্যবহার অনুসারে আরো অনেক রকমের রুল আছে। যেমন- সরু রুল (Narrow), দশমিক (উবপরসধষ) রুল, ব্রাশ (Decimal) রুল, খাটো (Short) রুল, ফোল্ডিং (Folding)রুল, মিটার রুল (Meter), বেঞ্চ (Bench) রুল, জিগ-জাগ (Zig-zag)রুল ইত্যাদি।

স্টিল রুল (Steel Rule or Scale)

স্টিল রুল ষ্টেইনলেস ষ্টিলের তৈরী। ইহার দ্বারা দৈর্ঘ্য বরাবর মাপার ঝন্য ব্যবহার করা হয়। স্টিলরুলের উপরিতলের প্রান্ত খুদাই করিয়া মাপের দাগ কাটা থাকে।খালি চোখে দাগ দেয়া যায়। ১/২ মিলি মিটারের কম মাপ দেখার জন্য আতস কাঁচ ব্যবহার করা হয়।

 

চিত্রঃ স্টিল রুল।

নানা আকৃতির এবং নানা মাপের ষ্টিল রুল শিল্প কর্মে ব্যবহার করা হয়। কয়েক মিলিমিটার হইতে একমিটার বা তারও বেশি (১ ইঞ্চির ভগ্নাংশ হইতে ৪ ফুট বা তারও অধিক) মাপের ষ্টিল রুল দেখা যায়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ১৫ মিলিমিটার (৬ইঞ্চি) এবং ৩০ মি.মি. (১২ ইঞ্চি) মাপের ষ্টিল রুল ব্যবহার করা হয়। এইগুলি ১ মি.মি. অথবা ১/২ মি.মি. দাগ দ্বারা বিভক্ত থাকে। ইঞ্চির স্কেল ১০ শ, ২০ শ, ৫০ শ এবং ৬৪তম ইত্যাদি ভাগে বিভক্ত থাকে। কোন কোন স্কেলের উভয় পার্শ্বে দাগ কাটা থাকে। মাপের সুবিধার জন্য অনেক রুলের প্রান্ত হইতে কাটা দাগ ধরা হয়।

স্কেলের (ঝপধষব) বিভিন্ন পরিভাষা

স্কেল মার্ক

কোন রেখায় সমদূরত্বে নির্ধারিত এক বা একাধিক মান নির্দেশক মাপনযোগ্য অঙ্কিত দাগকে স্কেল মার্ক বলে।

স্কেল দৈর্ঘ্য 

কোন রেখার প্রথম হতে শেষ পর্যন্ত স্কেল মার্কের মধ্যবর্তী দৈর্ঘ্য যা প্রত্যেক ক্ষুদ্রতম স্কেল মার্ককের নির্দিষ্ট অবস্থান দিয়ে অঙ্কিত থাকে তাকে স্কেল দৈর্ঘ্য বলে।

স্কেল রেঞ্জ 

কোন স্কেল মার্কের মধ্যবর্তী সর্বশেষ সীসাকে স্কেলের রেঞ্জ বলে। স্কেল রেঞ্জকে সাধারণত আপার এবং লোয়ার লিমিটের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। যেমন- ৫০ মি.মি. হতে ৭৫০ মি.মি.।

স্কেল স্পেসিং

স্কেল দৈর্ঘ্যরে একই রেখা বরাবর স্কেল মার্কের পাশাপাশি দুটো রেখার মধ্যবর্তী দূরত্বের পরিমাণকে স্কেল স্পেসিং বলে। স্কেলে মাপনযোগ্য এককের পরিবর্তে একে দৈর্ঘ্য মাপের এককের প্রকাশ করা হয়। 

স্কেল ইন্টারভেল

কোন স্কেলের মান এবং অনুরূপ দুটো স্কেল মার্কের পাশাপাশি বা ধারাবাহিক মানের মধ্যে পার্থক্যকে স্কেল ইন্টারভেল ((Scale interval) বলে। স্কেলের উপর অঙ্কিত নাম্বারের এককের পরিমাণের মাধ্যমে স্কেল ইন্টারভেলের মান প্রকাশ করা হয়।

স্কেল নাম্বারিং

স্কেলের উপর মার্ক করা সেট অব নাম্বারকে স্কেলের নাম্বারিং বুঝায় যা স্কেলের মাপের পরিমাণ নির্দেশ করে অথবা কেবলমাত্র সংখ্যা সূচক বিন্যাসের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়।

মুভিং স্কেল

ইনস্ট্রুমেন্টের যে কোন চলমান অবস্থায় স্থির সূচকের সাথে সম্পর্ক রেখে চলমান স্কেলে মান নির্দেশ করাকে মুভিং স্কেল বলে।

ব্যবহারবিধি

সঠিক পরিমাপ গ্রহণের জন্য স্টিল রুল সতর্কতার সাথে ব্যবহার করা উচিত। এ লক্ষ্যে কতগুলো কৌশল অবলম্বন করা যায়।

(i) সাধারণত স্কেল এর প্রান্তে বিনষ্ট হয়। সুতরাং স্কেলের প্রান্তসীমা কখনই পরিমাপ্য বস্তু ধারসীমায় (Edge) বসানো ঠিক নয়। এটি শুধুমাত্র স্কেলের প্রান্তরেখা বিনষ্ট হতে রক্ষার জন্যই নয় বরং স্কেলের প্রান্তসীমা এবং বস্তুর ধারসীমার উপর সঠিকভাবে বসানো খুবই অসুবিধাজনক।

(ii) পরিমাপ্য বস্তুর উপর দিয়ে স্কেল কখনই বিছানো (Laid down) ঠিক নয়। কেননা, তাতে স্কেলের দাগাংকনগুলো পরিমাপ্য তলের সাথে প্রত্যক্ষভাবে থাকে না এবং ফলে পরিমাপ গ্রহণে অসুবিধা হয়।

স্টিল রুলের ব্যবহারে সাধারণ ত্রুটি

স্টিল রুলের সঠিক ব্যবহারের উপর মাপের সঠিকতা নির্ভর করে। অনেকেই মাপের সঠিক পদ্ধতি না জানায় নির্ভুল মাপ গ্রহণ করতে পারে না।

(ক) বস্তুর প্রান্তে রুল স্থাপন বিধিসম্মত করতে না পারায় বেশির ভাগ সঠিক মাপ পাওয়া যায় না। এটা মাপের একটি সাধারণ ত্রুটি টির কারণ ঃ

(১) বস্তুর প্রান্তের সাথে রুলের প্রান্ত একই রেখার সঠিকভাবে স্থাপন করা কঠিন।

(২) রুলের প্রান্ত দীর্ঘদিন ব্যবহারে ক্ষয়প্রাপ্ত হওয়ায় প্রান্ত হতে মাপ গ্রহণ করলে সঠিক মাপ পাওয়া যাবে না।

(খ) অন্য খারাপ ব্যবহার পদ্ধতি হলো স্টিল রুলকে বস্তুর উপর অসমতলভাবে স্থাপন করে ব্যবহার করা। এতে রুলের পুরুত্বের জন্য মাপের দাগ এবং বস্তুর মধ্যে দূরত্ব থাকায় সঠিক মাপ পাঠ করা যায় না।

স্টিল/মেজারিং টেপ (Steel/Measuring Tape

স্টিল টেপ প্রায় স্টিল টেপ রুলের মতই তবে খুবই নমনীয়। এটা সাধারণত বেশি লম্বা দূরত্ব পরিমাপে ব্যবহার হয়। এই টেপ ৩/৮ রহ চওড়া এবং ২৫ভঃ হতে ২০০ভঃ লম্বা হয়।

 

চিত্রঃ স্টিল টেপ।

স্টিল টেপ ব্যবহার 

মেশিন সপের কাজে স্টিল টেপ রুল বেশি ব্যবহার করা হয় না। বড় যন্ত্রাংশের ননপ্রিসিশন মাপ গ্রহণে যেমন বিমানের পাখার দৈর্ঘ্য, বিমানের কাঠামো এবং টারবাইনের রোটর বা কেসিং ইত্যাদি এবং কনস্ট্রাকশন কাজে বেশি ব্যবহার হয়। স্টিল টেপ রুলের সাধারণত ২স হয়ে থাকে। যে সকল স্টিল রুলের দৈর্ঘ্যরে বেশি সাধারণত যেখানে কটন টেপ ব্যবহার করা হয়। স্টিল টেপ রুল একটি স্টিলের আধারের মধ্যে কুন্ডলীর আকারে আবদ্ধ থাকে। এর এক পার্শ্ব সে.মি. এবং অপর পার্শ্ব ইঞ্চিতে দাগ কাটা থাকে। 

স্টিল টেপ রুল ব্যবহার ত্রুটি

স্টিল টেপ রুলের ব্যবহারে সাধারণত নিচের ত্রুটি টিগুলো হয়ে থাকেঃ

১। টেপের টানের প্রভাব।

২। বস্তুর সতমল এবং সমান্তরাল অবস্থায় মাপ গ্রহণ করা। উল্লেখিত ত্রুটি টি দুটি দূর করা খুবই কঠিন। সে জন্য বড় যন্ত্রাংশ অধিক টলারেন্স ব্যবহার হয় সেগুলো মাপ গ্রহণে টেপ রুল ব্যবহার করা যেতে পারে।

৩। যে সকল গোলাকার বস্তুর ব্যাস ক্যালিপার্স এর সাহায্যে মাপ নেওয়া সম্ভব নয় সেগুলো টেপের সাহায্যে গ্রহণ করা হয়। টেপের সাহায্যে গোলাকার বস্তুর পরিধির মাপ গ্রহণে কিছু ত্রুটি টি থেকে যায়। 

ট্রাই স্কোয়ার

ট্রাই স্কোয়ার বাংলায় মাটাম নামে পরিচিত। ইহা দ্বারা কোন বস্তুর সন্নিহিত দুইটি উপরিভাগ পরস্পরের সহিত এক সমকোণে ৯০০ অর্থাৎ বর্গ অবস্থানে (Square) আছে কিনা প্রধানতঃ তাহাই পরীক্ষা করা হয়। এই জন্য ইহাকে ট্রাই স্কোয়ার বলা হয়। ইহার সাহায্যে বস্তুর উপরিভাগের সমতলতা (Flatness) পরীক্ষা বা মার্কিং করার সময় সরল রেখাও টানা যায়। 

 

চিত্রঃ ট্রাই স্কোয়ার।


ট্রাই স্কোয়ার শক্ত ইস্পাতের তৈয়ারী এবং ইহার দুইটি অংশ বা বাহু পরষ্পরের সঙ্গে ৯০ কোণ করিয়া যুক্ত থাকে। মোটা ভারি অংশকে স্টক (Stock) এবং পাতলা অংশকে ব্লেড (Blade) বলা হয়। বাহু দুইটির সংযোগস্থল ভিতরের দিকে এবং বাহিরের দিকের কোণদ্বয় ৯০  অর্থাৎ এক সমকোণ এবং মাপ লওয়ার বা পরীক্ষা করার সুবিধার জন্য সামান্য ভিতর কোণে খাঁজ কাটা থাকে। ইহাকে বার স্লট (Burr-Slat) বলা হয়। টাই স্কোয়ারের দৈর্ঘ্য মাপ দ্বারা উহার  ব্লেডের দৈর্ঘ্যকে বুঝান হয়। সাধারণতঃ ইহা ২৫ মি.মি. ক্রমে বর্ধিত ৫০ মি.মি. হইতে ১৫০ মি.মি. পর্যন্ত এবং ৫০ মি.মি. ক্রম বর্ধিত হইয়া ২০০ মি.মি. হইতে ৪০০ মি.মি. পর্যন্ত হইয়া থাকে। ক্ষুদ্র বস্তুর জন্য ছোট ট্রাই-স্কোয়ার ব্যবহার করা সুবিধাজনক। কাজের সুবিধার জন্য ট্রাই-স্কোয়ারের  ব্লেডের মি.মি. বা ইঞ্চি স্কেলে দাগ কাঁটা থাকে। দাগ বিহীন প্লেইন (Plain) ট্রাই স্কোয়ারও আছে।

ট্রাই-স্কোয়ার দুই প্রকার হইয়া থাকে যথাঃ

(ক) সলিড (Solid) 

(খ) এ্যাডজাস্টেবল (Adjustable)

সলিড ট্রাই-স্কোয়ারের ‘ষ্টক’ ও ‘ ব্লেড’ স্থায়ীভাবে সংবদ্ধ করা থাকে। ইহার  ব্লেডের দৈর্ঘ্য সর্বদা একই থাকে।

এ্যাডজাস্টেবল ট্রাই-স্কোয়ারের ষ্টক ও বেøড স্থায়ীভাবে যুক্ত থাকে না। ফলে, ব্লেডের কার্যকরী অংশকে প্রয়োজন মত ছোট বাবড় করা যায়। ষ্টকের স্ক্রু ঢিলা করিয়া ষ্টকটিকে সরাইয়া বেøড ছোট বড় করা হয়। ছোট বড় ট্রাই স্কোয়ারআলাদা আলাদা ব্যবহার না করিয়া এই প্রকার ট্রাই স্কোয়ারের সাহায্যে ক্ষুদ্র বৃহৎ বস্তুর মাপ নেওয়া যায়। নির্ভুলতার দিক হইতে সলিড ট্রাই-স্কোয়ারই উত্তম এবং নির্ভরযোগ্য। এই জন্য অধিকাংশ স্থলে ‘সলিড’ ট্রাই-স্কোয়ারই ব্যবহৃত হইয়া থাকে।

ট্রাই স্কোয়ারের ব্যবহার (Use)

১। অধিকাংশ ক্ষেত্রে লে-আউট (Lay-out) কাজে মাটাম ব্যবহার করা হয়। ‘হ্যাক-স’ অথবা চিজেলে কাঁটা পরস্পর সন্নিহিত প্রান্তদ্বয় পরিমাপ করার ক্ষেত্রে এবং তাহাদের যথার্থ অবস্থান নির্ণয়ের জন্যও ব্যবহার করা হইয়া থাকে। তাছাড়া মেশিনে কাঁটা, ‘স’ বা করাতে কাঁটা, প্লোনারে কাঁটা, চিজেলে কাঁটা তল সমূহ পরীক্ষার জন্যও ব্যবহার করা হয়। থিকনেস গেজ বা ফিলার গেজ ব্যবহার করিয়া তল পরীক্ষা করা যায়। 

২। সীট বা পাত প্রভৃতি কাঁটিতে হইবে নির্দেশক চিহ্ন হিসাবে পাতের উপর দাগ দেওয়া হয়। নির্দেশক দাগ প্রয়োজনীয় বিন্দুতে এবং পাতের প্রান্তের সঙ্গে সমকোণে থাকিতে হইবে। সীট বা পাত খুব বড় হইলে কার্পেন্টার স্কয়ার (Carpenter`s Square) ব্যবহার করিতে হয়। এক হাতে পাতের প্রান্তের সঙ্গে শক্ত করিয়া ষ্টক (Stock) চাপিয়া ধরিয়া অন্য হাতে নির্দেশক দাগ ব্লেড (Blade) বরাবর টানিতে হয়।

৩। পাতের চর্তুপাশে দাগ টানিতে হইলে যে কোন প্রান্ত (Edge) এবং এক তলে (Face) x চিহ্ন দিয়া লইবেন, যাহাতে কাজের প্রান্ত এবং তল সহজেই বুঝা যায়। সমকোণে দাগ টানার জন্য কাজের প্রান্তের সঙ্গে ষ্টক আটকাইয়া তল বরাবর দাগ টানিয়া লইবেন। প্রত্যেক প্রান্তে দাগ টানার পর পাতটি উল্টাইয়া বিপরীত তলে অনুরূপভাবে দাগ টানিবেন। মোচড়ান হইতে নিষ্কৃতি পাওয়ার জন্য পাতের প্রান্ত ক্ষেত্রে কার্পেন্টার স্কয়ার ব্যবহার করিতে হইবে।

ট্রাই স্কোয়ারের যত্ন (Care of Aquares)

স্কয়ারের প্রতিটি অংশ উত্তমরূপে পরিষ্কার করিয়া রাখিবেন, মরিচা নিবারনে জন্য সামান্য তেলের প্রলেপ লাগাইবে। সে কাজের নিমিত্ত স্কয়ার নির্মাণ করা হইয়াছে তাহা ভিন্ন অন্য কাজে ব্যবহার করিবেন না। ট্রাই স্কয়ারের ষ্টক ও ব্লেড পরস্পর সংযোগ ঢিলা হইলে তাহা বাতিল করিয়া দিবেন। দীর্ঘ দিনের জন্য স্কয়ার রাখিয়া দিতে হইলে তাহাতে উত্তমরূপে তেল অথবা মরিচা প্রতিরোধক রাসায়নিক দ্রব্য (Rust-prevetire Compound, oiled paper) মাখিয়া যত্নের সাথে বাক্সে অথবা তাকের উপর রাখিয়া দিবেন।

চাঁদা (Protractor)

এটি কোণ পরিমাপক অসূক্ষ্ণ যন্ত্র। যে কোন কোণ পরিমাপ, অঙ্কন, লে-আউট বা কোণ (Angle) পরীক্ষা করার জন্য যে ইনস্ট্রুমেন্ট ব্যবহৃত হয় তাকে চাঁদা (Protractor) বলে। এটি অর্থ- বৃত্তাকার এবং স্বচ্ছ প্লাস্টিক বা টিন দ্বারা তৈরি। কোণ পরিমাপের সময় কৌণিক বিন্দুকে চাঁদার মধ্যবিন্দুতে এবং কোণের এক বাহুকে চাঁদার অনুভূমিক রেখার সাথে মিলাতে হয় এবং কোণের অপর বাহু দ্বারা পরিধিতে কোণের পরিমাপ নির্দেশ করে। চাঁদাটি স্বচ্ছ পদার্থের দ্বারা তৈরি হওয়ায় এতে সুবিধা হয়। চাঁদার পরিধিতে বাম এবং ডান উভয় প্রান্ত হতে যথাক্রমে ডান এবং বাম প্রান্ত ০০  হতে ১৮০ পর্যন্ত দাগাংকিত থাকে। চাঁদা দ্বারা যে কোন কোণ অঙ্কন ও পরিমাপ করা সম্ভব। এটি দ্বারা যে কোন নির্দিষ্ট কোণের সমমানের কোণ অঙ্কন ও পরিমাপ করা যায়। সাধারণ চাঁদাদ্বারা ১ ডিগ্রি পর্যন্তকোণপরিমাপ সম্ভব।

 

চিত্রঃ চাঁদা।


প্রট্রাক্টরের ব্যবহার পদ্ধতি 

ক) কোন কার্যবস্তুর নির্দিষ্ট কোণ নিরীক্ষা করতে প্রট্রাক্টরে সঠিক কোণ সেট করে কার্যবস্তুতে স্থাপনের পর যদি কোন ফাঁক বা বিচ্যুতি থাকে তবে ফিলার গেজের ব্লেড কার্যবস্তু এবং প্রট্রাক্টরের মধ্যে স্থাপন করে ক্রটির পরিমাণ নিরীক্ষা করা যায়।

খ) কার্যবস্তুর কোণ সরাসরি মাপ গ্রহণ করা যায়।

গ) ঢালু তলের কোণের পরিমাণ নির্ণয়ে প্রট্রাক্টরের সাথে বেøড ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না। প্রট্রাক্টকে কৌণিক বা ঢালু তলে স্থাপনের পর স্পিরিট লেভেলকে এরূপে ঘুরান হয় যতক্ষণ না লেভেল সঠিকভাবে ভূমিসূত্রে অবস্থান করে। তখন প্রট্রাক্টরের স্কেল হতে সরাসরি কোণের মান পাঠ করে ঢালুর পরিমাণ র্নিণয় করা হয়। প্রট্রাক্টরের সাহায্যে ০ হতে ৯০ পর্যন্ত কোণ সরাসরি মাপা যায়। কিন্তু কোণের মাপ ৯০ হতে বেশি হলে ১৮০ হতে পাঠকৃত মান রিয়োগ করে প্রকৃত মাপ পাওয়া যাবে। 

হোলগেজ (Hole Gauge)

হোলগেজ খুব ক্ষুদ্র ছিদ্র, খাঁজ বা নালীর পরিমাপে ব্যবহৃত সূক্ষ্ণ  অনুভবনশীল (sensitive) টুলস। হোল গেজের অগ্রভাগের স্পিলিট বলকে (split ball) হাতলে সংযুক্ত নবের (knob) সাহায্যে এডজাস্ট করে বলের ব্যাস বড় বা ছোট করা যায়। পরিমাপের সময় ছিদ্র বা খাঁজের আনুমানিক মাপ অনুযায়ী গেজ নির্বাচন করে গেজের অগ্রভাগের ফাঁক সর্বনিম্ন অবস্থানে রেখে গেজকে ছিদ্রে প্রবেশ করায়ে নবকে ঘুরিয়ে ফাঁককে প্রসারিত করে মাপ গ্রহণ করা হয়। মাইক্রোমিটারের সাহায্যে অগ্রভাগের বলের উপর মাপ গ্রহণ করা হয়।


চিত্রঃ হোলগেজ।


স্মল হোল গেজ (Small hole gag)

ইহা চারটি অথবা অধিক সংখ্যক যন্ত্রের সেট হয়ে থাকে। হই দ্বারা ক্ষুদ্র ছিদ্র, নালী, খাঁজ ইত্যাদির মাপ লওয়া যায়। 

 

চিত্রঃ স্মল হোল গেজ।

ইহাতে উপযোজন(adjust) করার উপযোগী গোলাকৃতি মাপক(measuring member) আছে। ইহাকে ছিদ্রের মধ্যে প্রবেশ করাইবার পর হাতলের শেষ প্রান্তের নালিং করা স্ক্রু ঘুরাইলে গোলাকার বল আকৃতির মাথা বৃদ্ধি পাইয়া ছিদ্রের ব্যাস পূর্ণ করে। অতঃপর ইহার সাহায্যে উহা আবদ্ধ করিয়া মাইক্রোমিটারের সাহায্যে বলের মাপ লইয়া ছিদ্রের মাপ নির্ণয় করা হয়।


টর্ক গেজ (Torque Gauge)

টর্কগেজ ক্লক ওয়াইজ এবং কাউন্টার ক্লক ওয়াইজ টর্ক বা টর্শন টেস্টিং এর উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়। দুই ধরণের টর্ক গেজ শিল্প কারখানায় ব্যবহৃত হয়ঃ

(ক) মেকনিক্যাল টর্কগেজ

(খ) ডিজিটাল টর্কগেজ

  

চিত্রঃ মেকনিক্যাল টর্কগেজ।

চিত্রঃ ডিজিটাল টর্কগেজ।

ডিজিটাল টর্ক গেজ গ্রাফিক L C D ডিসপ্লে দ্বারা মান পদর্শিত হয়। ডিজিটাল টর্ক গেজ টর্ক-সেন্সর বা ট্রান্ডিউসার এবং সফ্ট ওয়্যার  লাগানো থাকে। এটি একটি ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস যা টর্ককে ইলেকট্রিক্যাল সিগনালে পরিবর্তন করে। সফ্ট ওয়্যার ইলেকট্রনিক্স সিগনালকে ভোল্টেজের মাধ্যমে টর্ক ট্রান্ডিউসার টর্ক ভ্যেলুতে রুপান্তর করে ডিসপ্লেতে প্রদর্শন করে। টর্ক নির্ণয়ের জন্য সাধারণত নিউনট x মিটার (Nm) বা পাউন্ড x ইঞ্চি (Ibin) একক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

কন্বিনেশন গেজ (Combination Gauge)

এক পার্শ্বে মাঝ বরাবর খাঁজ (slot) কাঁটা একটি বার ইঞ্চি বা ৩০ সে.মি. ষ্টীল রুলের সঙ্গে ক্ল্যাম্পিং স্ক্রুর (clamping screw) সাহায্যে একটি সেন্টার হেড (center head), একটি স্কয়ার হেড (square head) ও একটি প্রট্রাক্টর (protrector) একত্রে আটকান থাকে। ইহাকে একটি সেট রুপে গণ্য করা হইয়া থাকে। ষ্টীল রুলটি অন্য তিনটি যন্ত্রের ব্যবহারিক ভিত্তি (base) রুপে ব্যবহৃত হয়। যন্ত্র তিনটিকে একই সঙ্গে ব্যবহার করা যায় না। একটি ব্যবহারের সময় অন্য দুইটি খুলিয়া রাখিতে হয়। ক্ল্যাম্পিং স্ক্র ঢিলা করিয়া ষ্টীল রুলের উপর দিয়া রুলের এক প্রান্ত হইতে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত প্রত্যেকটি যন্ত্রকে সরান যায় এবং যে কোন দূরত্বে আবদ্ধ করা যায়। 

 

চিত্রঃ কন্বিনেশন সেট/গেজ।

নিম্নে প্রত্যেকটি যন্ত্রের বর্ণনা দেওয়া হইলঃ 

স্কয়ার হেড

খাঁজ কাঁটা ষ্টীল রুলের উপর সচল একটি স্কয়ার বিশেষ। হইা যুক্তভাবে কন্বিনেশন ট্রাই-স্কয়ার (comtrination try-square) নামেও পরিচিত। স্কয়ার হেডে একটি বায়ু বুদবুদ (spirit level) আছে। ষ্টীল রুলটিতে মেট্রিক এবং ইঞ্চিতে ১/(৬৪ ) " ,১/(৩২ ) ",১/১৬  " এবং১/( ৮) " বিভাগ করা থাকে। স্কয়ার হেডটি ষ্টীল রুল হইতে খুলিয়া সাধারণতঃ বায়ু বুদবুদ যন্ত্র রুপে ব্যবহার করা যায়।ষ্টীল রুললাগানো অবস্থায় ইহাকে মাটাম (try square) রুপে ব্যবহার করা যায়। ইহা ছাড়া ৪৫০ কোণ নিরুপনের কাজেও ব্যবহার করা যায়।

সেন্টার হেড

ইহা কন্বিনেশন সেটের অঙ্গরুপে স্কয়ার হেডের স্থলভিষিক্ত হইয়া সিলিন্ড্রিক্যাল বস্তুর কেন্দ্র নির্ণয়ের উপকরণ হিসাবে কাজ করে। সেন্টার হেড ৯০০ কোণ বিশিষ্ট, ষ্টীল রুল লাগাইলেও উহা দুই ভাগে বিভক্ত হইয়া যায়। কোন সিলিন্ড্রিক্যাল বস্তু মাপার সময় সেন্টার হেডের সমতল পৃষ্ঠ দুইটি বস্তুটির পরিধির স্পর্শক (tangent) রুপে বিরাজ করে।

প্রট্রাক্টর

কন্বিনেশন সেটের অপর সংযোজন ষ্টীল রুলে যে উপায়ে সেন্টার হেড ও স্কয়ার হেড লাগানো হয়। নেই একই প্রট্রাক্টর ষ্টীল রুলের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়। ঘুর্ণিয়মান টারেটের (revolving Turret) উপর ০ হইতে ১৮০ অথবা ০ হইতে ৯০ ডিগ্রী বিভাগ করা থাকে। আনুভূমিক (horizontal) অথবা উলম্ব (Tvertical) কৌণিক মাপ গ্রহণের সুবিধার্থে ইহার সঙ্গে একটি বায়ু বুদবুদ (spirit level) যুক্ত থাকে। ১ কৌণিক মাপ যথার্থভাবে লওয়া যায়। 

একটি কন্বিনেশন স্টে দ্বারা হাইট গেজ, লেভেল প্রটেকটর, লেভেল, ষ্টীল রুল, ডেপ্থ গেজ, মার্কিং গেজ এবং ওলন (plunn bob) ইত্যাদির কাজ করা যায়।

কন্বিনেশন সেটের যত্ন

সর্বদা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করিয়া রাখিবেন, ব্যবহার শেষে মরিচা রোধক তৈল হালকাভাবে লাগাইয়া রাখিবেন। স্কয়ার হেড অথবা অন্য কোন হেড উহাদের ব্যবহারের ক্ষেত্র ব্যাতিত অন্যত্র ব্যবহার করিবেন না। দীর্ঘ দিন অব্যবহৃত অবস্থায় রাখিয়া দিতে হইলে কাগজে মুড়িয়া সতন্ত্র আধারে অথবা তাকের উপর আলাদা ভাবে রাখিয়া দিবেন। 

টোলিস্কোপিং গেজ (Telescoping Gauge

ইহা প্রকৃত পক্ষে একটি হাতল এবং সমকোণে অবস্থিত দুইটি বাহুর সমষ্টি। ক্ষুদ্রতর বাহুটি বৃহত্তম বাহুর ভিতর প্রবেশ করিতে সমর্থ। ইন-সাইড ক্যালিপার্স দ্বারা যে সমস্ত নালী, ছিদ্রের মাপ লওয়া যায় ইহা দ্বারাও ঐ প্রকার মাপ লওয়া যায়। 

 

চিত্রঃ টোলিস্কোপিং গেজ।

ইহার দ্বারা অবশ্য ৬ ইঞ্চির (১৫০মি.মি.) বেশি মাপ লওয়া যায় না। ভিতর দিকে ছিদ্রের ব্যাস, বড় ছিদ্রের ব্যাস দুই দিকের দূরত্বের মাপ লওয়া সহজ। ইহার হাতলের প্রান্তে নার্লিং করা স্ক্রুর সাহায্যে যন্ত্রস্থ ঝম্পক (plumger) টিকে আবদ্ধ (locked) করা যায়।  ফলে বাহু দুইট স্থির থাকে, মাপ পরিবর্তনের আশঙ্কা আর থাকে না। মাইক্রোমিটারের সাহায্যে এই মাপ নিরূপণ করা যায়।

ক্যালিপারস (Calipers)

এটা এক ধরনের সাধারণ কিন্তু অতীব প্রয়োজনীয় অসূক্ষ্ণ পরিমাপ যন্ত্র। যে কোন ধরণের পরিমাপ পরিদর্শন, যেগুলো স্কেল দ্বারা সরাসরি সম্ভব হয় না, সেগুলো ক্যালিপার দ্বারা পরিদর্শন করা হয়। যেমন-লেদ মেশিনে অপারেশনরত কোন শ্যাফট এর টানিংকালে এটা নির্দিষ্ট পরিমাপে পৌছেছে কিনা, তা অনুসমান করার জন্য ক্যালিপার ব্যবহার করা হয়। পরে ক্যালিপারটি স্কেলের সাথে মিলিয়ে পরিমাপ সম্বন্ধে ধারণা করা হয়। ক্যালিপারকে তাই স্কেলের সহায়ক(accessories of seale) যন্ত্র বলা হয়। ক্যালিপারের দুটি লেগ থাকে। যেগুলো উপরের প্রান্তে একত্রে সংযুক্ত থাকে এবং নিচের প্রান্তে পরিমাপ গ্রহণের উপযোগী করে তৈরি করা হয়। 

ক্যালিপারের শ্রেণিবিভাগ (Classification of seale)

ক্যালিপার প্রধানত দুই প্রকার। যথা-

স্প্রিং টাইপ ক্যালিপার (SpringTypeCaliper)

ফার্ম জয়েন্ট টাইপ ক্যালিপার (Firm Joing Type Caliper)

স্প্রিং টাইপ (Spring

স্প্রিং ক্যালিপারের লেগগুলো সুবিধাজনক ইস্পাত দ্বারা তৈরি। লেগের চূড়ান্ত প্রান্তদ্বয় সঠিকভাবে শক্তায়িত ও তাপ ব্যবস্থায়িত(heat treated) করে তৈরি করা হয়। ব্যবহৃত স্প্রিংটি যথাযথভাবে শক্তায়িত ও টেমপারিং করা। প্রতিটি স্প্রিং ক্যালিপারে লেগদ্বয়ের কার্যকরী প্রান্তগুলো আদর্শগত সাদৃশ্যপূর্ণ এবং সংযোগ বিন্দু হতে সমদূরত্বে অবস্থিত। লেগের প্রস্থচ্ছেদ আয়াতাকার বা গোলাকার হতে পারে। একটি সমৃণ প্যাঁচ-কাটা স্ক্রু-এর সাহায্যে খাঁচকৃত সলিড নাট দ্বারা করা হয়। লেগের উপরের প্রান্ত ফালফ্রাম রোলার ও স্প্রিং দ্বারা সংযুক্ত থাকে। স্প্রিংটি লেগদ্বয়কে যথেষ্ট টাইট রাখতে সাহায্য করে। স্প্রিং ক্যালিপার আবার দুই ধরনের হতে পারে, যথা- 

(i) আউট সাইড ক্যালিপার এবং 

(ii) ইনসাইড ক্যালিপার।


আউট সাইড স্প্রিং ক্যালিপার (Outside Spring Caliper)

গোলাকার বা সমতল বস্তুর বাইরের পরিমাপের জন্য এ যন্ত্র ব্যবহৃত হয়। যেহেতু লেগদ্বয়ের উপরি অংশ স্প্রিং ও নাট দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, তাই এটি দ্বারা সঠিক ও নির্ভুলভাবে পরিমাপ গ্রহণ সম্ভব হয়। দুটি বক্র লেগ, একটি স্প্রিং এবং একটি স্ক্রু দিয়ে এ ক্যালিপার গঠিত।

 

চিত্রঃ আউট সাইড স্প্রিং ক্যালিপার।


ইনসাইড স্প্রিং ক্যালিপার (Inside Spring Caliper)

স্লট, ছিদ্র বা কীওয়ে এর ভিতরের পরিমাপ নেয়ার কাজে ইনসাইড ক্যালিপার ব্যবহৃত হয়। এ ক্যালিপার দ্বারা পরিমাপ গ্রহণের ক্ষেত্রে, সাধারণত হুক রুলের এক প্রান্তে একটি লেগ আটকিয়ে নাট দ্বারা অন্য লেগ পরিমাপের আনুমানিক কাছাকাছি আনয়ন করতে পারে সঠিক পরিমাপ গৃহীত হয়। ইনসাইড ক্যালিপারের লেগদ্বয় মাইক্রোমিটারের সাথে সমন্বয় করেও পরিমাপ গৃহীত হয়। 

 

চিত্রঃ ইন সাইড স্প্রিং ক্যালিপার।

ফার্ম জয়েন্ট টাইপ ক্যালিপার (Firm Joing Type Caliper)

জানা পরিমাপ নিরীক্ষার জন্য এ পরিমাপ যন্ত্র ব্যবহৃত হয়। লেগদ্বয়ের উপরের প্রান্ত একটি পিন সংযুক্ত থাকে। লেগের পরিমাপ-প্রান্তদ্বয় অবশ্যই ফাটল ও বাঁকন মুক্ত হতে হয়। অপেক্ষাকৃত কম সঠিকতা প্রয়োজন এবং দ্রুততার সাথে পরিমাপের প্রাথমিক ধারণা প্রয়োজন-এরূপ ক্ষেত্রে ফার্ম জয়েন্ট টাইপ ক্যালিপার ব্যবহৃত হয়। এ ক্যালিপার ৪ (চার) ধরনের হতে পারে। যথা-

(i) আউট সাইড ফার্ম জয়েন্ট ক্যালিপার

(ii) ইনসাইড ফার্ম জয়েন্ট ক্যালিপার

(iii) ট্রান্সফার ফার্ম জয়েন্ট ক্যালিপার

(iv) হারমোফ্রোডাইট ফার্ম জয়েন্ট ক্যালিপার


আউট সাইড ফার্ম জয়েন্ট ক্যালিপার (Outside Firm Joint Caliper)

এটি ব্যবহারের উদ্দেশ্যে ও ক্ষেত্র অনুযায়ী স্প্রিং টাউপ আউট সাইড ক্যালিপারের মাত্র। এটি দ্রুততার সাথে সমন্বিত (adjust) করা যায়। তবে সংযোগ বিন্দু ঢিলা এবং অস্থিতিশীল। 

 

চিত্রঃ আউট সাইড ফার্ম জয়েন্ট ক্যালিপার।

ইনসাইড ফার্ম জয়েন্ট ক্যালিপার (Inside Firm Joint Caliper)

 যখন অধিক তাড়াতাড়ি এবং তত সূক্ষ্ণ নয়, এমন পরিমাপের প্রয়োজন হয়, তখন এ ধরনের ক্যালিপার ব্যবহৃত হয়।

 

চিত্রঃ ইনসাইড ফার্ম জয়েন্ট ক্যালিপার।

ট্রান্সফার ফার্ম জয়েন্ট ক্যালিপার (Transfer Firm Joint Caliper)

দুর্গম ক্ষেত্রের পরিমাপ গ্রহণের জন্য এ ক্যালিপার ব্যবহৃত হয়। এক্ষেত্রে পারিমাপ গ্রহণের পর ক্যালিপারের লেগদ্বয় সরাসরি অপসারণ সম্ভব হয় না।তবে পরিমাপ গ্রহণ সমাপ্ত হওয়ার পর লেগদ্বয় অবশ্যই ভাজ করে ভেঙ্গে ফেলতে হয়। অবশ্য এ ক্ষেত্রে আসল পরিমাপ সংরক্ষণ করার জন্য অতিরিক্ত একটি দন্ড ব্যবহার করা হয়। 

  

চিত্রঃ আউট সাইড ট্রান্সফার ফার্ম জয়েন্ট ক্যালিপার।

চিত্রঃ ইনসাইড ট্রান্সফার ফার্ম জয়েন্ট ক্যালিপার।


হারমোফ্রোডাইট ফার্ম জয়েন্ট ক্যালিপার (Hermophrodite Firm Joint Caliper)

একে বেজোড় লেগ (odd leg) বিশিষ্ট ক্যালিপারও বলা যায়। যা আঁচার কাটা বা দাগ টানা কাজে ব্যবহুত হয়।  

 

চিত্রঃ হারমোফ্রোডাইট ফার্ম জয়েন্ট ক্যালিপার।

এর এক পাশের লেগ ডিভাইডারের মত এবং অন্য পার্শ্বের লেগ ক্যালিপারের ন্যায়। একে লে-আউট টুলস বলা যায়। এটি কোন বস্তুর প্রান্তে রেখা অংকন, গোলাকার রেখা অংকন প্রভৃতি কাজের ব্যবহৃত হয়।

ক্যালিপারের ব্যবহার 

ক্যালিপার অতি সাধারণ টুলস হলেও এটি ব্যবহারে কতগুলো সুনির্দিষ্ট বিধি মেনে চলতে হয়।

১। স্প্রিং ক্যালিপার স্কেলে সেট করার সময় শুধুমাত্র নাটের উপর ভিত্তি করাই ঠিক নয়। এতে স্ক্রু প্যাঁচের ক্ষতি হতে পারে। সঠিক পদ্ধতি হলো লেগটি বাম হাতের উপর রেখে ডান হাত দিয়ে আস্তে আস্তে নাট ছেড়ে দিয়ে পরিমাপ এডজাস্ট করা।

২। ক্যালিপার কখনই ঘূর্ণায়মান বস্তুর সংস্পর্শে ব্যবহার করা উচিৎ নয়।

৩। ক্যালিপার দ্বারা শক্ত সারফেসে দাগ টানা অনুচিৎ।

৪। এর প্রান্তগুলো সুতী² বিধায় এগুলোকে সাবধানে রাখা উচিৎ।

৫। ক্যালিপারকে সর্বদাই পরিষ্কার ও তৈরিকৃত (greased) ভাবে রাখা উচিৎ।

ক্যালিপার যে কোন পরিমাপ সরাসরি প্রদান করে না। ভিতরের বাইরের পরিমাপ গ্রহণ করে এর লেগদ্বয় নির্ণেয় স্কেলে স্থানান্তরিত করে পরিমাপ পঠিত হয়। 

  

চিত্রঃ আউট সাইড ক্যালিপার ব্যবহার।

 

চিত্রঃ ইনসাইড ক্যালিপার ব্যবহার।

ভার্নিয়ার ক্যালিপার্সের বিভিন্ন অংশের বা মেক্যানিজমের বর্ণনা

 

চিত্রঃ ভার্নিয়ার ক্যালিপার্স।

চিত্রে ভার্নিয়ার ক্যালিপার্সের বিভিন্ন অংশ দেখান হয়েছে এবং নিচে প্রত্যেক অংশের বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া হলো।

বিম স্কেল (Beam scale)

ভার্নিয়ার ক্যালিপার্সের ফিক্সড ‘জ্য’ এর বর্ধিতম অংশের (এল-আকৃতি) সাথে সাধারণ স্টিল রুলের মত যে স্কল থাকে তাকে বিম স্কেল বা প্রধান স্কেল বলে। ইঞ্চি মাপের ক্যালিপার্সে প্রতি ইঞ্চিকে ১৬, ৬৪ ভাগ করা হয়। কোন কোন ভার্নিয়ার ক্যালিপার্সের উভয় পাশের এক ধারে সেন্টিমিটার এবং অন্য ধারে ইঞ্চিতে দাগাঙ্কিত থাকে। আবার এক পাশে বাইরের মাপ এবং অন্য পাশে ভেতরের মাপ গ্রহণের জন্য স্কেল থাকে।

জ্য (Jaw)

ভার্নিয়ার ক্যালিপার্স দুটো ‘জ্য’ দিয়ে গঠিত। একটি স্থির এবং অপরটি চলমান ‘জ্য’। ‘জ্য’ দুটো একটি অপরটি সাথে সর্বদা সমান্তরাল অবস্থায় থাকে। ‘জ্য’ দুটো ভিতরের দিকের সাহায্যে সাধারণ আউট সাইড ক্যালিপার্সের ন্যায় বাইরের মাপ এবং বাইরের দিকের সাহায্যে ইন-সাইড ক্যালিপার্সে ন্যায় ছিদ্রের ব্রাস এবং খাঁজের  প্রস্থের মাপ নেয়া যায়।

ভার্নিয়ার স্কেল (Vernierscale)

প্রধান স্কেলের সাথে এটা একটি অতিরিক্ত স্কেল । অপেক্ষাকৃত সূ² মাপ গ্রহণে উক্ত স্কেল ব্যবহার হয়। ভার্নিয়ার স্কেল প্রধান স্কেলের ভাগ রেখাকে স্পর্শ করে যাতায়াত করে। চলমান ‘জ্য’ এর সাথে ভার্নিয়ার স্কেল স্থায়ীভাবে আবদ্ধ থাকে। ইঞ্চি মাপে প্রধান স্কেলের ৯, ২৪ বা ৪৯ ভাগ যে স্থান অধিকার করে ভার্নিয়ার স্কেলে ঐ অংশ যথাক্রমে ১০, ২৫, ৫০ বা ৫, ১০, ১৫ ইত্যাদি বা সুবিধাজনক ক্রমে অংক চিহ্ন ব্যবহার করা হয়। জ্য দুটো মুখে মুখে মিলিত হলে প্রধান স্কেল এবং ভার্নিয়ার স্কেলের শূণ্য দাগের মিলিত হবে (যদি যন্ত্রে কোন ক্রুটি না থাকে)।

লকিং স্ক্রু (Locking Screw)

সাধারণত ইঞ্চি মাপের ভার্নিয়ার ক্যালিপার্সে দুটো এবং সেন্টিমিটারের মাপের স্কেলে একটি লকিং স্ক্রু থাকে। ভার্নিয়ার ক্যালিপার্সে মাপ তোলার স্লাইডিং স্ক্রুর সাহায্যে ভার্নিয়ার যুক্ত স্লাইডিং জ্যটি সরে গিয়ে মাপের হেরফের করতে পারে। সেজন্য মাপ তোলার পর লকিং স্ক্রুর সাহায্যে ভার্নিয়ার যুক্ত স্লাইডিং জ্যকে প্রধান বা বিম স্কেলের সাথে আবদ্ধ করতে ব্যবহার হয়।

এডজাস্টিং স্ক্র (Adjusting Screw)

এডজাস্টিং স্ক্রকে ঘুরায়ে ভার্নিয়ারে ‘জ্য’ দুটোকে কার্যবস্তুর সাথে সঠিকভাবে আবদ্ধ করা হয়।

পাঞ্চ চিহ্ন (Punch Mark)

কোন কোন ভার্নিয়ার ক্যালিপার্সের উভয় ‘জ্য’ তে পাঞ্চ চিহ্ন থাকে। উক্ত পাঞ্চ চিহ্ন হতে ভার্নিয়ার ক্যালিপার্সের মাপ ডিভাইডারে তোলা হয়।

স্লাইডিং ব্লেড 

ভার্নিয়ার ক্যালিপার্সের স্লাইডিং ‘জ্য’ এর সাথে স্লাইডিং বেøড সংযুক্ত থাকে। উক্ত স্লাইডিং ব্লেড ক্যালিপার্সের মধ্যাংশ বরাবর গ্রাভে যাতায়াত করে। ভার্নিয়ার ক্যালিপার্সের স্লাইডিং রেডের সাহায্যে তলের গভীরতা মাপ গ্রহণ করা হয়। 

ভার্নিয়ার স্কেলের মূলনীতি ব্যাখ্যা 

ফ্রান্সের বৈজ্ঞানিক পিয়ার ভার্নিয়ার ১৯১৩ সনে পরিমাপের জন্য দুটো পৃথক দাগাঙ্কিত পাশাপাশি স্কেলের মধ্যে সম্পর্ক করে অতি সূ²তায় ও নির্ভুলভাবে পরিমাপের কৌশল আবিস্কার করেন। পিয়ার ভার্নিয়ারের নামানুসারে উক্ত স্কেরকে ভার্নিয়ার স্কেল বলে এবং যে যন্ত্রে ভার্নিয়ার স্কেলের পাঠ নেয়ার ব্যবস্থা থাকে তাকে ভার্নিয়ার ইনস্ট্রুমেন্ট বলে। 

মাপন যন্ত্র উৎপাদনের উক্ত নীতি অবলম্বনে সূ² পরিমাপের যুগান্তকারী দিক উন্মোচিত হয়। যেমন- মনে করি ২৬ সি.মি. একটি সরল অংশ বা রেখার মাপ গ্রহণের ৫ সি.মি. এবং ৬ সি.মি. দৈর্ঘ্যরে দুটো রড (স্কেলবিহীন) আছে। যদি ৫সি.মি. রড দ্বারা মাপ গ্রহণ করা হয় তবে ১ সি.মি. অবশিষ্ট থাকবে যা অনুমান করে বলতে হবে। আর যদি ৬সি.মি. রডটি ব্যবহার করা হয় তবে ২ সি.মি. অবশিষ্ট থাকবে। উল্লেখিত উদাহরণে ৫ সি.মি. রড দ্বারা পাঁচ বারে ২৫ সি.মি. পাওয়া যাবে এবং অবশিষ্ট ১সি.মি. সঠিকভাবে মাপের জন্য ৬সি.মি. রডটি ৫ সি.মি. রডের সাথে পাশাপাশি স্থাপন করলে পাওয়া যাবে। অতএব, যখন সামান্য পৃথক আকৃতির দুটি স্কেল বা ভিডিশনকে পাশাপাশি ব্যবহার করা হয় তখন তাদের মধ্যে উৎপন্ন প্রভেদ সঠিক পরিমাপ গ্রহণ সক্ষম। ব্যবহারিক ক্ষেত্রে উক্ত নীতি অবলম্বন করে ভার্নিয়ার ক্যালিপার্স (verniercaliper) উদ্ভাবন করা হয়েছে।

ভার্নিয়ার ক্যালিপার্সের ব্যবহার পদ্ধতি

ভার্নিয়ার ক্যালিপার্স দ্বারা বস্তুর বাইরের মাপ গ্রহণ করতে প্রথম মাপন অংশের পরিমাণ অনুযায়ী আনুমানিক মাপ স্থির করে লকিং স্ক্রুকে ঢিলা করে স্লাইডিং ‘জ্য’ কে এমনভাবে সরাই যেন ‘জ্য’ দুটির মধ্যবর্তী ফাঁক বা দূরত্ব ঐ মাপ হতে কিছু বেশি হয়। এখন ক্যালিপার্সের ‘জ্য’ দুটিকে বস্তুর মাপ গ্রহণাংশে লম্বাভাবে স্থাপন করে স্লাইডিং ‘জ্য’ কে এমনভাবে সরাতে হবে যেন আলতোভাবে বস্তুটির গায়ে স্পর্শ করে এবং কোন অতিরিক্ত চাপ না দেয়। ডান দিকের লকিং স্ক্রুকে আবদ্ধ এডজাস্টিং স্ক্রু দ্বারা ভার্নিয়ারকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। মাপ নেয়ার পর বাম দিকের লকিং স্ক্রুকে আবদ্ধ ক্যালিপার্সকে সাবধানে বের করে আনতে হবে এবং স্কেল মাপ পাঠ করতে হবে। 

ইন-সাইড ক্যালিপার্সের ন্যায় কোন ছিদ্রের ব্যাস বা খাঁজের চওড়ার মাপ গ্রহণে করতে পূর্বের ন্যায় আনুমানিক মাপ অনুযায়ী লকিং স্ক্রু দুটি ঢিলা করে স্লাইডিং ‘জ্য’ কে এনমভাবে সরাতে হবে যেন ‘জ্য’ দুটিকে বাইরের দিকের ব্যবধান, নির্ণয়কৃত মাপ হতে কিছু কম হয়। ক্যালিপার্সের ‘জ্য’ দুটিকে ছিদ্র বা খাঁজের মধ্যে সমান্তরালভাবে প্রবেশ করায়ে স্লাইডিং ‘জ্য’ কে ডান দিকে সরাতে হবে যেন ‘জ্য’ দুটি শুধুমাত্র কার্যবস্তুতে স্পর্শ করে। এখন ডান দিকে লকিং স্ক্রুকে আবদ্ধ করে ক্যালিপার্সকে সাবধানে বাহির করতে হবে এবং স্কেলে পশ্চাৎ দিকে হতে মাপ পাঠ করতে হবে। সম্মুখ হতেও মাপের পাঠ নেয়া যায় তবে, সেক্ষেত্রে ‘জ্য’ দুটি চওড়া যোগ করতে হবে। 

ইলেকট্রনিক ডিজিটাল ভার্নিয়ার ক্যালিপার্স 

 

চিত্রঃ ইলেকট্রনিক ডিজিটাল ভার্নিয়ার ক্যালিপার্স।

ইলেকট্রনিক্স ডিজিটাল ভার্নিয়ার ক্যালিপার্সের আবিস্কার মাপ পরিদর্শনের ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী অধ্যায়ের সূচনা করেছে। এই ক্যালিপার্সের সাহায্যে অতিদ্রুত এবং নির্ভুলভাবে সহজেই মাপ পাঠ করা যায়। ডিজিটাল ক্যালিপার্সের সাহায্যে মাপ পাঠ করতে সাধারণ ক্যালিপার্সের ন্যায় কোন হিসাবের প্রয়োজন হয় না। মাপ সরাসির এলসিডি ডিসপ্লে (L. C. D display) হতে পাঠ করা যায়। এই ইনস্ট্রুমেন্টের সূক্ষ্ণতা মেট্রিক পদ্ধতিতে ০. ০১ মি.মি. এবং ইঞ্চি মাপে ০.০০১ ইঞ্চি।

ইলেকট্রনিক্স ডিজিটাল ক্যালিপার্সের ব্যবহার প্রয়োজনীয় সর্তকতা 

১। (CL) বোতাম চাপ দিয়ে পরিমাপের জন্য উপযোগী করতে হবে। 

২। মাপ গ্রহণের সময় ক্যালিপার্সের ‘জ্য’ দুটি অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করলে সমস্যার সৃষ্টি হবে এবং ত্রুটি যুক্ত মাপ পাঠ দিবে।

৩। রোলারকে পরিচারিত করে মাপ গ্রহণ বা জিরো (০) সেটিং করতে হবে। 

৪। মাপ গ্রহণের ‘জ্য’ কে কার্যবস্তুর সাথে এমনভাবে চাপ দিতে হবে যেন কেবলমাত্র গায়ে স্বাভাবিকভাবে স্পর্শ করে।

৫। কোন বোতামকেই অধিক চাপে ব্যবহার করা যাবে না। সকল অবস্থায় বোতামকে মৃদৃভাবে চাপ দিতে হবে।

৬। ক্যালিপার্সের পিছনে একটি প্রিসিশন র‌্যাক আছে। উক্ত র‌্যাককে সর্বদা পরিস্কার রাখতে হবে। র‌্যাকে কোন ময়লা থাকলে ‘জ্য’ সমভাবে স্লাইডিং না হয়ে বাধাপ্রাপ্ত হবে। 

৭। ক্যালিপার্সের সকল অংশই অত্যন্ত সূক্ষ্ণ ভাবে নির্মিত হওয়ায় অতি সাবধানে ব্যবহার করতে হবে এবং কোন অংশকে আলাদা করা যাবে না।

৮। ক্যালিপার্সকে সর্বদা আর্দ্রতা, তৈলাক্ততা, ময়লা ইত্যাদি হতে রক্ষা করবে এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখাতে হবে।

৯। তড়িৎ চুম্বক এবং বৈদ্যুতিক শব্দ দূষণ হতে রক্ষা করতে হবে অন্যথায় ত্রুটি যুক্ত মাপ পাঠ দিবে।  

ভার্নিয়ার ক্যালিপার্স এবং ডিজিটাল ক্যালিপার্সের মধ্যে পার্থক্য


ভার্নিয়ার ক্যালিপাস

ইলেকট্রনিকস ডিজিটাল ক্যালিপার্স

১। মাপ পাঠকারীর দক্ষতা এবং অনুভূতির উপর নির্ভরশীল

১। মাপপাঠ ডিজিটাল মেকানিজমের সঠিকতার উপর নির্ভরশীল।

2২। উৎপাদন তুলনামূলক সহজ।

২। উৎপাদন তুলনামূলক জটিল।

৩। মাপ গ্রহণে হিসাবের প্রয়োজন।

৩। মাপ সরাসরি সংখ্যায় পাওয়া যায়।

৪। ইঞ্চি এবং মিলিমিটার মাপের জন্য পৃথক পাশে স্কেলের প্রয়োজন।

৪। ইঞ্চি এবং মিলিমিটার মাপ গ্রহণে কেবল বোতামের ব্যবহার করেই পাওয়া যায়।

৫। মাপ গ্রহণের পর ‘জ্য’ সরালে পূর্বের মাপ পাঠ করা যায় না।

৫। মাপ গ্রহণের পর হোল্ড বোতামে চাপ দিয়ে ‘জ্য’  সরালে পূর্বের মাপ পাঠ করা যায়।


ভার্নিয়ার ক্যালিপার্সের মাপ/পাঠ কৌশল (Mention the Common uses for Vernier Instruments)

ক) ভার্নিয়ারের (০) শূন্য চিহ্নিত রেখাটি প্রধান স্কেলের কয়টি পূর্ণ ভাগ রেখা অতিক্রম করছে তার মান।

খ) ভার্নিয়ারের কোন রেখাটি প্রধান স্কেলের রেখার সাথে ঠিক মিলিত হয়েছে।

ভার্নিয়ারের শূন্য দাগ হতে ঐ রেখা পর্যন্ত আগের সংখ্যাকে ভার্নিয়ার ধ্রুবক দ্বারা গুন করে প্রধান স্কেলের পাঠের মানকে যোগ করলে কার্যবস্তুর মাপ পাওয়া যাবে।

ভার্নিয়ার ক্যালিপারে ভার্নিয়ার ধ্রুবক (Determine the Vernier Constant of the Vernier Caliper)

প্রধান স্কেলের আকার অনুযায়ী ভার্নিয়ার স্কেলের আকার রৈখিক বা গোল উভয় প্রকার হয়ে থাকে। সকল ভার্নিয়ার স্কেল একই নীতিতে তৈরি হয় না। তৈরির নীতি অনুযায়ী ভার্নিয়ার স্কেলের ধ্রæবক নির্ধারিত হয়ে থাকে।  ভার্নিয়ার ধ্রুবক সংখ্যা দ্বারা, প্রধান স্কেলের ক্ষুদ্রতম একটি ভাগের মাপের তুলনায়, ভার্নিয়ার স্কেলের একটি ভাগের মাপ কী পরিমাণ ক্ষুদ্রতর তা সূচিত হয়। উক্ত ধ্রকের সাহায্যে ভার্নিয়ার স্কেল হতে মাপের পরিমাণ নেয়া হয়। সাধারণত উক্ত ধ্রুবক প্রত্যেক ভার্নিয়ার যন্ত্রে লেখা থাকে। যদি ভার্নিয়ার ধ্রুবক যন্ত্রে লেখা থাকে। 

ভার্নিয়ার ক্যালিপার্সে ক্রটির কারণ

ভার্নিয়ার ক্যালিপার্সের ‘জ্য’ এর অবস্থার উপর মাপের সঠিকতা বিশেষ ভাগে জড়িত। ভার্নিয়ার ক্যালিপার্সের ‘জ্য’ দুটোর সঠিকতা স্বাভাবিক ক্ষয়, মোচড়ায়ে যাওয়া বা বিকৃতি হয়েছে কিনা তা পরীক্ষার জন্য ‘জ্য’ দুটোকে পরস্পরের সাথে আবদ্ধ করে প্রধান এবং ভার্নিয়ার স্কেলের ০ রেখা মিলিত হবে। মিলিত অবস্থায় আলোর কাছে নিয়ে দেখতে হবে ‘জ্য’ দুটোর মধ্যবর্তী ফাঁক দিয়ে কোন আলো আসে কিনা। যদি কোন আলো না আসে এবং উভয় স্কেলের শূন্য দাগ সঠিকভাবে মিলিত হয়, তবে ভার্নিয়ার ক্যালিপাসটি ক্রটি মুক্ত। যদি ‘জ্য’ ক্ষয়প্রাপ্ত বা মোচড়ায়ে যায় তবেক্রটি যুক্ত।  যদি মাপের ক্রটি ০.০০৫ মি.মি. এর বেশি হয় তাহলে ঐ যন্ত্র ব্যবহার না করা এবং ব্যবহার করলে প্রয়োজনীয় মেরামত করতে হবে। যখন স্লাইডিং ‘জ্য’ এর ফ্রেম ক্ষয় হয় বা মোচড়ায়ে যায় তখন সমসরল রেখায় চলে না এবং প্রধান ক্যালিপার্স বিমে বাধা সৃষ্টি করে। 


ভার্নিয়ার ক্যালিপার্সে ক্রটির সংশোধন পদ্ধতি

অনেক দিন ব্যবহার স্বাভাবিক ক্ষয়ের কারণে অথবা বিধিবহির্ভূতভাবে ব্যবহারের জন্য ভার্নিয়ার ক্যালিপার্সে অনেক সময় দোষ দেখা যায়। ক্রটিযুক্ত ভার্নিয়ার ক্যালিপার্স দ্বারা মাপ গ্রহণ করলে ঐ মাপ অবশ্যই ভুল হবে। সে জন্য ব্যবহারের পূর্বে পরীক্ষা করা প্রয়োজন যে ‘জ্য’ দুটি পরস্পর মিলিত অবস্থায় প্রধান ও ভার্নিয়ার স্কেলের শূন্য দাগ দুটি পরস্পর মিলিত অবস্থঅয় প্রধান ও ভার্নিয়ার স্কেলের শূন্য দাগ দুটি পরস্পর বা শূন্য ক্রটি (zero error) আছে। এরূপ দোষযুক্ত ভার্নিয়ার দিয়ে মাপ নেয়ার পর প্রকৃত মাপ পাওয়ার জন্য সংশোধন আবশ্যক।

ভার্নিয়ার ক্যালিপার্স ব্যবহারে প্রয়োজনীয় সাবধানতা

১। ভার্নিয়ার ক্যালিপার্সের স্লাইডিং ‘জ্য’ যেন স্কেলের উপর দিয়ে অযাচিতভাবে চলাচল না করে। এতে ক্যালিপার্সের সূ²তা বিনষ্ট হবে। যদি অযাচিতভাবে চলে তবে ‘জ্য’ কে সমন্বয় রাখার জন্য ব্যবহৃত জিব বাঁকা হবে। এতে স্লাইডিং ‘জ্য’ সহ জিব ফ্রেমের মধ্যে চলতে বাধাপ্রাপ্ত হবে।

২। ‘জ্য’ এর মাপন অংশ দ্রুত ক্ষয় না হয় সেদিকে লক্ষ্যে রেখে মাপ গ্রহণ করতে হবে। কার্যবস্তুতে মাপ প্রহণকালে ভার্নিয়ার ক্যালিপার্সকে নিপুণভাবে পরিচালনা বা ব্যবহার না করলে ক্যালিপার্স এবং ‘জ্য’ তে অধিকাংশ ক্রটি সৃষ্টি হয়।

৩। বাইরের মাপ গ্রহণ করতে ক্যালিপার্স বার এবং ক্যালিপার্স ‘জ্য’ এর তল যথার্থরূপে কার্যবস্তুর লম্বালম্বি সেন্টার লাইনের সাথে সমান্তরাল হতে হবে। মাপ গ্রহণকালে সর্তক থাকতে হবে যেন ক্যালিপার্স কাত হয়ে, উল্টায়ে বা মোচড়ায়ে না যায়।

৪। স্থির ‘জ্য’ কে কার্যবস্তুর এক ধারে স্থাপন করে স্লাইডিং জ্যকে ধীরে ধীরে অন্য পাশে স্থাপন করতে হয়।

৫। ভার্নিয়ার ক্যালিপার্সকে বারের নির্ধত অংশের ‘লেজে’ উল্টোভাবে ঝুলায়ে রাখা উচিত নয়।

৬। প্রাথমিকভাবে মাপের সূ²তা নির্ভর করে দেখা এবং স্পর্শ করার অনুভূতির উপর। অস্পষ্ট দেখা হেলে আই-গøাস বা ম্যাগনিফাইং গ্যাস ব্যবহার করতে হবে। স্পর্শ করার অনুভূতি মেজারমেন্টের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং এ অনুভূতি ব্যক্তি বিশেষ এর উপর নির্ভরশীল। যন্ত্রপাতি সঠিকভাবে দীর্ঘদিন ব্যবহারে অনুভূতির উন্নতি ঘটে এবং মাপ গ্রহণের ক্রটি কমে আসে। যেহেতু স্পর্শ এর অনুভূতি হাতের আঙ্গুলের অগ্রভাগের উপর বিশেষভাবে নির্ভরশীল সুতরাং মেজারিং ইনস্ট্রুমেন্ট সর্বদা হাতের ব্যালান্সে আবদ্ধ অবস্থায় শুধু আঙ্গুলের সাহায্যে ‘জ্য’ এডজাস্টিং স্ক্রু ইত্যাদি সমন্বয় করতে হয়। যন্ত্রপাতি বল প্রয়োগে ধরে রাখলে স্পর্শতার অনুভূতি কমে যায়।

৭। ভার্ণিয়ার ক্যালিপার্স দিয়ে মাপ গ্রহণের সময় অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগে ‘জ্য’ বেঁকে না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

৮। কোন চলন্ত বস্তু বা রাফসার্ফেসের মাপ গ্রহণ করা যাবে না।

৯। ব্যবহারের সময় হাত হতে পরে গিয়ে কোন অংশ আঘাতপ্রাপ্ত বা বিকৃত না হয় সে বিষয়ে সর্বদা বিশেষ সাবধান থাকতে হবে।

১০। ভার্নিয়ার ক্যালিপার্সকে কোন ম্যাগনেটের নিকট রাখা উচিত নয়। এতে ক্যালিপার্সের বিভিন্ন অংশ চুম্বকত্ব লাভ করে লৌহ কণাকে আকৃষ্টের মাধ্যমে  ক্রটিপূর্ণ পরিমাপের আশঙ্কা থাকে। শান দেয়া মেশিনের নিকটে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা উচিত নয়।

থিকনেস গেজ (Thickness Gauge)

শীট মেটালের পূরুত্ব (thickness)পরিমাপ করার জন্য প্রমাণ বা ষ্ট্যান্ডার্ড মাপের গেজ বা গজই থিকনেস গেজ নামে পরিচিত। শীটের বেধ বা স্থুলতা মাপার জন্য শীট মেটাল গেজ বা ডায়াল শীট গেজ নামক যন্ত্রও অনেক ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।

 

চিত্রঃ ডায়াল শীট গেজ।

তারের ব্যাসপরিমাপ করার জন্য ইস্পাতের তৈরী প্রমাণ বা ষ্ট্যান্ডার্ড মাপের খাঁজ বিশিষ্ট যে ধাতুখন্ড ব্যবহার করা হয় তাহা ওয়্যার গেজ নামে পরিচিত। এক মিলিমিটারের একশত ভাগের এক ভাগ অথবা এক ইঞ্চির এক হাজার ভাগের এক ভাগ মাপ ইহার সাহায্যে লওয়া যায়। ইহার মাপ সর্বদা প্রমাণ (standard) রকমের হয়।ওয়্যার গেজের প্রত্যেকটি খাঁজের পার্শ্বে গেজ সংখ্যা এবং দশমিক ইঞ্চিতে বা মি. মি.-এ ঐ খাঁজেরপরিমাপ উল্লেখ থাকে। কোন কোনগেজে শুধু মাত্র গেজ সংখ্যা উল্লেখ থাকিলেও পরিমাপউল্লেখথাকে না। তখন গেজ তালিকা হইতে পরিমাপ জানিয়া লইতে হয়। গেজে উল্লেখিত সংখ্যা যত বড় হইবে তারের ব্যাস বা শীটের স্থুলতা তত কম হইবে। 

 

চিত্রঃ ওয়্যার গেজ।

মাইক্রোমিটার

কারখানায় প্রচলিত ভাবে ‘মাইক’ বলা হয়। বৈজ্ঞানিক পরিক্ষাগারে ইহা ‘স্ক্রু গেজ’ নামে পরিচিত। যথার্থ সূক্ষ্ণতা মাপ পাওয়ার জন্য মাইক্রোমিটার ব্যবহার করা হয়।  মাইক্রোমিটারের সাহায্যে এক ইঞ্চির এক হাজার ভাগের এক ভাগ (০.০০১ ইঞ্চি) মাপ, এমন কি ভার্নিয়ার মাইক্রোমিটার (Verniermicrometer) দ্বারা এক ইঞ্চির দশ হাজার ভাগের এক ভাগ (০.০০০১ ইঞ্চি) মাপ লওয়া যায়। সুপার মাইক্রোমিটার (Supermicrometer) দ্বারাও এক ইঞ্চির দশ হাজার ভাগের এক ভাগ (০.০০০১ ইঞ্চি) মাপ লওয়া যায়।

 

চিত্রঃ মাইক্রোমিটার।

মাইক্রোমিটার ক্যালিপার্স দ্বারা সাধারণ ক্যালিপার্সের ন্যায় বাহিরের মাপ, ভিতরের সমান্তরাল দুইটি পৃষ্ঠতল বা উপরিভাগের ব্যবধান পরিমাপ করা যায়। কিন্তু সাধারণক্যালিপার্স দ্বারামাপলওয়ার পর উহাকে একটি ষ্টীল রুলের উপর ধরিতে হয়। মাইক্রোমিটার ক্যালিপার্সের ক্ষেত্রে আর তাহার প্রয়োজন পড়ে না। যন্ত্রটি হইতে প্রত্যক্ষ ভাবে এ মাপ পাওয়া যায়।  সাধারণ ক্যালিপার্সের মাপ অপেক্ষা মাইক্রোমিটারের মাপ অধিক সুক্ষ্ণ এবং নির্ভুল, ইহার যান্ত্রিক ত্র“টি নিরুপন ও দুরীভুত করণ অতি সহজ। ফলে দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যায়।

মাইক্রোমিটারের প্রকারভেদ 

১। আউট সাইড মাইক্রোমিটার (Outside micrometer) 

২। ইনসাইড মাইক্রোমিটার (Insidemicrometer)

৩। ডেপথ মাইক্রোমিটার (Depthmicrometer)

৪। স্ক্রুর থ্রেড মাইক্রোমিটার (Screw threadmicrometer)

৫। টিউব মাইক্রোমিটার (Tubemicrometer)

৬। ব্লেড টাউপ মাইক্রোমিটার (Blademicrometer)

৭। ডিস্ক টাইপ মাইক্রোমিটার (Disk typemicrometer)

৮। বেঞ্চ মাইক্রোমিটার (Benchmicrometer)

৯। ইন্ডিকেটর মাইক্রোমিটার (Indicatormicrometer)

১০। ডিজিটাল মাইক্রোমিটার (Digitalmicrometer)

১১। ভার্নিয়ার মাইক্রোমিটার (Verniermicrometer)

১২। ডায়রেক্ট রিডিং মাইক্রোমিটার (Direct Readingmicrometer)

মাইক্রোমিটারের বিভিন্ন অংশর

ফ্রেম (Frame)

মাইক্রোমিটারের বাইরের অংশের সাথে এটা সংযুক্ত। দেখতে ইউ অক্ষরের মত এবং কাস্ট স্টিলের তৈরি।

এনভিল (Anvil)

এটা ফ্রেমের সাথে এক প্রান্তে স্থায়ীভাবে আবদ্ধ। এটার মুখ সমতল এবং টাংস্টেন কারবাইড স্টিল দ্বারা তৈরি। 

স্পিন্ডল (Spindle)

এটা এনভিলের বিপরীত পাশ ফ্রেমের সাথে সমন্বয়কৃত একটি চলমান অংশ। এটা ব্যারেলের ভেতর দিয়ে চলাচল করে। এর শেষ প্রান্তের কিছু অংশে প্যাঁচ কাটা থাকে। এই প্যাঁচ ইঞ্চি মাপের মাইক্রোমিটারে প্রতি ইঞ্চিতে ৪০টি এবং মেট্রিক মাইক্রোমিটারে প্রতি সেন্টিমিটারে ২০টি। স্পিন্ডলটি থিম্বল ও র‌্যাচেট স্পটের সাথে সংযুক্ত থাকায় র‌্যাচেট স্টপ এবং থিম্বল ঘুরালে স্পিন্ডলটিও ঘুরতে থাকে। স্পিন্ডলের মুখ বা প্রান্ত টাংস্টেন কারবাইডের তৈরি।

ব্যারেল বা স্লিভ (Barrle or Sleeve)

ব্যারেল একটি টিউব যা ফ্রেমের সাথে স্থায়ীভাবে যুক্ত। ব্যারেলের ভেতরে স্পিন্ডল নাট থাকে। এর বাইরের সারফেসে দৈর্ঘ্য বরাবর রেখা ইঞ্চি বা মিলিমিটার সংক্রান্ত দাগ কাটা থাকে। এই দাগের স্কেলকে রৈখিক স্কেল বলে।

থিম্বল (Thimble)

এটি ফাঁপা সিলিন্ডার আকৃতির এর সাথে র‌্যাচেট স্টপ ও স্পিন্ডল সংযুক্ত থাকে। থিম্বলের ফ্রেমের পার্শ্বের কিছু অংশ বিভেল আকৃতির। মিলিমিটার মাইক্রোমিটারে সমান ব্যবধান ৫০ টি দাগ কাটা থাকে। একে সার্কুলার বা বৃত্তাকার স্কেল বলে। 

র‌্যাচেট স্টপ (Ratchet Stop)

এটা সিলিন্ডার আকৃতির এবং পৃষ্ঠে দেশের প্রান্তে নালিং করা থাকে। ¯িপন্ডল ও ব্যাচেট স্টপের মাঝে একটি স্প্রিং বসানো থাকে যা র‌্যাচেটের মাধ্যমে স্পিন্ডলে অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ বাধা দেয়। র‌্যাচট স্টপ সংযুক্ত থাকার সমচাপে (০.৫ - ১শম) সকল পরিমাপ গ্রহণ করা সম্ভব হয়। ফলে চাপের তারতম্য না হওয়ায় মাপের কোন পরিবর্তন হয় না।

লকিং (Looking Nut) 

কোন পাঠ বা মাপ নেয়ার পর গৃহীত মাপ যাতে পরিবর্তন না হয় সেজন্য লকিং নাট বা পিনকে ঘুরায়ে স্পিন্ডলকে ফ্রেমের সাথে সংযুক্ত করা হয়। 

মাইক্রোমিটারের সাইজ

ইঞ্চি মাপের মাইক্রোমিটার বিন্যাস ১ ইঞ্চি অর্থাৎ ০ইঞ্চি - ১ ইঞ্চি, ১ ইঞ্চি – ২ ইঞ্চি, ২ ইঞ্চি – ৩ ইঞ্চি অর্থাৎ প্রত্যেক ইঞ্চি মাপের মাইক্রোমিটার দিয়ে ১ ইঞ্চি পরিমাণ মাপ নেওয়া যাবে। যেমন-২.৫ ইঞ্চি পরিমাণ মাপ গ্রহণ করতে ৩ ইঞ্চি মাইক্রোমিটার দিয়ে।০ইঞ্চি হতে ১ ইঞ্চি মাপ গ্রহণ করা যাবে তাকে  ১ ইঞ্চি মাইক্রোমিটার বলে। ৫ ইঞ্চি  হতে ৬ ইঞ্চি মাপা যাবে তাকে ৬ ইঞ্চি মাইক্রোমিটার বলে। কাজেই যে বস্তুর মাপগ্রহণ করতে হবে তার পরিমাণ অনুযায়ী মাইক্রোমিটার ব্যবহার করতে বা নিতে হবে।  

মিলিমিটার মাপের মাইক্রোমিটার রেঞ্জ ২৫ মি. মি. অর্থাৎ প্রত্যেক মাইক্রোমিটার দিয়ে ২৫ মি. মি. সীমার মধ্যে মাপ গ্রহণ করতে হবে। মেট্রিক মাইক্রোমিটার (০) হতে ২৫ মি. মি., ২৫ মি. মি. হতে ৫০ মি. মি., ৫০ মি. মি. হতে ৭৫ মি. মি. ইত্যাদি তৈরি হয়ে থাকে। যে মাইক্রোমিটার দিয়ে ৭৫ মি. মি. হতে ১০০ মি. মি. মাপ গ্রহণ করা যাবে তাকে  ১০০ মি. মি. মাইক্রোমিটার এবং ১২৫ মি. মি.  হতে ১৫০ মি. মি. মাপ গঠন করা যাবে তাকে ১৫০ মি. মি. মাইক্রোমিটার বলে। অর্থাৎ মাইক্রোমিটার সাইজ বলতে ঐ মাইক্রোমটিারের মাপ গ্রহণের শেষ সীমাকে বুঝায়।

মাইক্রোমিটারের এরর যোগ এবং বিয়োগ নির্ণয়

যদি থিম্বলের ‘০’ রেখা ব্যারেলের নির্দেশক রেখাকে অতিক্রম করে, তবে নির্ভুল মাপ পাওয়ার জন্য মাইক্রোমটিারের পাঠের সাথে ঐ ভুল মাপ যোগ করতে হবে। আবার যদি নির্দেশক রেখা পর্যন্ত না পৌঁছায় তবে মাইক্রোমিটারের পাঠ হতে ঐ ভুল মাপ বিয়োগ করলে প্রকৃত মাপ পাওয়া যাবে। থিম্বলের ‘০’ চিহ্নিত দাগ ব্যারেল বা রৈখিক স্কেলের দাগ অদিক্রম করলে এই কুটিকে নিগেটিভ কুটি বলে। থিম্বল বা সার্কুলার স্কেলের  ‘০’ রেখাটি ব্যারেলের ‘০’ রেখার পর্যন্ত না পৌঁছালে ঐ কুটিকে পজেটিভ কুটি বলে। 

মাইক্রোমিটারের ভুল পাঠের কারণ

১। মাইক্রোমিটারের অ্যানভিল ও স্পিন্ডেলের ফেস এবং কার্যবস্তুর মেজারিং তল পরিষ্কার না থাকা।

২। অ্যানভিল ও স্পিন্ডলের প্রান্তের ক্ষয়জনিত সমন্বয় না করা এবং বিধি বহির্ভূতভাবে ব্যবহার করা। 

৩। মাপ পাঠের সময় সর্তকতা অবলম্বন না করা অথবা অবহেলা করে মাপ পাঠ করা। 

মাইক্রোমিটার ক্যালিব্রেশন পদ্ধতি

মাইক্রোমিটারের অ্যানভিল এবং স্পিন্ডলের প্রান্ত ক্ষয়জনিত কারণে মাইক্রোমিটার নিয়মিত ক্যালিব্রেশন করে সঠিক মাপের নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে। ‘০’ হতে ১ ইঞ্চি বা ‘০’ হতে  ২৫ মি. মি. সীমার মাইক্রোমিটারকে অতি সহজে দ্রুত অ্যানভিল এবং স্পিন্ডলকে অ্যাডজাস্টমেন্টের মাধ্যমে ত্রুটি নিরুপণ এবং সংশোধন করা যায়। কিন্তু বেশি সীমার মাইক্রোমিটারকে মাস্টার চেকিং গেজ, ডিক্স, প্লাগ গেজ, রড বা গেজ  ব্লকের মাধ্যমে ক্যালিব্রেশন করতে হবে। 

মাইক্রোমিটার ব্যবহারের সুবিধা

১। মাইক্রোমিটার দিয়ে অতি সহজে ও নির্ভুলভাবে মাপ পাঠ করা যায়।

২। স্পিডল ও অ্যানভিলের প্রান্ত টাংস্টেন কারবাইড টিপ যুক্ত থাকায় ব্যবহার প্রান্ত দুটি খুব ক্ষয় হয়।

৩। মাইক্রোমিটারের যান্ত্রিক ত্রুটি দূর করা খবই সহজ।

৪। র‌্যাচেট স্টপ ব্যবস্থার মাধ্যমে মাপ গ্রহণের সময় সুনির্দিষ্ট ও সমচাপের (০.৫ শম হতে ১ শম) ব্যবস্থা থাকায় চাপের তারতম্যের পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা কমথাকায় সকল অবস্থায় নির্ভুল মাপ পাঠ করা যায়। 

৫। ভিন্ন ভিন্ন আকৃতির যন্ত্রাংশ বা দ্রব্য পরিমাপে বিভিন্ন ধরনের মাইক্রোমিটার পাওয়া যায়।

মাইক্রোমিটার ব্যবহারের সাবধানতা

১। যে মাইক্রোমিটারে ‘র‌্যাচেট’ স্টপ ব্যবস্থা নেই তা ব্যবহারকালে অ্যানভিল ও স্পিন্ডলকে কার্যবস্তুর সাথে কেবল মাত্র স্পর্শ করতে হবে যেন বেশি চাপ না হয়।

২। মাইক্রোমিটার যাতে টেবিল হতে বা ব্যবহারকালে মেঝেতে পরে না যায় সেদিকেবিশেষ সর্তক থাকা প্রয়োজন।

৩। সর্বদা পরিষ্কার স্থানে যতœসহকারেকরতে হবে ।

৪। তৈলাক্ত অবস্থায় মাইক্রোমিটার ব্যবহার করা উচিত নয়।

৫। মাইক্রোমিটার দিয়ে কখনও রাফ সারফেস বা তলে মাপ গ্রহণ করা উচিত নয়।

৬। মাইক্রোমিটার দিয়ে চলন্ত বস্তুর মাপ গ্রহণ করা উচিত নয়।

৭। মাইক্রোমিটারকে চুম্বকের নিকট রাখা উচিত নয়।

৮। গ্রাইন্ডিংরত অবস্থায় মাইক্রোমিটার দিয়ে গ্রাইন্ডিং মেশিনের বা তলে মাপ গ্রহণ করা উচিত নয়।

৯। মাইক্রোমিটারের উপর অন্য টুলস রাখা উচিত নয়।

১০। ব্যবহারের পর পরিষ্কার এবং যান্ত্রিক ত্রুটি মুক্ত অবস্থায় সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।

ডিজিটাল মাইক্রোমিটার

বর্তমানেসরাসরি ডিজিটাল ডায়ালে পাঠযুক্ত ডিজিটাল মাইক্রোমিটার পাওয়া যায়। এই মাইক্রোমিটার সাহায্যে ০.০০১ মি. মি. সূক্ষ্ণ তায় মাপ লওয়া যায়। যা অ্যালকালিন ম্যাঙ্গনিজ ব্যাটারির মাধ্যমে লিকুইড ডিসপ্লে নাম্বার দেখা যায়। 

 

চিত্রঃ ডিজিটাল মাইক্রোমিটার।

ডিজিটাল মাইক্রোমিটারে গঠন প্রণালী 

১। স্পিন্ডল স্টেইনলেস স্টিলের তৈরি।

২। মেট্রিক পদ্ধতিতে ০.০১ মি. মি. এবং ইঞ্চিতে ০.০০১ ইঞ্চিসহজেই পাঠ করা যায়। 

৩। দীর্ঘ স্থায়ীর জন্য মেজারিং ফেসকে কারবাইড টিপে তৈরি করা হয়।

৪। ফ্রিকশন থিম্বল এবং র‌্যাচেট স্টপ সঠিক এবং পুনঃ মাপের জন্য ব্যবহার হয়।

৫। স্পিন্ডলের প্যাঁচ মসৃণভাবে জড়ানো এবং শক্তায়িত করা।

৬। লকিং ক্লাম্পের সাহায্যে পিন্ডরকে যে কোন অবস্থায় সংরক্ষিত করা যাবে।

৭। ক্রোমিরায়ম-মুক্তায় নির্মিত বৃহৎ ব্যাসের থিম্বলের সাহায্যে সহজে মাপ পাঠ করা যায়।

৮। শক্তায়িত অ্যানভিল এবং স্পিন্ডল মাইক্রো-ল্যাপ পদ্ধতিতে ফিনিস এবং প্রিসিশন গ্রাউন্ড করা।

৯। ক্ষয়জনিত ত্রুটি  অতি দ্রুত এবং সহজে সমন্বয় করা যায়।

১০। ব্যবহার পদ্ধতি খুবই সহজ। পুশ বোতামের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করে জিরো সেট, মাপ গ্রহণ এবং তা স্থির করা যায়।

১১। একই সহগ মিটারের সাহায্যে ইঞ্চি এবং মিলিমিটার মাপ পাঠ করা যায়।

মাইক্রোমিটারের যত্ন

মাইক্রোমিটারের অ্যানভিল এবং স্পিন্ডলের মুখে ধূলিকণা বা ময়লা না জমে সে দিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন। ধুলিবালি বা ময়লা জমলে ভুল মাপ দেখাবে। এটা সর্বদা পরিষ্কার রাখা প্রয়োজন। মাইক্রোমটিার ব্যবহারের পর নির্ধারিত আধারে (case) রাখা উচিত। মাইক্রোমিটারের কোন অংশে যাতে মরিচা না পরে সেজন্য মাঝে মাঝে ভেতরে এবং বাহিরে মসৃণকারক তেল দেয়া প্রয়োজন। মাইক্রোমিটারে জিরো এরর হলে সুদক্ষ কারিগর দ্বারা সংশোধন করে নিতে হবে। 

ভার্নিয়ার মাইক্রোমিটারের পাঠ গ্রহণের কৌশল

ভার্নিয়ার মাইক্রোমিটারে মাপ পাঠ পদ্ধতি ভার্নিয়ার ক্যালিপার্সের প্রায় অনুরুপ। ভার্নিয়ার ক্যালিপার্সে প্রধান এবং ভার্নিয়ার এই দুটি স্কেল থাকে। কিন্তু ভার্নিয়ার মাইক্রোমিটারে রৈখিক, সার্কুলার এবং ভার্নিয়ার এই তিনটি স্কেল থাকে। রৈখিক এবং সার্কুলার মাপ পাঠ সাধারণ মাইক্রোমিটারের মতই গ্রহণের পর সার্কুলার স্কেলের কোন রেখা যদি রৈখিক স্কেলের সাধারণ নির্দেশক রেখার সাথে মিলিত না হয়, তবে রৈখিক এবং সার্কুলার স্কেলের রেখার সাথে মিলিত হয়েছে তখন এই রেখার মানই হবে ভার্নিয়ার স্কেলের পাঠ। রৈখিক এবং সার্কুলার স্কেল সাধারণ রেখার সাথে মিলিত হলে তখন ভার্নিয়ার স্কেলের পাঠ গ্রহণ করতে হবে না। অর্থাৎ রৈখিক স্কেল এবং সার্কুলার স্কেলের সাথে মিলিত হবে। তখন ভার্নিয়ার স্কেলের পাঠ রৈখিক ও সার্কুলার স্কেলের সাথে যোগ হবে না। 

 

চিত্রঃ ভার্নিয়ারমাইক্রোমিটার।

ভার্নিয়ার মাইক্রোমিটারের সূক্ষ্ণতা

ভার্নিয়ার মাইক্রোমিটার দেখতে সাধারণ আউট সাইড মাইক্রোমিটারের একই রুপ আকৃতি বিশিষ্ট। এই মাইক্রোমিটারের ব্যারেলের দৈর্ঘ্যরে লম্বালম্বি ভাগে ১০ ভাগ থিম্বল বা সার্কুলার বা বৃত্তাকার স্কেলে ৯ ভাগের সমান ভাগ করা থাকে। ফলে সাধারণ মাইক্রোমটিার হতে ১০ গুণ সূক্ষ্ণতায় মাপ পাঠ নেয়া যায়। অর্থাৎ সাধারণ মাইক্রোমটিারে ০.০০১ ইঞ্চি সূ²তা হলে, ভার্নিয়ার মাইক্রোমিটার হবে ০.০০০১ ইঞ্চি। আারার যদি মেট্রিক মাইক্রোমিটার সূক্ষ্ণতা ০.০০১ মি. মি. হয় তবে ভার্নিয়ার মাইক্রোমিটার সূ²তা হবেন ০.০০০১ মি. মি.। ভার্নিয়ার স্কেল যুক্ত মাইক্রোমিটারের সাহায্যে এক ইঞ্চির দশ হাজার ভাগের এক ভাগ এবং মেট্রিক পদ্ধতিতে এক মিলিমিটারের এক হাজার ভাগের এক ভাগ সূক্ষ্ণতায় মাপ গ্রহণ করা যাবে। 

সাধারণ মাইক্রোমিটার এবং ভার্নিয়ার মাইক্রোমিটারের পার্থক্য

সাধারণ মাইক্রোমিটার ঃ

১। এর সাহায্যে ইঞ্চি মাপের ০.০০১ ইঞ্চি এবং মেট্রিবক মাপে ০.০১ মি. মি. সূক্ষ্ণতা মাপ পাঠ করা যায়।

২। এতে রৈখিক এবং সার্কুলার দুটি স্কেল থাকে।

ভার্নিয়ার মাইক্রোমিটার ঃ

১। এর সাহায্যে ইঞ্চি মাপের ০.০০০১ ইঞ্চি এবং মেট্রিবক মাপে ০.০০১ মি. মি. সূক্ষ্ণতা মাপ পাঠ করা যায়।

২। এতে রৈখিক এবং সার্কুলার এবং ভার্নিয়ার এই তিনটি স্কেল থাকে।

ভার্নিয়ার মাইক্রোমিটার এবং ভার্নিয়ার ক্যালিপার্সের পার্থক্য

ভার্নিয়ার মাইক্রোমিটার

ভার্নিয়ার ক্যালিপার্সের

১। এর সূক্ষ্ণতা ইঞ্চিতে ০.০০১ ইঞ্চি এবং মেট্রিক পদ্ধতিতে ০.০০১ মি. মি. পর্যন্ত সূক্ষ্ণতার মাপ পাঠ করা যায়।

১। এর সূ²তা ইঞ্চিতে ০.০০১ ইঞ্চি এবং মেট্রিক পদ্ধতিতে ০.০১ মি. মি. পর্যন্ত সূ²তার মাপ পাঠ করা যায়। 

২। এতে ভার্নিয়ার স্কেলের জন্য পৃথক অংশ এর প্রয়োজন হয় না।

২। এতে ভার্নিয়ার স্কেলের জন্য পৃথক অংশ ব্যবহার করতে হয়।

৩। এতে তিনটি স্কেল পাঠ গ্রহণ করতে হয়।

৩। এতে দুইটি স্কেল পাঠ গ্রহণ করতে হয়।

৪। এর ভার্নিয়ার স্কেলে ১০টি ভাগ থাকে।

৪। এর ভার্নিয়ার স্কেলে ১০, ২০, ২৫, ৩০, ৫০, ১০০ ভাগে ভাগ করা থাকে।

৫। ভার্নিয়ার স্কেল কেবল আউট সাইড মাইক্রোমিটারে থাকে।

৫। এটা আউট সাইড, ইনসাইড গভীরতা সকল মাপের জন্য প্রযোজ্য।


মাইক্রোমিটার অপেক্ষা ভার্নিয়ার ক্যালিপার্সে ব্যবহারের সুবিধাসমূহ

রৈখিক বা দৈর্ঘ্য পরিমাপে মাইক্রোমিটার এবং ভার্নিয়ার ক্যালিপার্স ব্যবহার হলেও ব্যবহারিক ক্ষেত্রে ভার্নিয়ার ক্যালিপার্সের ব্যবহার অধিকতর সুবিধাজনক।

১। ভার্নিয়ার ক্যালিপার্স দিয়ে মাইক্রোমিটার অপেক্ষা অধিক পরিসরে বিভিন্ন প্রকৃতির মাপ গ্রহণ করা যায়। 

২। ভার্নিয়ার ক্যালিপার্স মাইক্রোমিটার অপেক্ষা অধিক দ্রুত গতি সম্পন্ন।

৩। একই ভার্নিয়ার ক্যালিপার্স দিয়ে দৈর্ঘ্য, ভেতর, বাহির এবং গভীরতার মাপ গ্রহণ করা যায়। কিন্তু মাইক্রোমিটারের প্রত্যেক ক্ষেত্রে পৃথক আকৃতি মাইক্রোমিটারের প্রয়োজন।

৪। ভার্নিয়ার ক্যালিপার্সের প্রায় সকল অংশই অবলোকন করা যায় বা দৃশ্যমান হওয়ায় ত্রুটি নিরূপণ অপেক্ষাকৃত সহজ।



নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লিখুন -

প্রশ্ন-১: মেজারিং টুলস বলতে কি বুঝায় লিখুন?

প্রশ্ন-২: মেজারিং টুলস এবং ইকুইনম্যান্ট মধ্যে পার্থক্য লিখুন?

প্রশ্ন-৩: লে-আউটবলতে কি বুঝায় লিখুন?

প্রশ্ন-৪: মেজারিং ইকুইপম্যান্ট প্রকারভেদলিখুন?

প্রশ্ন-৫: ক্যালিপারের ব্যবহার লিখুন? 

প্রশ্ন-৬: মাইক্রোমিটার ব্যবহারের সুবিধা লিখুন?


উত্তর-১

মেজারিং টুলস 

যে সকল ডিভাইস কোন বস্তু বা যন্ত্রাংশের মাপ গ্রহণে ব্যবহার হয় তাদেরকে মাপন যন্ত্র বা মেজারিং টুলস বা ইকুইপম্যান্ট বলে। যেমন- স্টিল রুল, কম্বিনেশন স্টে, মাইক্রোমিটার, ভার্নিয়ার ক্যালিপার্স ইত্যাদি।

উত্তর-২

মেজারিং টুলস এবং ইকুইনম্যান্ট মধ্যে পার্থক্য 

মেজারিং টুলস

মেজারিং ইকুইপম্যান্ট

১। নন প্রিসিশন মেজারিং জিভাইসগুলোকে সাধারণত মেজারিং টুলস বলে।যেমন-স্টিল রুল, ট্রামেল,কম্বিনেশন সেট,সারফেস গেজ ইত্যাদি।

১। প্রিসিশন মেজারিং ডিভাইসগুলোকে প্রধানত মোজারিং ইকুইপম্যান্ট বলে। যেমন- মাইক্রোমিটার, ভার্নিয়ার ক্যালিপার্স, হাইট গেজ, ভার্নিয়ার বিভেল প্রোট্রাক্টর ইত্যাদি।

২। বহুল উৎপাদনে পরিদর্শন কাজে ব্যবহার হয় না।

২। বহুল উৎপাদনে পরিদর্শন কাজে ব্যবহার হয়।

৩। অধিকাংশগুলোর উৎপাদন খুবই সহজ।

৩। অধিকাংশগুলোর উৎপাদন খুবই জটিল।


উত্তর-৩

লে-আউট 

কোন ওয়ার্কপিচ, কার্যবস্তু বা সরবরাহকৃত কাঁচামালের সাহায্যে যে দ্রব্য, জব বা বস্তু উৎপাদন হবে, কাজ আরম্ভ করার পূর্বে সরবরাহকৃত কাঁচামালের উপর উৎপন্ন দ্রব্যের অবিকল প্রতিচ্ছবি অঙ্কন বা চিহ্নিত করাকে লে-আউট বলে।লে-আউট যন্ত্র, যেমন- স্ক্রাইবার স্টিল রুল, টাইস্কোয়ার, পাঞ্চ, হ্যামার ইত্যাদি।

উত্তর-৪

মেজারিং ইকুইপম্যান্ট প্রকারভেদ 

মেজারিং টুলস বা ইকুইপম্যান্ট প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যথা-

(ক) নন প্রিসিশিন ইকুইপম্যান্ট (ঘড়হচৎরপরংরড়হ বয়ঁরঢ়সবহঃ)

(খ) প্রিসিশন ইকুইপম্যান্ট (চৎরপরংরড়হ বয়ঁরঢ়সবহঃ)

মেজারিং ইকুইপম্যান্ট মাপ গ্রহণের সূ²তার উপর বিবেচনা করে চার ভাগে ভাগ করা হয়। যথা-

(ক) নন প্রিসিশন ইকুইপম্যান্ট; যেমন-ট্রাইস্কোয়ার

(খ) সেমিপ্রিসিশন ইকুইপম্যান্ট; যেমন-স্টিল রুল, কম্বিনেশন সেট, পয়েন্ট ক্যালিপার্স

(গ) প্রিসিশন ইকুইপম্যান্ট; যেমন-মাইক্রোমিটার, ভার্নিয়ার ক্যালিপার্স, ভার্নিয়ার হাইট গেজ

(ঘ) হাই প্রিসিশন ইকুইপম্যান্ট; যেমন-অপটিক্যাল ফ্ল্যাট, সাইন বার।

উত্তর-৫

ক্যালিপারের ব্যবহার  

ক্যালিপার অতি সাধারণ টুলস হলেও এটি ব্যবহারে কতগুলো সুনির্দিষ্ট বিধি মেনে চলতে হয়।

১। স্প্রিং ক্যালিপার স্কেলে সেট করার সময় শুধুমাত্র নাটের উপর ভিত্তি করাই ঠিক নয়। এতে স্ক্রু প্যাঁচের ক্ষতি হতে পারে। সঠিক পদ্ধতি হলো লেগটি বাম হাতের উপর রেখে ডান হাত দিয়ে আস্তে আস্তে নাট ছেড়ে দিয়ে পরিমাপ এডজাস্ট করা।

২। ক্যালিপার কখনই ঘূর্ণায়মান বস্তুর সংস্পর্শে ব্যবহার করা উচিৎ নয়।

৩। ক্যালিপার দ্বারা শক্ত সারফেসে দাগ টানা অনুচিৎ।

৪। এর প্রান্তগুলো সুতী² বিধায় এগুলোকে সাবধানে রাখা উচিৎ।

৫। ক্যালিপারকে সর্বদাই পরিষ্কার ও তৈরিকৃত (মৎবধংবফ) ভাবে রাখা উচিৎ।

ক্যালিপার যে কোন পরিমাপ সরাসরি প্রদান করে না। ভিতরের বাইরের পরিমাপ গ্রহণ করে এর লেগদ্বয় নির্ণেয় স্কেলে স্থানান্তরিত করে পরিমাপ পঠিত হয়।

উত্তর-৬

মাইক্রোমিটার ব্যবহারের সুবিধা 

১। মাইক্রোমিটার দিয়ে অতি সহজে ও নির্ভুলভাবে মাপ পাঠ করা যায়।

২। স্পিডল ও অ্যানভিলের প্রান্ত টাংস্টেন কারবাইড টিপ যুক্ত থাকায় ব্যবহার প্রান্ত দুটি খুব ক্ষয় হয়।

৩। মাইক্রোমিটারের যান্ত্রিক ত্র“টি দূর করা খবই সহজ।

৪। র‌্যাচেট স্টপ ব্যবস্থার মাধ্যমে মাপ গ্রহণের সময় সুনির্দিষ্ট ও সমচাপের (০.৫ শম হতে ১ শম) ব্যবস্থা থাকায় চাপের তারতম্যের পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা কমথাকায় সকল অবস্থায় নির্ভুল মাপ পাঠ করা যায়। 

৫। ভিন্ন ভিন্ন আকৃতির যন্ত্রাংশ বা দ্রব্য পরিমাপে বিভিন্ন ধরনের মাইক্রোমিটার পাওয়া যায়।


শিরোনাম-মেজারিং টুলস এবং ইকুইপম্যান্ট সনাক্তকরণ ।

উদ্দেশ্য-মেজারিং টুলস এবং ইকুইপম্যান্ট সনাক্ত করতে সমর্থ হবেন।

কাজের জন্য প্রয়োজনীয় টুলস ও যন্ত্রপাতি- স্পেসিফিকেশন শিটের তালিকা অনুযায়ী।

পদ্ধতি

  • প্রশিক্ষককে অবহিত করুন যে, আপনি কাজের জন্য প্রস্তুত।
  • প্রশিক্ষক এখন আপনাকে প্রয়োজনীয় সকল মেজারিং টুলস এবং ইকুইপম্যান্ট সববরাহ করবেন। 
  • ও এস এইচ অনুশীলন করতে হবে। 
  • মেজারিং টুলস এবং ইকুইপম্যান্ট সেটিং সঠিক আছে কিনা তা পরীক্ষা করতে হবে।
  • মেজারিং টুলস এবং ইকুইপম্যান্টে ক্রুটি থাকলে ক্রুটি সমূহ চিহ্নিত করে রির্পোট করতে হবে।
  • বাতিল মেজারিং টুলস এবং ইকুইপম্যান্টে গুলো চিহ্নিত ও আলাদা করতে হবে।
  • এরপর রির্পোট সংরক্ষণ করতে হবে।
  • টুলস, যন্ত্রপাতি এবং কার্যক্ষেত্রকে আদর্শমান অনুযায়ী পরিষ্কার রাখতে হবে।
  • সবশেষে অবর্জনা থাকলে সঠিকভাবে অপসারণ করতে হবে।

অ্যাসেসমেন্ট পদ্ধতি

কার্যসম্পাদন মানদন্ডের তালিকা প্রদর্শন।


উপরের কাজটি সম্পন্ন করতে নিম্ন লিখিত মেজারিং টুলস এবং ইকুইপম্যান্ট প্রয়োজন হবে-

পিপিই (ব্যক্তিগত নিরাপত্তা জনিত সরঞ্জাম) ঃ

  • গ্লাভস
  • নিরাপদ জুতা
  • এপ্রোন

টুলস এবং ইকুইপম্যান্টঃ 

(ক) নন প্রিসিশন ইকুইপম্যান্ট; যেমন-ট্রাইস্কোয়ার

(খ) সেমিপ্রিসিশন ইকুইপম্যান্ট; যেমন-স্টিল রুল, কম্বিনেশন সেট, পয়েন্ট ক্যালিপার্স

(গ) প্রিসিশন ইকুইপম্যান্ট; যেমন-মাইক্রোমিটার, ভার্নিয়ার ক্যালিপার্স, ভার্নিয়ার হাইট গেজ

(ঘ) হাই প্রিসিশন ইকুইপম্যান্ট; যেমন-অপটিক্যাল ফ্ল্যাট, সাইন বার।


ইউজ মেজারিং টুলস এন্ড ইকুইপমেন্ট

প্রশিক্ষণার্থীর নাম-------------------- তারিখঃ------------

কার্যসম্পাদন মানদন্ড

হ্যাঁ 

না

আমি কি-

 

 

১। টুলস এন্ড ইকুইপম্যান্ট ব্যবহারের জন্য চিনতে পেরেছি?

 

 

২। সাধারণ হিসাব গণনা করতে পেরেছি?

 

 

৩। টুলস এন্ড ইকুইপম্যান্ট প্রস্তুত আছে কিনা তা পরীক্ষাকরতে পেরেছি?

 

 

৪। সঠিকটুলস এন্ড ইকুইপম্যান্ট বাছাইকরতে পেরেছি?

 

 

৫। টুলস এন্ড ইকুইপম্যান্টের ক্রুটিসমূহ ভালোভাবে পরীক্ষা করে চিহ্নিত করতে পেরেছি?

 

 

৬। কারখানার প্রযোজন অনুসারে ড্রইংকরতে পেরেছি?

 

 

৭। টুলস এন্ড ইকুইপম্যান্ট ব্যবহার করে রেকর্ড সংরক্ষণ করেছি?

 

 

৮। কর্মক্ষেত্রের মান অনুসারে কর্মক্ষেত্র ও যন্ত্রপাতি পরিষ্কার করেছি?

 

 



‘ইউজিং মেজারিং টুলস এন্ড ইকুইপমেন্ট’’ মডিউলে যোগ্যতা মূল্যায়নের মানদন্ডের তালিকা নিন্মে দেয়া হলো-

কার্যসম্পাদন মানদন্ড

হ্যাঁ

না

১। প্রয়োজনীয় টুলস এন্ড ইকুইপম্যান্ট ব্যবহারের সময়, পূর্বে ও পরে প্রয়োজনীয় সকল নিরাপত্তা বিষয়াবলি বা নিয়ম নীতি মানা হয়েছে।

২। ব্যক্তিগত নিরাপত্তা পোশাক পরিধান করা হয়েছে।

৩। উৎপাদনকারীর নির্দেশনা এবং কার্যনির্দেশনা অনুসারে টুলস এন্ড ইকুইপম্যান্ট নির্বাচন ও প্রস্তুত করা হয়েছে।

৪। প্রয়োজনীয় টুলস এন্ড ইকুইপম্যান্ট ব্যবহারের সময়, পূর্বে ও পরে অনিরাপদ  যন্ত্রপাতিসমূহ চিহ্নিত করা  হয়েছে।

৫। নিয়ম অনুসারে টুলস এন্ড ইকুইপম্যান্ট ব্যবহার করা হয়েছে।

৬। টুলস এন্ড ইকুইপম্যান্টের বিভিন্ন সমস্যা এবং ক্রুটিসমূহ চিহ্নিত করে ক্রুটি দূর করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

৭। সঠিক নিয়মে হিসাব গণনাকরা হয়েছে।

৮। কারখানার নিয়ম নীতি অনুসারে রেকর্ড সংরক্ষণ করা হয়েছে।

৯। কর্মক্ষেত্রের ষ্ট্যান্ডার্ড অনুসারে টুলস এন্ড ইকুইপম্যান্ট পরিষ্কার করা হয়েছে।

১০। কারখানার নিয়ম নীতি অনুসারে টুলস এন্ড ইকুইপম্যান্ট সংরক্ষণ করা হয়েছে।

এখন আমি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে যোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য প্রন্তুত।


স্বাক্ষর ঃ -------------------------------    তারিখঃ------------------